Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকারের সব কর্মকাণ্ডই দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের সব কর্মকাণ্ডই দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে। আজ এক ব্যক্তির কারণে সংবিধান কাটাছেঁড়া করা হয়েছে। আজকে তারা সমাজকে নষ্ট করে ফেলেছে।

বুধবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত ‘নাগরিকদের সাংবিধানিক ও মানবাধিকার সুরক্ষা শীর্ষক’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, কোন সংবিধানের কথা বলে আওয়ামী লীগ, এটা তো আওয়ামী লীগের তৈরি করা সংবিধান, যে সংবিধানে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। আওয়ামী লীগের একটি সমস্যা, তারা মনে করে এ দেশের মালিক আওয়ামী লীগই। এর ভেতর থেকে বের হয়ে আসতে হলে বড় একটা ঝাঁকুনি দরকার, সংগ্রাম, যুদ্ধ দরকার। বড় সুনামি ছাড়া আমাদের ঘাড়ে যে পাথর চেপে বসে আছে তা সরানো যাবে না।

পরিবর্তন যদি আনতে হয় তরুণরা ছাড়া সম্ভব নয় এমন মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে লড়াই, সংগ্রাম , যুদ্ধ সবই করতে হবে তরুণদের। আমার কষ্ট হয়, যখন কোনো নারী শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয় তখন তার ক্যাম্পাস, সহকর্মী তরুণরা কোনো আন্দোলন করে না। আমরা কিন্তু পাকিস্তান আমলে আন্দোলন করেছিলাম। কিন্তু এখনকার তরুণদের মধ্যে তা দেখি না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, কয়েক দিন আগে এক স্কুলছাত্রের কাছে জানতে চাইলাম- তুমি বড় হয়ে কী হবে? সে বলল রাজনীতিবিদ হতে চাই। উত্তর শুনে অবাক হয়ে বললাম- কেন? বাচ্চাটি বলেল রাজনীতিবিদ হলে অনেক টাকার মালিক হওয়া যায়। আসলে সেই বাচ্চাটির কোনো দোষ নেই। সে দেখেছে ক্ষমতাসীনরা কীভাবে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছে। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। আর পরিবর্তন আসবে তরুণদের মাধ্যমে।

আওয়ামী লীগ নেতাদের স্মরণ করিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৭৩ দিন হরতাল করেছে আওয়ামী লীগ, এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে, ১১ জনকে গান পাউডার দিয়ে হত্যা করেছিল আওয়ামী লীগ। তাদের কি একবার মনে পড়ে না।

আওয়ামী লীগের বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাকে নিয়ে বলা হয়েছে, আমার মতো নাকি বড় মিথ্যাবাদী নেই! আমি নাম ধরে কিছু বলতে চাই না। এটি শিষ্টাচার নয়। অবশ্য আওয়ামী লীগ শিষ্টাচারের দল নয়। এরা সন্ত্রাসী দল। এদের সবাই উগ্র। আজকে আওয়ামী লীগ গালিতে পরিণত হয়েছে।’

ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের তো পুরোটাই মিথ্যার ওপর, সব কিছু আওয়ামী লীগের মিথ্যার ওপর তৈরি করা। তাদের মন্ত্রীরা যা নির্দেশ দেয় তাই প্রকাশ করা হয়, এখানে এত উৎপাদন হয়েছে, দেখি সেটাই দেখানো হয়।

কোনো কিছু অবশিষ্ট নেই তো, কোনটি বাবি আছে এমন প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, দেখা যায় একজন শিক্ষামন্ত্রীর নামে জমি অধিগ্রহণের অভিযোগ উঠে, ব্যাংক থেকে বিশেষ বিবেচনায় ২২ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। এটা কোন দেশ। এই দেশে যদি আমরা পরিবর্তন না আনতে পারি, তাহলে এদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে যাবে।

ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ এ দেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সব স্বপ্নকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এ থেকে মুক্তি পেতে গণতন্ত্রকামী সব দল এক হয়েছে। এখন সব মানুষকে এক করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আজকে এমন কিছু নেই যেখানে আওয়ামী লীগ হাত দেয়নি। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দখলের অভিযোগ, ব্যাংক খালি, লুটপাট করে জাতিকে পুরোপুরিভাবে দুর্নীতিপরায়ণ জাতি হিসেবে পরিণত করছে।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহীম, এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, সমমনা জোটের প্রধান সমন্নয়ক অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় পার্টির একাংশের মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনডিপি চেয়ারম্যান ক্বারী আবু তাহের, জাগপার সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ফাতিমা তাসনিম, আবু হানিফ, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল লতিফ মাসুম প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

সরকারের সব কর্মকাণ্ডই দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে : ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৩:৪৮:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের সব কর্মকাণ্ডই দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে। আজ এক ব্যক্তির কারণে সংবিধান কাটাছেঁড়া করা হয়েছে। আজকে তারা সমাজকে নষ্ট করে ফেলেছে।

বুধবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত ‘নাগরিকদের সাংবিধানিক ও মানবাধিকার সুরক্ষা শীর্ষক’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, কোন সংবিধানের কথা বলে আওয়ামী লীগ, এটা তো আওয়ামী লীগের তৈরি করা সংবিধান, যে সংবিধানে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। আওয়ামী লীগের একটি সমস্যা, তারা মনে করে এ দেশের মালিক আওয়ামী লীগই। এর ভেতর থেকে বের হয়ে আসতে হলে বড় একটা ঝাঁকুনি দরকার, সংগ্রাম, যুদ্ধ দরকার। বড় সুনামি ছাড়া আমাদের ঘাড়ে যে পাথর চেপে বসে আছে তা সরানো যাবে না।

পরিবর্তন যদি আনতে হয় তরুণরা ছাড়া সম্ভব নয় এমন মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে লড়াই, সংগ্রাম , যুদ্ধ সবই করতে হবে তরুণদের। আমার কষ্ট হয়, যখন কোনো নারী শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয় তখন তার ক্যাম্পাস, সহকর্মী তরুণরা কোনো আন্দোলন করে না। আমরা কিন্তু পাকিস্তান আমলে আন্দোলন করেছিলাম। কিন্তু এখনকার তরুণদের মধ্যে তা দেখি না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, কয়েক দিন আগে এক স্কুলছাত্রের কাছে জানতে চাইলাম- তুমি বড় হয়ে কী হবে? সে বলল রাজনীতিবিদ হতে চাই। উত্তর শুনে অবাক হয়ে বললাম- কেন? বাচ্চাটি বলেল রাজনীতিবিদ হলে অনেক টাকার মালিক হওয়া যায়। আসলে সেই বাচ্চাটির কোনো দোষ নেই। সে দেখেছে ক্ষমতাসীনরা কীভাবে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছে। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। আর পরিবর্তন আসবে তরুণদের মাধ্যমে।

আওয়ামী লীগ নেতাদের স্মরণ করিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৭৩ দিন হরতাল করেছে আওয়ামী লীগ, এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে, ১১ জনকে গান পাউডার দিয়ে হত্যা করেছিল আওয়ামী লীগ। তাদের কি একবার মনে পড়ে না।

আওয়ামী লীগের বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাকে নিয়ে বলা হয়েছে, আমার মতো নাকি বড় মিথ্যাবাদী নেই! আমি নাম ধরে কিছু বলতে চাই না। এটি শিষ্টাচার নয়। অবশ্য আওয়ামী লীগ শিষ্টাচারের দল নয়। এরা সন্ত্রাসী দল। এদের সবাই উগ্র। আজকে আওয়ামী লীগ গালিতে পরিণত হয়েছে।’

ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের তো পুরোটাই মিথ্যার ওপর, সব কিছু আওয়ামী লীগের মিথ্যার ওপর তৈরি করা। তাদের মন্ত্রীরা যা নির্দেশ দেয় তাই প্রকাশ করা হয়, এখানে এত উৎপাদন হয়েছে, দেখি সেটাই দেখানো হয়।

কোনো কিছু অবশিষ্ট নেই তো, কোনটি বাবি আছে এমন প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, দেখা যায় একজন শিক্ষামন্ত্রীর নামে জমি অধিগ্রহণের অভিযোগ উঠে, ব্যাংক থেকে বিশেষ বিবেচনায় ২২ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। এটা কোন দেশ। এই দেশে যদি আমরা পরিবর্তন না আনতে পারি, তাহলে এদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে যাবে।

ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ এ দেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সব স্বপ্নকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এ থেকে মুক্তি পেতে গণতন্ত্রকামী সব দল এক হয়েছে। এখন সব মানুষকে এক করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আজকে এমন কিছু নেই যেখানে আওয়ামী লীগ হাত দেয়নি। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দখলের অভিযোগ, ব্যাংক খালি, লুটপাট করে জাতিকে পুরোপুরিভাবে দুর্নীতিপরায়ণ জাতি হিসেবে পরিণত করছে।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহীম, এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, সমমনা জোটের প্রধান সমন্নয়ক অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় পার্টির একাংশের মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনডিপি চেয়ারম্যান ক্বারী আবু তাহের, জাগপার সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ফাতিমা তাসনিম, আবু হানিফ, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল লতিফ মাসুম প্রমুখ।