Dhaka শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকারের লোকজনই বঙ্গবাজারে আগুন দিয়েছে : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকারের লোকজনই বঙ্গবাজারে আগুন দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সারের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী কৃষকদল এ সমাবেশের আয়োজন করে।

আগুন লাগার ঘটনায় সরকারকে দোষারোপ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রতিদিন আগুন লাগছে। কিছু হলেই বলে দেন বিএনপি আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। অথচ সরকারের লোকজনই বঙ্গবাজারে আগুন লাগিয়েছে, ব্যবসায়ীরাও তাই বলেছেন। এ অগ্নিকাণ্ডের জন্য সম্পূর্ণ দায় সরকারের।

তিনি বলেন, মানুষের যে দাবি উঠেছে সারের দাম কমাও, চালের দাম কমাও, তেলের দাম কমাও, আমাদের বাঁচতে দিতে হবে, আমাদের একটি ভালো নির্বাচন দিতে হবে, ভোটের অধিকার দিতে হবে। এই দাবিগুলোকে পাশ কাটানোর জন্য মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নেওয়ার জন্য আপনারা এই আগুন লাগাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের চাঁদাবাজির কারণে মার্কেটগুলো অরক্ষিত অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, সারসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবি থেকে মানুষের দৃষ্টি সরাতেই সরকার নিজেই আগুন লাগাচ্ছে। অথচ বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, পরিষ্কার করে বলছি মূল যে জায়গাটা সেটা হচ্ছে এই সরকারকে সরাতে হবে। সরকার যতদিন থাকবে ততদিন মানুষের ওপর অত্যাচার বাড়বে, মানুষের ওপর নির্যাতন নিপীড়ন চলতেই থাকবে, মানুষকে বিনা দোষে গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট যোগ করেছে যাতে সাংবাদিক ভাইয়েরা লিখতে না পারেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সবাই দেশকে রক্ষা করার জন্য একজোট হয়েছি। আজকের এই আন্দোলন শুধু বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়, জোটকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়। এই আন্দোলন জনগণকে তার ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। এদেশের মালিক হচ্ছে জনগণ। সেই মালিকানা জনগণকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা আন্দোলন করছি। ইনশাআল্লাহ এই আন্দোলনে আমরা জিতবই।

মির্জা ফখরুল বলেন, আবার শুরু হয়েছে অত্যাচার নির্যাতন গ্রেফতার। কিন্তু কোন গ্রেফতার হত্যা নির্যাতন আমাদেরকে আটকে রাখতে পারবে? দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কৃষক ভাইদের একসঙ্গে করে শ্রমিক ভাইদের একসঙ্গে করে সেই বিজয় আমরা ছিনিয়ে আনব। আগামীতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলব। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি নির্বাচন যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারবে যে নির্বাচনে মানুষ তার প্রতিনিধিত্ব নির্বাচিত করতে পারবে, সে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।

সব জিনিসপত্রের দাম কয়েকগুন বেড়ে গেছে বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই দিকে সরকারের নজর নেই। তারা বলে সবকিছু সহনশীল আছে, জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, আয়ও বেড়েছে। কার আয় বেড়েছে? আওয়ামী লীগের আর সরকারি কর্মকর্তাদের আয় বেড়েছে। যারা চুরি করে, লুট করে মানুষেটা খায় তাদের বেড়েছে। সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার দেশের সমস্ত খাতগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। কৃষিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। শিল্প, অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে এই সরকার একটি গণবিরোধী সরকার, আজকে সরকার সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এ সরকার আজকে আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সাধারণ মানুষের যারা খেটে খায়, পরিশ্রম করে খায় তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। প্রতিবাদ করলেই গুলি, প্রতিবাদ করলেই মামলা, প্রতিবাদ করলেই গ্রেফতার। মানুষের প্রতি তাদের কোনো দয়ামায়া নেই কারণ তারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়নি।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, যখন বাংলাদেশ স্বাধীন হয় তখন দেশের জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি, আর এখন ১৬ কোটির বেশি। কিন্তু সাড়ে ৭ কোটির সময় দেশে খাদ্যের ঘাটতি ছিল। আর আজকে দেশে খাদ্য ঘাটতির পরিমাণ অনেক কমে গেছে। কাদের কারণে এটা হয়েছে? এই কৃষকদের কারণে এটা হয়েছে। কৃষকরা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, রক্ত পানি করে এই ফসল ফলায়।

তিনি  বলেন, আজকে সরকার যে এতো বড়াই করে, প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। কিন্তু এই কৃষকদের এখন শুধু সম্পূর্ণ অবেহলা করছে না, তাদের কষ্টের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তাদের মাথায় হাত, হঠাৎ করে প্রতি কেজি সারে ৫ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। কেন সারের দাম বাড়িয়েছে, কারণ আইএমএফ শর্ত দিয়েছে ভর্তুকি দেওয়া যাবে না। সারা পৃথিবীতে কৃষিতে ভুর্তকি দেওয়া হয়। তারা ফসল ফলিয়ে আমাদের ভাত জোগায়। সেই কৃষকদের যদি ভর্তুকি না দেওয়া হয় তাহলে তারা ফসল ফলাতে পারবে না।

নিজের সুইজারল্যান্ডের সফরের অভিজ্ঞতা তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, সেখানে দেখলাম পাহাড়ে-পাহাড়ে ১০০-১৫০ গরু একসঙ্গে চরে। গরুগুলো যে দুধ হয়, তার জন্য খামার আছে, সেখানে তারা দুধ দিয়ে মাখন, বিস্কুট, চকলেট তৈরি করে। যেটা সারা পৃথিবীতে যায়। আমি সেখানকার কৃষককে জিজ্ঞেস করলাম, তোমরা যে এগুলো তৈরি করে দাম ঠিক মতো পাও কি না? তারা বললো, দামের ওপর না, আমাদের সরকার টাকা দেয়। অর্থাৎ তাদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য সরকার টাকা দেয়। তাদের ছেলে-মেয়েরা বিনা খরচে স্কুলে লেখাপড়া করে। তাদের সেইভাবে ভুর্তকি দেওয়া হয়, আর আমাদের দেশে কৃষকদের গলা টিপে ধরার জন্য প্রতি কেজি সারে ৫ টাকা দাম বাড়িয়েছে।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পরে শুধু কৃষিখাতে নয়, পোল্ট্রি খাত, গরুর খামারের ব্যবসায়ীরাও পথে বসে গেছে। শুধু বড়রা বড় হচ্ছে, আর যারা মাঝারি এবং ছোট তারা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পত্র-পত্রিকায় দেখেছেন, কয়েক হাজার পোল্ট্রি খামারি টিকে থাকতে পারছে না, কেন বড়-বড় পোল্ট্রি শিল্পগুলো দাম ঠিক করে ছোটদের টিকে থাকা সম্ভব নয়। অথচ, মুরগির, ডিমের দাম সাধারণ মানুষের নাগালে আসছে না, বাড়ছেই। অর্থাৎ যে উৎপাদন করে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে তাকে বাদ দিয়ে শুধু বড়লোকদের জন্য, যাদের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক আছে তাদের টিকে রাখার জন্য এই সরকার কাজ করছে। এই সরকার সাধারণ মানুষের নয়।

কৃষকদলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তৃতা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিনু, কৃষকদল নেতা এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

সরকারের লোকজনই বঙ্গবাজারে আগুন দিয়েছে : ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০২:২২:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকারের লোকজনই বঙ্গবাজারে আগুন দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সারের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী কৃষকদল এ সমাবেশের আয়োজন করে।

আগুন লাগার ঘটনায় সরকারকে দোষারোপ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রতিদিন আগুন লাগছে। কিছু হলেই বলে দেন বিএনপি আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। অথচ সরকারের লোকজনই বঙ্গবাজারে আগুন লাগিয়েছে, ব্যবসায়ীরাও তাই বলেছেন। এ অগ্নিকাণ্ডের জন্য সম্পূর্ণ দায় সরকারের।

তিনি বলেন, মানুষের যে দাবি উঠেছে সারের দাম কমাও, চালের দাম কমাও, তেলের দাম কমাও, আমাদের বাঁচতে দিতে হবে, আমাদের একটি ভালো নির্বাচন দিতে হবে, ভোটের অধিকার দিতে হবে। এই দাবিগুলোকে পাশ কাটানোর জন্য মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নেওয়ার জন্য আপনারা এই আগুন লাগাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের চাঁদাবাজির কারণে মার্কেটগুলো অরক্ষিত অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, সারসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবি থেকে মানুষের দৃষ্টি সরাতেই সরকার নিজেই আগুন লাগাচ্ছে। অথচ বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, পরিষ্কার করে বলছি মূল যে জায়গাটা সেটা হচ্ছে এই সরকারকে সরাতে হবে। সরকার যতদিন থাকবে ততদিন মানুষের ওপর অত্যাচার বাড়বে, মানুষের ওপর নির্যাতন নিপীড়ন চলতেই থাকবে, মানুষকে বিনা দোষে গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট যোগ করেছে যাতে সাংবাদিক ভাইয়েরা লিখতে না পারেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সবাই দেশকে রক্ষা করার জন্য একজোট হয়েছি। আজকের এই আন্দোলন শুধু বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়, জোটকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়। এই আন্দোলন জনগণকে তার ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। এদেশের মালিক হচ্ছে জনগণ। সেই মালিকানা জনগণকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা আন্দোলন করছি। ইনশাআল্লাহ এই আন্দোলনে আমরা জিতবই।

মির্জা ফখরুল বলেন, আবার শুরু হয়েছে অত্যাচার নির্যাতন গ্রেফতার। কিন্তু কোন গ্রেফতার হত্যা নির্যাতন আমাদেরকে আটকে রাখতে পারবে? দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কৃষক ভাইদের একসঙ্গে করে শ্রমিক ভাইদের একসঙ্গে করে সেই বিজয় আমরা ছিনিয়ে আনব। আগামীতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলব। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি নির্বাচন যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারবে যে নির্বাচনে মানুষ তার প্রতিনিধিত্ব নির্বাচিত করতে পারবে, সে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।

সব জিনিসপত্রের দাম কয়েকগুন বেড়ে গেছে বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই দিকে সরকারের নজর নেই। তারা বলে সবকিছু সহনশীল আছে, জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, আয়ও বেড়েছে। কার আয় বেড়েছে? আওয়ামী লীগের আর সরকারি কর্মকর্তাদের আয় বেড়েছে। যারা চুরি করে, লুট করে মানুষেটা খায় তাদের বেড়েছে। সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার দেশের সমস্ত খাতগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। কৃষিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। শিল্প, অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে এই সরকার একটি গণবিরোধী সরকার, আজকে সরকার সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এ সরকার আজকে আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সাধারণ মানুষের যারা খেটে খায়, পরিশ্রম করে খায় তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। প্রতিবাদ করলেই গুলি, প্রতিবাদ করলেই মামলা, প্রতিবাদ করলেই গ্রেফতার। মানুষের প্রতি তাদের কোনো দয়ামায়া নেই কারণ তারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়নি।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, যখন বাংলাদেশ স্বাধীন হয় তখন দেশের জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি, আর এখন ১৬ কোটির বেশি। কিন্তু সাড়ে ৭ কোটির সময় দেশে খাদ্যের ঘাটতি ছিল। আর আজকে দেশে খাদ্য ঘাটতির পরিমাণ অনেক কমে গেছে। কাদের কারণে এটা হয়েছে? এই কৃষকদের কারণে এটা হয়েছে। কৃষকরা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, রক্ত পানি করে এই ফসল ফলায়।

তিনি  বলেন, আজকে সরকার যে এতো বড়াই করে, প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। কিন্তু এই কৃষকদের এখন শুধু সম্পূর্ণ অবেহলা করছে না, তাদের কষ্টের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তাদের মাথায় হাত, হঠাৎ করে প্রতি কেজি সারে ৫ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। কেন সারের দাম বাড়িয়েছে, কারণ আইএমএফ শর্ত দিয়েছে ভর্তুকি দেওয়া যাবে না। সারা পৃথিবীতে কৃষিতে ভুর্তকি দেওয়া হয়। তারা ফসল ফলিয়ে আমাদের ভাত জোগায়। সেই কৃষকদের যদি ভর্তুকি না দেওয়া হয় তাহলে তারা ফসল ফলাতে পারবে না।

নিজের সুইজারল্যান্ডের সফরের অভিজ্ঞতা তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, সেখানে দেখলাম পাহাড়ে-পাহাড়ে ১০০-১৫০ গরু একসঙ্গে চরে। গরুগুলো যে দুধ হয়, তার জন্য খামার আছে, সেখানে তারা দুধ দিয়ে মাখন, বিস্কুট, চকলেট তৈরি করে। যেটা সারা পৃথিবীতে যায়। আমি সেখানকার কৃষককে জিজ্ঞেস করলাম, তোমরা যে এগুলো তৈরি করে দাম ঠিক মতো পাও কি না? তারা বললো, দামের ওপর না, আমাদের সরকার টাকা দেয়। অর্থাৎ তাদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য সরকার টাকা দেয়। তাদের ছেলে-মেয়েরা বিনা খরচে স্কুলে লেখাপড়া করে। তাদের সেইভাবে ভুর্তকি দেওয়া হয়, আর আমাদের দেশে কৃষকদের গলা টিপে ধরার জন্য প্রতি কেজি সারে ৫ টাকা দাম বাড়িয়েছে।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পরে শুধু কৃষিখাতে নয়, পোল্ট্রি খাত, গরুর খামারের ব্যবসায়ীরাও পথে বসে গেছে। শুধু বড়রা বড় হচ্ছে, আর যারা মাঝারি এবং ছোট তারা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পত্র-পত্রিকায় দেখেছেন, কয়েক হাজার পোল্ট্রি খামারি টিকে থাকতে পারছে না, কেন বড়-বড় পোল্ট্রি শিল্পগুলো দাম ঠিক করে ছোটদের টিকে থাকা সম্ভব নয়। অথচ, মুরগির, ডিমের দাম সাধারণ মানুষের নাগালে আসছে না, বাড়ছেই। অর্থাৎ যে উৎপাদন করে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে তাকে বাদ দিয়ে শুধু বড়লোকদের জন্য, যাদের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক আছে তাদের টিকে রাখার জন্য এই সরকার কাজ করছে। এই সরকার সাধারণ মানুষের নয়।

কৃষকদলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তৃতা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিনু, কৃষকদল নেতা এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।