Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকারের পদত্যাগ ঘোষণার আগে বিএনপি কোনো ধরনের সংলাপে যাবে না : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকারের পদত্যাগ ঘোষণার আগে বিএনপি কোনো ধরনের সংলাপে যাবে না বলে জানিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকার যাই বলুক না কেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। তার আগে এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এ ঘোষণা সরকারকে সবার আগে দিতে হবে। তাছাড়া সংলাপের কোনো প্রশ্নই উঠবে না।

বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) বিকালে গুলশান বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে ১২ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়োজোঁ কমিটি।

তিনি বলেন, আমরা কোনও ফরম্যাটেই সংলাপে যেতে চাই না। যতক্ষণ না এই সরকার ঘোষণা দেবে নিরপেক্ষ বা তত্ত্বাবধায়ক বা যাই বলেন, সেই সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে, এই ঘোষণা সবার আগে দিতে হবে। সরকারকে পদত্যাগ করেই দিতে হবে। এই ব্যাপারটি ছাড়া সংলাপের কোনও প্রশ্নই আসবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের অধিকার, কথা বলার অধিকার, বাকস্বাধীনতা- এগুলো পুনরুদ্ধার করার জন্য আমরা আন্দোলন করছি। বর্তমান অবৈধ সরকারের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অত্যন্ত সচেতনভাবে বাংলাদেশের সব অর্জনগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে।

‘দেশের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জীবন দেওয়ার কথা বলেছেন’-এমন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের জন্য তিনি পদত্যাগ করতে পারেন না? তাহলে তো দেশের সব মানুষ খুশি হয়। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগও যদি আসে আবার ক্ষমতায়, তাহলে আমরা স্বাগত জানাবো। কিন্তু ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করবেন কিন্তু বলছেন সব ত্যাগ স্বীকার করবেন। সেটা তো ত্যাগ নয়, সেটা কী আমরা ভালোভাবেই বুঝি।

তিনি বলেন, এরই মধ্যে আমাদের আন্দোলন একটা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ বছরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ আওয়ামী লীগ সরকার এ বছরেই একটি পাতানো নির্বাচন করার জন্য পাঁয়তারা করছে। পাতানো নির্বাচন এ দেশের মানুষ কখনো গ্রহণ করবে না। আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই, এ অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। এ দেশের মানুষ মেনে নেবে না। আমাদের পক্ষ থেকে দাবি উত্থাপন হয়েছে, পরিষ্কারভাবে বলেছি- এ সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।

১২ দলের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার আগে সম্মিলিতভাবে যৌথ ঘোষণাপত্র ঘোষণা করবো। আর এ জন্যই আজকের বৈঠক।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করে যদি আবার ক্ষমতায় আসে। আমরা তাতে স্বাগত জানাবো।

তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। জাতির অস্তিত্ব থাকবে কি না, তা এ নির্বাচনের ওপর নির্ভর করবে। জাতির স্বাধীনতা থাকবে কি না, জাতি একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র তৈরি করতে পারবে কি না, তাও নির্ভর করবে। সেজন্য আমরা বলেছি, নির্বাচনটা অবশ্যই নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।

বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু। ১২ দলের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে ওলামায় ইসলাম মহাসচিব গোলাম মুহিউদ্দিন ইকরাম, ন্যাপ (ভাসানী) চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম, জাগপার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রাশেদ প্রধান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবদুল করিম, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির সভাপতি সৈয়দ জাভেদ মোহাম্মাদ সালেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) মহাসচিব মো. নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

সরকারের পদত্যাগ ঘোষণার আগে বিএনপি কোনো ধরনের সংলাপে যাবে না : ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৬:৩৮:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকারের পদত্যাগ ঘোষণার আগে বিএনপি কোনো ধরনের সংলাপে যাবে না বলে জানিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকার যাই বলুক না কেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। তার আগে এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এ ঘোষণা সরকারকে সবার আগে দিতে হবে। তাছাড়া সংলাপের কোনো প্রশ্নই উঠবে না।

বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) বিকালে গুলশান বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে ১২ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়োজোঁ কমিটি।

তিনি বলেন, আমরা কোনও ফরম্যাটেই সংলাপে যেতে চাই না। যতক্ষণ না এই সরকার ঘোষণা দেবে নিরপেক্ষ বা তত্ত্বাবধায়ক বা যাই বলেন, সেই সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে, এই ঘোষণা সবার আগে দিতে হবে। সরকারকে পদত্যাগ করেই দিতে হবে। এই ব্যাপারটি ছাড়া সংলাপের কোনও প্রশ্নই আসবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের অধিকার, কথা বলার অধিকার, বাকস্বাধীনতা- এগুলো পুনরুদ্ধার করার জন্য আমরা আন্দোলন করছি। বর্তমান অবৈধ সরকারের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অত্যন্ত সচেতনভাবে বাংলাদেশের সব অর্জনগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে।

‘দেশের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জীবন দেওয়ার কথা বলেছেন’-এমন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের জন্য তিনি পদত্যাগ করতে পারেন না? তাহলে তো দেশের সব মানুষ খুশি হয়। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগও যদি আসে আবার ক্ষমতায়, তাহলে আমরা স্বাগত জানাবো। কিন্তু ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করবেন কিন্তু বলছেন সব ত্যাগ স্বীকার করবেন। সেটা তো ত্যাগ নয়, সেটা কী আমরা ভালোভাবেই বুঝি।

তিনি বলেন, এরই মধ্যে আমাদের আন্দোলন একটা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ বছরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ আওয়ামী লীগ সরকার এ বছরেই একটি পাতানো নির্বাচন করার জন্য পাঁয়তারা করছে। পাতানো নির্বাচন এ দেশের মানুষ কখনো গ্রহণ করবে না। আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই, এ অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। এ দেশের মানুষ মেনে নেবে না। আমাদের পক্ষ থেকে দাবি উত্থাপন হয়েছে, পরিষ্কারভাবে বলেছি- এ সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।

১২ দলের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার আগে সম্মিলিতভাবে যৌথ ঘোষণাপত্র ঘোষণা করবো। আর এ জন্যই আজকের বৈঠক।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করে যদি আবার ক্ষমতায় আসে। আমরা তাতে স্বাগত জানাবো।

তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। জাতির অস্তিত্ব থাকবে কি না, তা এ নির্বাচনের ওপর নির্ভর করবে। জাতির স্বাধীনতা থাকবে কি না, জাতি একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র তৈরি করতে পারবে কি না, তাও নির্ভর করবে। সেজন্য আমরা বলেছি, নির্বাচনটা অবশ্যই নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।

বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু। ১২ দলের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে ওলামায় ইসলাম মহাসচিব গোলাম মুহিউদ্দিন ইকরাম, ন্যাপ (ভাসানী) চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম, জাগপার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রাশেদ প্রধান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবদুল করিম, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির সভাপতি সৈয়দ জাভেদ মোহাম্মাদ সালেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) মহাসচিব মো. নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন।