Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকারের পতন বিএনপির একমাত্র চাওয়া : মির্জা ফখরুল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ১০:৩৪:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৩
  • ১৮৩ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকার পতনই বিএনপির একমাত্র চাওয়া বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে লক্ষ্মীপুর থেকে আসা আহত নেতা-কর্মীদের এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, দীর্ঘ একযুগের উপরে আমরা সংগ্রাম, লড়াই করছি এই ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী, নিপীড়ন-নির্যাতনকারী সরকারের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে। আমাদের লক্ষ্য একটাই, এই ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে মুক্তি চাই, দেশ মুক্তি চায়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের অত্যাচার-নিপিড়ন থেকে মুক্তি পেতে ইতোমধ্যে অনেকে প্রাণ দিয়েছেন, সাধারণ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন, অনেক মানুষ গুম হয়ে গেছেন এবং সর্বশেষ এই ১৮ জুলাই আপনারা (লক্ষ্মীপুরের নেতা-কর্মীরা) শান্তিপূর্ণ মিছিল করছিলেন, সেই মিছিলে পুলিশ সরাসরি গুলি করে আমাদের ভাই সজীব হোসেনের প্রাণ কড়ে নিয়েছে। এখন একটাই চাওয়া, একটাই পথ, সেটা হচ্ছে এদেরকে সরাতে হবে, এদের পতন ঘটাতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এই দেশ নিরাপদ না, কেউই নিরাপদ না। আমাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, অস্তিত্ব ফিরে পাবার জন্য এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। যারা মারা গেছে তাদের পরিবারই বুঝে যন্ত্রণা ও কষ্ট, এই ত্যাগ কখনো বৃথা যাবে না।

বিএনপির চলমান আন্দোলনে দেশের মানুষ সাথে আছে বলে উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ জীবন দিয়ে রাস্তায় নেমেছে। রাস্তায় নেমে এই সরকারকে সরানোর জন্য সংগ্রাম শুরু করেছে। বিশ্বাস করি যে, এই সরকারকে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরাবে এবং জনগণের যে সরকার, সেই সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

ঢাকার প্রবেশমুখে গত ২৯ জুলাই অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির ‘বড় বিজয়’ হয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, সেদিন প্রমাণ হয়েছে, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। বিরোধীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে গুলি, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিয়ে আক্রমণ করে, তা সারা বিশ্ব দেখেছে।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম হাসিনা.. আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিচ্ছি। আল্লাহ্ আপনার বিচার করবে।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমাদের হারানোর কিছু নেই, সময় এখন অর্জনের। ২৯ তারিখের কর্মসূচিতে বিএনপির বিজয় হয়েছে। বিশ্ববিবেক জেগে উঠেছে। তারা বলছে, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হবে। অতি অল্প সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।

সরকার একটি ভয়ভীতি ও সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ভয় পায় বলেই তারেক রহমানকে সাজা দিয়েছে। তাতেও ভয় কাটেনি বলে জুবাইদা রহমানকেও সাজা দিয়েছে। নির্বাচনের আগে বিএনপির নেতা-কর্মীদের কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।

আজকের সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান বলেন, বর্তমান সরকারের সঙ্গে কোনো ধরনের আপসের সুযোগ নেই। চলমান এক দফা দাবি আদায়ের আন্দোলন বিএনপি বা যুবদলের নয়, ১৮ কোটি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে কোনো অপরাধ না করলেও খালেদা জিয়া ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাজা পেতে হবে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘রাজনীতি করার কারণে তারেক রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু জুবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে কেন, বুঝতে পারি না।

গত ১৮ জুলাই লক্ষীপুরে বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত পদযাত্রার কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে দুই চোখ হারান কৃষকদল নেতা বোরহান। ওইদিন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে গুলিতে কৃষকদলের আরেক নেতা সজীব হোসেনের মৃত্যু হয়। অনেকে আহত হন, দৃষ্টিশক্তি হারান অনেকে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবারগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিএনপি নেতারা।

এর আগে পুলিশের গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারানোর জন্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আল্লাহর কাছে বিচার দেন লক্ষীপুরের কৃষকদলের নেতা বোরহান উদ্দিন। দুই চোখ হারানো বোরহান বলেন, ‘আমাদের কি অপরাধ ছিল? আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেছিলাম। এরপরও কেন আপনারা গুলি করেছিলেন?’

দলের পক্ষ থেকে নিহত সজীব হোসেনের পরিবার ও আহতদের আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয় অনুষ্ঠানে।

লক্ষ্মীপুরের সাবেক এমপি ও দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সভাপতিত্বে ও শাহাবুদ্দিন সাবুর সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবে রহমান শামীম, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, পুলিশের গুলিতে দৃষ্টি শক্তি হারানো যুবদল কর্মী মোস্তফা কামাল, শ্রমিক দলের ইকবাল হোসেন, কৃষক দলের বোরহান উদ্দিন, নিহত সজীবের বাবা আবু তাহের প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদ, বিএলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম উপস্থিত ছিলেন।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

সরকারের পতন বিএনপির একমাত্র চাওয়া : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ১০:৩৪:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকার পতনই বিএনপির একমাত্র চাওয়া বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে লক্ষ্মীপুর থেকে আসা আহত নেতা-কর্মীদের এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, দীর্ঘ একযুগের উপরে আমরা সংগ্রাম, লড়াই করছি এই ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী, নিপীড়ন-নির্যাতনকারী সরকারের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে। আমাদের লক্ষ্য একটাই, এই ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে মুক্তি চাই, দেশ মুক্তি চায়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের অত্যাচার-নিপিড়ন থেকে মুক্তি পেতে ইতোমধ্যে অনেকে প্রাণ দিয়েছেন, সাধারণ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন, অনেক মানুষ গুম হয়ে গেছেন এবং সর্বশেষ এই ১৮ জুলাই আপনারা (লক্ষ্মীপুরের নেতা-কর্মীরা) শান্তিপূর্ণ মিছিল করছিলেন, সেই মিছিলে পুলিশ সরাসরি গুলি করে আমাদের ভাই সজীব হোসেনের প্রাণ কড়ে নিয়েছে। এখন একটাই চাওয়া, একটাই পথ, সেটা হচ্ছে এদেরকে সরাতে হবে, এদের পতন ঘটাতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এই দেশ নিরাপদ না, কেউই নিরাপদ না। আমাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, অস্তিত্ব ফিরে পাবার জন্য এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। যারা মারা গেছে তাদের পরিবারই বুঝে যন্ত্রণা ও কষ্ট, এই ত্যাগ কখনো বৃথা যাবে না।

বিএনপির চলমান আন্দোলনে দেশের মানুষ সাথে আছে বলে উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ জীবন দিয়ে রাস্তায় নেমেছে। রাস্তায় নেমে এই সরকারকে সরানোর জন্য সংগ্রাম শুরু করেছে। বিশ্বাস করি যে, এই সরকারকে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরাবে এবং জনগণের যে সরকার, সেই সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

ঢাকার প্রবেশমুখে গত ২৯ জুলাই অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির ‘বড় বিজয়’ হয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, সেদিন প্রমাণ হয়েছে, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। বিরোধীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে গুলি, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিয়ে আক্রমণ করে, তা সারা বিশ্ব দেখেছে।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম হাসিনা.. আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিচ্ছি। আল্লাহ্ আপনার বিচার করবে।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমাদের হারানোর কিছু নেই, সময় এখন অর্জনের। ২৯ তারিখের কর্মসূচিতে বিএনপির বিজয় হয়েছে। বিশ্ববিবেক জেগে উঠেছে। তারা বলছে, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হবে। অতি অল্প সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।

সরকার একটি ভয়ভীতি ও সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ভয় পায় বলেই তারেক রহমানকে সাজা দিয়েছে। তাতেও ভয় কাটেনি বলে জুবাইদা রহমানকেও সাজা দিয়েছে। নির্বাচনের আগে বিএনপির নেতা-কর্মীদের কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।

আজকের সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান বলেন, বর্তমান সরকারের সঙ্গে কোনো ধরনের আপসের সুযোগ নেই। চলমান এক দফা দাবি আদায়ের আন্দোলন বিএনপি বা যুবদলের নয়, ১৮ কোটি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে কোনো অপরাধ না করলেও খালেদা জিয়া ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাজা পেতে হবে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘রাজনীতি করার কারণে তারেক রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু জুবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে কেন, বুঝতে পারি না।

গত ১৮ জুলাই লক্ষীপুরে বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত পদযাত্রার কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে দুই চোখ হারান কৃষকদল নেতা বোরহান। ওইদিন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে গুলিতে কৃষকদলের আরেক নেতা সজীব হোসেনের মৃত্যু হয়। অনেকে আহত হন, দৃষ্টিশক্তি হারান অনেকে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবারগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিএনপি নেতারা।

এর আগে পুলিশের গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারানোর জন্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আল্লাহর কাছে বিচার দেন লক্ষীপুরের কৃষকদলের নেতা বোরহান উদ্দিন। দুই চোখ হারানো বোরহান বলেন, ‘আমাদের কি অপরাধ ছিল? আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেছিলাম। এরপরও কেন আপনারা গুলি করেছিলেন?’

দলের পক্ষ থেকে নিহত সজীব হোসেনের পরিবার ও আহতদের আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয় অনুষ্ঠানে।

লক্ষ্মীপুরের সাবেক এমপি ও দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সভাপতিত্বে ও শাহাবুদ্দিন সাবুর সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবে রহমান শামীম, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, পুলিশের গুলিতে দৃষ্টি শক্তি হারানো যুবদল কর্মী মোস্তফা কামাল, শ্রমিক দলের ইকবাল হোসেন, কৃষক দলের বোরহান উদ্দিন, নিহত সজীবের বাবা আবু তাহের প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদ, বিএলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম উপস্থিত ছিলেন।