নিজস্ব প্রতিবেদক :
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ পিছিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। একদিন পিছিয়ে আওয়ামী লীগের তিন সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং বিএনপি নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ পিছিয়ে শুক্রবার (২৮ জুলাই) এই সমাবেশ পালিত হবে।
বুধবার (২৬ জুলাই) রাতে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির শীর্ষ নেতার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া জানান, আগারগাঁওয়ের বাণিজ্য মেলা মাঠটি সমাবেশের জন্য উপযোগী না হওয়ায় আগামীকালকের সমাবেশ একদিন পিছিয়ে শুক্রবার (২৮ জুলাই) করা হয়েছে।
সমাবেশ একদিন পেছানোর বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান বলেন, কোনো মাঠ পাওয়া না যাওয়ায় এবং যে মাঠ পাওয়া গেছে তা ব্যবহার উপযোগী না হওয়ায় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ আগামীকালের পরিবর্তে আগামী ২৮ জুলাই (শুক্রবার) দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে ঢাকার শেরে-বাংলা নগরস্থ পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে রাজধানীর গুলিস্তানের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তবে পুলিশ তাতে আপত্তি জানায় এবং অন্য কোনো মাঠে সমাবেশ করার পরামর্শ দেয়। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জিমনেশিয়াম মাঠে সমাবেশের অনুমোদন চাইলেও কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সমাবেশের অনুমতি দেয়নি।
ফলে আগারগাঁওয়ের পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে পূর্বঘোষিত এই সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যে একটি প্রতিনিধি দল পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠ পরিদর্শন করে। তবে মাঠটি সমাবেশের জন্য উপযোগী না হওয়ায় ক্ষমতাসীন দলটির পক্ষ থেকে সমাবেশ একদিন পেছানোর ঘোষণা এলো।
বুধবার (২৬ জুলাই) রাত ৯টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকার মহাসমাবেশ একদিন পেছানোর কথা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশের অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়। আজ দিচ্ছি, কাল দিচ্ছি বলে বুধবার রাত ১০টা পর্যন্ত পুলিশ সমাবেশের অনুমতি দেয়নি।
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা জানান, বৃহস্পতিবারের বদলে একদিন পিছিয়ে শুক্রবার (২৮ জুলাই) মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। সেদিন দুপুর দুইটায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা নয়াপল্টনে এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের কথা গত ২৩ জুলাই ঢাকা মহানগর পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। মহানগর পুলিশ কর্তৃপক্ষ আমাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উচ্চ আদালতের আপত্তি এবং কর্মদিবসে নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানে জনদুর্ভোগের অজুহাতে সমাবেশ করার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে। যদিও ইতোপূর্বে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবং কর্মদিবসে নয়াপল্টনে অসংখ্য সমাবেশ ও মহাসমাবেশের দৃষ্টান্ত রয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি বরাবরই শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী, তাই সরকার ও সরকারদলীয় বিভিন্ন বাহিনীর নানা উসকানি, এমনকি গত প্রায় এক বছরে ২০ জন নেতাকর্মী হত্যা ও অসংখ্য নেতাকর্মী নির্যাতিত হওয়ার পরও সীমাহীন ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারা দেশে অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ও হচ্ছে। ঢাকার বিভিন্ন হোটেলে এবং সারা দেশের নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে পুলিশি তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ২৭ জুলাইয়ের পরিবর্তে ২৮ জুলাই (শুক্রবার) দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশের ঘোষণা দিচ্ছে। আশা করি, দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চলমান গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানে সরকার কিংবা সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠান বাধা সৃষ্টি করবে না
‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ২৭ জুলাইয়ের পরিবর্তে ২৮ জুলাই (শুক্রবার) দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশের ঘোষণা দিচ্ছে। আশা করি, দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চলমান গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানে সরকার কিংবা সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠান বাধা সৃষ্টি করবে না।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আয়োজিত যে কোনো গণতান্ত্রিক কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করার যে কোনো অপচেষ্টা দেশবাসী প্রকৃতপক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের বাধা হিসেবেই দেখবে। এমন অপচেষ্টায় নিয়োজিতদের গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা সৃষ্টিকারী হিসেবেই গণ্য করা হবে।