মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সমন্বয়ক মো. সারজিস আলম বলেন, ৫ আগস্টের পর গিরগিটির মতো ভুয়া সমন্বয়ক তৈরি হয়েছে। তাদেরকে আলাদা করতে হবে। তাদের মধ্যে সুবিধাবাদী চরিত্রটা আগেও ছিল, এখনও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। এদেরকে আলাদা করা না হলে সমন্বয়কের নাম ভাঙিয়ে আমাদের ইমেজকে খেয়ে ফেলবে। এদের মধ্যে কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করলে সাথে সাথে বহিষ্কার করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকালে মাদারীপুর পৌরসভার হলরুমে মাদারীপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্য ও ছাত্রদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কোনো রাজনৈতিক দল করা হবে না, তবে ভবিষ্যতে অন্য কোনো নতুন নামে এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত মানুষগুলো রাজনৈতিক দল গঠন করতে চাইলে করা যেতে পারে।
সারজিস আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানারে কোনো রাজনৈতিক দল হবে না, এটা শতভাগ ঠিক। তবে এই ব্যানারে যেসব মানুষেরা আছে তারা যদি অন্য কোনো নামে বা ব্যানারে রাজনৈতিক দল বা রাজনীতি করতে চায় সে বিষয়ে তাদের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে।
তিনি বলেন, এখন বিষয় হচ্ছে আমরা সেই রাজনৈতিক ব্যানারে যাবো কি না, সেটা এখনও আলোচনার বিষয়। তবে আগস্ট বিপ্লবের পর দেশে দিন দিন ষড়যন্ত্র আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখনই আমাদের বিভক্তি হওয়া যাবে না। বিভক্তি হলে আমরা দুর্বল হয়ে যাবো এবং ফ্যাসিস্টরা পুনরায় জায়গা দখল করে নিবে।
মো. সারজিস আলম হুঁশিয়ারি দেন, ছাত্রদের মধ্যে কেউ যদি ভবিষ্যতে ফ্যাস্টিস হওয়ার চিন্তা করেন কিংবা ক্ষমতার অপব্যবহার করার চেষ্টা করেন, তাদেরকে বহিষ্কার করে আইনের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্ররা কেউ আলাদা হবেন না। সবাই একত্রে থাকবেন। তা না হলে পরিণতি খারাপের দিকে যাবে।
সারজিস আলম আরও বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও সকল নেতাকর্মী নিয়ে যাননি। কিছু অংশ পালিয়েছেন। তাই আমরা সোচ্চার না থাকলে তারা পুনরায় ফিরে আসতে পারেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির এ সমন্বয়ক বলেন, শেখ হাসিনার সরকার যে অপকর্ম করেছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সেই জায়গাটা ভেঙে গেছে। তবে সুবিধাবাদীরা ছাত্রদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা করছে, চক্রান্ত করছে। এজন্য সবাইকে এক থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, ১৬ বছরের রেডি করা সেটাপ, অল্পকিছু মাথা পালিয়েছে, তাদের আসতে বেশি সময় লাগবে না।
তিনি বলেন, কেউ কল্পনা করতে পারে নাই শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাবে। শেখ হাসিনা নিজেকে সর্ব শক্তিমান দাবি করাটাই শুধু বাকি ছিল। এছাড়া সবকিছুই দেশে হয়েছে। হাসিনার মতো মানুষের পতন হওয়া, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া -এর থেকে লজ্জাজনক কিছু হতে পারে না। পালিয়ে যাবার সময় তিনি নেতা-কর্মীদের নিয়েও যেতে পারেন নাই।
মাদারীপুর জেলায় নিহত ১৭ জনের পরিবার ও আহত দেড় শতাধিক পরিবারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সারজিস। ওই সময় তিনি আহত আন্দোলনকারীদের সুচিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ তুলে ধরেন। অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারগুলোকে আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন এ সমন্বয়ক।