নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সব জায়গায় রাজনীতি প্রযোজ্য নয়, প্রতিটি অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক প্রভাব থাকা উচিত নয়। কিছু কিছু জায়গা রাজনীতি থেকে বাইরে রাখতে হয়। অ্যালামনাইয়ের চরিত্র অরাজনৈতিক হওয়া উচিত।
শুক্রবার (১০ মার্চ) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসিন হলের সুবর্ণজয়ন্তী ও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের পুনর্মিলনীতে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে আমন্ত্রণ না জানানোয় আয়োজকদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদেও বলেন, এসব প্রোগ্রামকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখতে হবে। অমুক মন্ত্রীকে এনে প্রধান অতিথি করতে হবে এর সঙ্গে আমি একদম একমত নই।
এ ধরনের আয়োজন নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখন আমি মহসিন হলের প্রাক্তন আবাসিক ছাত্র হিসেবে আসবো। আমরা আড্ডা দেবো, একসাথে খাবো, পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণ করবো। হাসিখুশিতে সময়টা কাটিয়ে দেবো।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল বলেছিলেন আওয়ামী লীগ বিলাসী জীবনযাপনের জন্য রাজনীতি করে। আওয়ামী লীগ কোনো বিলাসী রাজনীতি করে না,পকেটের রাজনীতি করে বিএনপি, শেখ হাসিনার সরকার জনকল্যাণে রাজনীতি করে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতার ছিল, সে সময় তারা বিলাসী জীবন-যাপন করেছে, এখনও তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডনে বসে পলাতক অবস্থায় আয়েশি জীবনযাপন করছেন। সেখানে তাদের আয়েশি জীবন-যাপনের কথা আওয়ামী লীগকে বলা শোভা পায় না। তারা নিজেদের পকেটের উন্নয়নের রাজনীতি করেন এবং শেখ হাসিনা দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের রাজনীতি করেন। কে কি বলল তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। আমরা যা করছি মানুষের জন্য করছি। মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য করছি। যারা লুটপাট করেছে তাদের জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে বলে আজ তারা ক্ষমতায় নেই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যে গণআন্দোলনের সূচনা করেছে, সেই আন্দোলনে যখন ভাটার টানে ম্রিয়মান হয়ে পড়ে, তখন তারা আসলে দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে যায় এবং আবোল-তাবোল বকে।
বেগম জিয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি এখন যেখানে আছেন সেটাই হচ্ছে আদালতের এখতিয়ার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার উদারতা, মানবিক কারণে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করেছেন এবং তাকে বাসায় থাকার অনুমতি দিয়েছেন। এর অর্থ এই নয় যে তার সাজা বাতিল হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতা বলে এটা তার মহানুভবতা। শারীরিক কারণে, মানবিক কারণে তার সাজা স্থগিত রাখা হয়েছে। এখন তিনি ইলেকশন করবেন, কী রাজনীতি করবেন সেটা আদালতের জাজমেন্টের ওপর নির্ভর করে।
ডাকসুর নিয়মিত নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঢাবি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, নির্বাচন করার দায়িত্ব তাদের। এখানে আওয়ামী লীগের কোনও হস্তক্ষেপ নেই। নিয়মিত নির্বাচন করতে না পারাটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যর্থতা।
অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমেদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ প্রমুখ।