Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সবার অজান্তেই বাংলাদেশ এখন শ্রীলঙ্কা হয়ে গেছে: জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সবার অজান্তেই বাংলাদেশ এখন শ্রীলংকা হয়ে গেছে মন্তব্য করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেন, আমরা শ্রীলঙ্কাকে দেউলিয়া বলেছিলাম। তখন সারা বিশ্বের মতোই আমরা শ্রীলঙ্কা নিয়ে চিন্তিত হয়েছিলাম। এখন তো আমাদের অবস্থাও তাই। বিদ্যুৎ নেই, সবার আয় কমে গেছে, জিনিসপত্রের দাম প্রতিদিন বাড়ছে; এটাই শ্রীলঙ্কা।

শনিবার (১০ জুন) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জি এম কাদের বলেন, দেশের মানুষ চরম সংকটে দিন কাটাচ্ছে। দেশের মানুষ যেন দোজখের আগুনে পুড়ছে। শারীরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে দেশের মানুষ বিপর্যস্ত। এখন শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশে পণ্যের দাম দ্বিগুণেরও বেশি। সবার আয় কমে গেছে। জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলছে, এটাই শ্রীলঙ্কা। সরকার বলে ঋণ পরিশোধে আমরা ব্যর্থ হইনি। যদি আপনারা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ না হন তাহলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারী সংস্থা মুডিস কেন বলে বাংলাদেশে ঋণ দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হবে। বাকিতে পণ্য কিনে সরকার দেশের মানুষের মাথায় বিশাল ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে।

শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, দেশটির সাধারণ মানুষ দাবি আদায়ে রাস্তায় নেমে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ রাস্তায় নামেনি, বিক্ষোভ করেনি। কারণ, শ্রীলঙ্কার পুলিশ আন্দোলনকারীদের গুম করেনি, লাঠিচার্জ করেনি এবং গুলিও করেনি। সে দেশের পুলিশ আন্দোলনকারীদের দেশের মানুষ হিসেবে বিবেচনা করেছে। শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করেছে সে দেশের পুলিশ।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ রাস্তায় নামেনি দুটি কারণে, এক. তারা জানেন না দেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে গেছে। দুই. রাস্তায় নামলে তাদের কী হবে তা কেউ জানে না। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করলে জনগণ বাঁচতে পারবে কি না, ব্যবসা নিয়ে টিকতে পারবে কি না এবং পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকতে পারবে কি না তা নিয়ে শঙ্কিত সবাই। আমরা কী ব্রিটিশ আমলে আছি? পাকিস্তান আমলে আছি? আমাদের টাকায় বন্দুক কিনে পুলিশ আমাদের বুকে গুলি চালায়। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের পার্থক্য একটাই দেশটির মতো আমাদের জনগণ মাঠে নামেনি। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এসময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান অভিযোগ করে বলেন, আমরা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করছি। আমরা কোথায় যাই, কি করি তা প্যাগাসাস দিয়ে অনুসরণ করা হয়। ফাঁদ পেতে আমাদের ছবি তোলার চেষ্টা করা হয়। যারা কানাডায় বাড়ি তৈরি করে, যারা দুবাইতে ব্যবসা খোলে; তাদের পেছনে গোয়েন্দা লাগান না কেন? জিএম কাদের কি সহিংসতার সঙ্গে জড়িত? আমাদের ভয় পাচ্ছেন কেন? আমরা তো জনগণের পক্ষে কাজ করছি।

দল নিয়ে বেচাকেনা করতে দেওয়া হবে না জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, দেশের মানুষ আমাদের বিশ্বাস করে না, তারা মনে করছে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় নিতে আমরা নাটক করছি। কারণ আমাদের কিছু মানুষ দুই নৌকায় পা দিয়ে আছে। দল নিয়ে বেচাকেনা করতে দেওয়া হবে না। যারা জাতীয় পার্টিতে থেকে আরেক দলের কথা বলেন, তাহলে সেই দলে চলে যেতে পারেন। যারা দালালি করবেন তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় সম্মেলনে জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক ও ভাইস-চেয়ারম্যান এইচ এম শাহরিয়ার আসিফের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আহাদ ইউ চৌধুরী শাহিনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চাঁদাবাজি নয়, ভাঙারি দোকান দখল দ্বন্দ্বেই মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: ডিএমপি

সবার অজান্তেই বাংলাদেশ এখন শ্রীলঙ্কা হয়ে গেছে: জিএম কাদের

প্রকাশের সময় : ০৭:৪৬:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সবার অজান্তেই বাংলাদেশ এখন শ্রীলংকা হয়ে গেছে মন্তব্য করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেন, আমরা শ্রীলঙ্কাকে দেউলিয়া বলেছিলাম। তখন সারা বিশ্বের মতোই আমরা শ্রীলঙ্কা নিয়ে চিন্তিত হয়েছিলাম। এখন তো আমাদের অবস্থাও তাই। বিদ্যুৎ নেই, সবার আয় কমে গেছে, জিনিসপত্রের দাম প্রতিদিন বাড়ছে; এটাই শ্রীলঙ্কা।

শনিবার (১০ জুন) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জি এম কাদের বলেন, দেশের মানুষ চরম সংকটে দিন কাটাচ্ছে। দেশের মানুষ যেন দোজখের আগুনে পুড়ছে। শারীরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে দেশের মানুষ বিপর্যস্ত। এখন শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশে পণ্যের দাম দ্বিগুণেরও বেশি। সবার আয় কমে গেছে। জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলছে, এটাই শ্রীলঙ্কা। সরকার বলে ঋণ পরিশোধে আমরা ব্যর্থ হইনি। যদি আপনারা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ না হন তাহলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারী সংস্থা মুডিস কেন বলে বাংলাদেশে ঋণ দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হবে। বাকিতে পণ্য কিনে সরকার দেশের মানুষের মাথায় বিশাল ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে।

শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, দেশটির সাধারণ মানুষ দাবি আদায়ে রাস্তায় নেমে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ রাস্তায় নামেনি, বিক্ষোভ করেনি। কারণ, শ্রীলঙ্কার পুলিশ আন্দোলনকারীদের গুম করেনি, লাঠিচার্জ করেনি এবং গুলিও করেনি। সে দেশের পুলিশ আন্দোলনকারীদের দেশের মানুষ হিসেবে বিবেচনা করেছে। শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করেছে সে দেশের পুলিশ।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ রাস্তায় নামেনি দুটি কারণে, এক. তারা জানেন না দেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে গেছে। দুই. রাস্তায় নামলে তাদের কী হবে তা কেউ জানে না। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করলে জনগণ বাঁচতে পারবে কি না, ব্যবসা নিয়ে টিকতে পারবে কি না এবং পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকতে পারবে কি না তা নিয়ে শঙ্কিত সবাই। আমরা কী ব্রিটিশ আমলে আছি? পাকিস্তান আমলে আছি? আমাদের টাকায় বন্দুক কিনে পুলিশ আমাদের বুকে গুলি চালায়। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের পার্থক্য একটাই দেশটির মতো আমাদের জনগণ মাঠে নামেনি। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এসময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান অভিযোগ করে বলেন, আমরা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করছি। আমরা কোথায় যাই, কি করি তা প্যাগাসাস দিয়ে অনুসরণ করা হয়। ফাঁদ পেতে আমাদের ছবি তোলার চেষ্টা করা হয়। যারা কানাডায় বাড়ি তৈরি করে, যারা দুবাইতে ব্যবসা খোলে; তাদের পেছনে গোয়েন্দা লাগান না কেন? জিএম কাদের কি সহিংসতার সঙ্গে জড়িত? আমাদের ভয় পাচ্ছেন কেন? আমরা তো জনগণের পক্ষে কাজ করছি।

দল নিয়ে বেচাকেনা করতে দেওয়া হবে না জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, দেশের মানুষ আমাদের বিশ্বাস করে না, তারা মনে করছে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় নিতে আমরা নাটক করছি। কারণ আমাদের কিছু মানুষ দুই নৌকায় পা দিয়ে আছে। দল নিয়ে বেচাকেনা করতে দেওয়া হবে না। যারা জাতীয় পার্টিতে থেকে আরেক দলের কথা বলেন, তাহলে সেই দলে চলে যেতে পারেন। যারা দালালি করবেন তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় সম্মেলনে জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক ও ভাইস-চেয়ারম্যান এইচ এম শাহরিয়ার আসিফের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আহাদ ইউ চৌধুরী শাহিনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা প্রমুখ।