নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির অনেক নেতার অপকর্মের রেকর্ড রয়েছে; বেশি কথা বললে সেগুলো ফাঁস করে দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শুক্রবার (২২ মার্চ) প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপির দু-একজন নেতাকে ঘন ঘন প্রেস কনফারেন্স করতে দেখা যাচ্ছে। যারা সরকারের সঙ্গে লাইন দিয়েছিলেন। রাজনীতির কাক যেখানে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট পায় সেখানে যায়। বেশি কথা বললে তাদের সবকিছু ফাঁস করে দেব।
যে রাজনৈতিক শক্তি স্বাধীনতাবিরোধী তাদের পরবর্তী প্রজন্ম পেছনে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রাজনৈতিক অপশক্তির সঙ্গে ব্যক্তিবিশেষ যোগ দিয়েছিল। দরিদ্র দেশ বলে বহির্বিশ্বে উপস্থাপন করে পুরস্কার নেয় তারা। ড. ইউনূসকে বন্যা, দুর্যোগে মানুষের পাশে দেখা যায় না। তার আগ্রহ শুধু তদবির করে পুরস্কার নেওয়া।
তিনি বলেন, আদালতে তার মামলা চলছে। এর মধ্যে দেখলাম বাকু সম্মেলনে তিনি পুরস্কার পেয়েছে। পৃথিবীতে যত ধরনের পুরস্কার আছে সব জায়গায় তার লবিস্ট ফার্ম যোগাযোগ করে।
বিএনপির সমালোচনা করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়ে তারা ষড়যন্ত্র করছে। তারেক রহমান বোরাকে করে উড়ে এসে বিএনপির পাশে দাঁড়াবে এমন স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি। দেশটাকে মগের মুল্লুক বানানোর স্বপ্ন ভেস্তে যাওয়ায় বিএনপি খেই হারিয়ে ফেলেছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়ে তারা ষড়যন্ত্র করছে। তারেক রহমান বোরাকে করে উড়ে এসে বিএনপির পাশে দাঁড়াবে এমন স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি। দেশটাকে মগর মুল্লুক বানানোর স্বপ্ন ভেস্তে যাওয়ায় বিএনপি খেই হারিয়ে ফেলেছে। মানুষ পোড়ানোর রাজনীতি করার চেষ্টা করলে দেশের মানুষ উচিত শিক্ষা দেবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সকল প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করা মৃত্যুঞ্জয়ী নেতা বলে আখ্যায়িত করলে ড. হাছান মাহমুদ।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশে যখন বন্যা হয় তখন ড. ইউনুসকে দেখা যায় না। দেশে যখন মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়, তখন তার (ড.ইউনুস) কোনো বক্তব্য শোনা যায় না। দেশে যখন কোনও দুর্যোগ হয়, তখন তিনি (ড.ইউনুস) বিদেশে ব্যস্ত থাকেন পুরস্কার নেওয়ার জন্য। পৃথিবীতে যত ধরনের পুরস্কার আছে সব জায়গায় তার লবিস্টরা যোগাযোগ করে সেটি নিয়ে আসে। যাকে (ড. ইউনুস) দেশের কোনো কাজে পাওয়া যায় না, তাকে যে এরকম পুরস্কার দিয়ে বেড়ায় এটি অত্যন্ত হাস্যকর।
তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে যারা সরকারের সঙ্গে লাইন দিয়েছিল, কিন্তু হিসেবে মেলেনি, এখন তারা মিডিয়ার সামনে এসে নানা কথা বলা শুরু করেছে। বেশি কথা বললে আপনাদের অনেক কিছু রেকর্ড করা আছে, সবকিছু ফাঁস করে দেব। সরকারের সঙ্গে কতজন লাইন দিয়েছিল সেই তালিকাও আমাদের কাছে আছে।
ড. হাছান মাহমুদ বিএনপির উদ্দেশে বলেন, দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধাচরণ করেছে, তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। আজকে দেশ যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে, সমগ্র পৃথিবী যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করছে, তখনই বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সেই অপশক্তি আবারও দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতিকে ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা করছে। দেশকে পেছনে নিয়ে যাওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। এজন্য তারা (বিএনপি) ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ বলে স্লোগান দেয়। অর্থাৎ, তারা (বিএনপি) বাংলাদেশকে পেছনে নিয়ে যেতে চাচ্ছে।
ড. ইউনূসের উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপি দেশের গণতন্ত্রকে বারবার ধ্বংস করতে চেয়েছে। গত নির্বাচনের আগেও তারা (বিএনপি) দেশের গণতন্ত্রকে বারবার ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে নির্বাচনকে প্রতিহত করার ডাক দিয়েছিল। কিন্তু তারা (বিএনপি) নির্বাচন প্রতিহত করতে পারেনি। সেই রাজনৈতিক অপশক্তির (বিএনপি) সঙ্গে কিছু ব্যক্তি বিশেষও যুক্ত হয়েছেন। যিনি (ড.ইউনূস) দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে চিন্তিত নন, যিনি দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দরিদ্র দেশ এবং পিছিয়ে পড়া দেশ হিসেবে উপস্থাপন করে পুরস্কার গ্রহণ করেন।
আ.লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি এবং জামায়াত নির্বাচনকে ভণ্ডুল করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাদের (বিএনপি-জামায়াত) সেই অপচেষ্টা ভেস্তে গেছে। দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং আন্তর্জাতিক মানের উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সে কারণে পৃথিবীর ৮০টি রাষ্ট্রপ্রধান শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখে অভিনন্দন জানিয়েছে। পৃথিবীর ৩২টি আন্তর্জাতিক সংস্থা শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে।
সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন চিত্ত রঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন টয়েলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার প্রমুখ।