চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি :
চুয়াডাঙ্গায় এক স্কুল শিক্ষকের অকাল মৃত্যুতে শোক সইতে না পেরে রেললাইনে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তার বৃদ্ধা মা। রাজশাহী থেকে খুলনাগামী সাগরদাঁড়ী এক্সপ্রেস ট্রেনের কাছাকাছি ছুটে গেলেও ট্রেন চালকের দক্ষতা এবং স্থানীয় জনগণের দ্রুত প্রচেষ্টায় এ যাত্রায় তিনি রক্ষা পান।
জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের হাজরাহাটি এলাকার মৃত সালেহারের ছেলে মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। যিনি পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক ছিলেন। বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে স্ট্রোকজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
এদিকে ছেলের এমন আকস্মিক মৃত্যু সংবাদ শুনেই মা ছকিনা খাতুন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন এবং শোকে আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি ছুটে যান চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনের পাশে ফার্মপাড়া রেলগেটের কাছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাগরদাঁড়ী এক্সপ্রেস ট্রেনটি যখন দ্রুতগতিতে এগিয়ে আসছিল, ঠিক তখনই ছকিনা খাতুন রেললাইনের দিকে যেতে শুরু করেন। ওই মুহূর্তে কর্তব্যরত ট্রেনচালক পরিস্থিতি দ্রুত আঁচ করতে পেরে দক্ষতার সঙ্গে জরুরি ব্রেক করে ট্রেনটি থামিয়ে দেন। ট্রেন থামার সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় এলাকাবাসী এবং লোকজন দ্রুত ছুটে গিয়ে তাকে রেললাইন থেকে নিরাপদে উদ্ধার করেন।
বৃদ্ধা ছকিনা খাতুন বলেন, আমার ছেলে আজ সকালে স্টোক করে মারা গেছে। আমার এই পৃথিবীতে থাকার আর দরকার নেই, আমি এই পৃথিবীতে থাকতে চাই না। অনেক কষ্টের বিনিময়ে আমার ছেলেকে মানুষ করেছিলাম। আমার ছেলে হারানোর শোকে আমি রেললাইনে মাথা দিয়েছিলাম। তখন জনগণ এসে আমাকে টেনে ধরে নিয়ে আসে।
বর্তমানে বৃদ্ধা ছকিনা খাতুনকে স্থানীয়ভাবে দেখভাল করা হচ্ছে। শোকের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার জন্য পরিবারের সদস্যরা তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে পুলিশের (জিআরপি) উপপরিদর্শক জগদ্বীশ কুমার বলেন, শুনেছি ওই বৃদ্ধা নারীর সন্তান মারা গেছেন। শোকে তিনি সুইসাইড করতে রেললাইনে আসছিলেন। সকাল সোয়া ৯টার দিকে ট্রেনটি চুয়াডাঙ্গা স্টেশন ছেড়ে গেলে রেললাইনে মাথা দেওয়া এক নারীকে ড্রাইভার দেখতে পায়। তখন ট্রেনের গতি ধীরে ছিল। এ জন্য ট্রেনটি থামিয়ে দেন ড্রাইভার। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেন। তবে এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি 



















