নিজস্ব প্রতিবেদক :
১০ দিনের মধ্যে জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোকে দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
সোমবার (২১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ১৬তম দিনের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, জোর করে কিছু চাপিয়ে দিতে চায় না কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে আগামী ১০ দিনের মধ্যে সনদ বাস্তবায়ন করা যাবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর কোনও কিছু চাপিয়ে দিচ্ছে না। কোনও বিষয়ে দ্বি-মত থাকলে তা সনদে উল্লেখ করা হবে।
ড. আলী রীয়াজ বলেন, আমাদের হাতে আর ১০ দিন আছে। বিভিন্ন বিষয় ইতোমধ্যে আলোচনা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কমপক্ষে আটটি জায়গায় একমত হওয়া গেছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরও কিছু বিষয়ে একমত হতে হবে। এ সময়ে দ্বিমতের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। তবে বেশি বিলম্ব করা যাবে না।
ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি রাজনৈতিক দলসমূহের নেতাদের মুক্তিযুদ্ধ, অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থান, রক্তপাত এবং হাজারো প্রাণনাশের কথা বিবেচনায় রেখে সামনে অগ্রসর হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, সেখান থেকে পেছানোর কোনো উপায় নেই। এগুলোকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। সেই বিবেচনায় আমরা চাই, আগামী ১০ দিনের মতো সময় আছে। এর মধ্যে একটা ঐকমত্যে আসতে। হয়তো এক-দুদিন বিশেষ বিবেচনায় বাড়িয়ে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু আজসহ আমাদের হাতে থাকা ১০ দিনের মধ্যে বাকি বিষয়গুলোতে আমাদের সিদ্ধান্তে আসতে হবে।
তিনি বলেন, বলেন, সবকিছুর ঊর্ধ্বে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। আমরা মুক্তিযুদ্ধে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলাম। তার জন্য লাখ লাখ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। শুধু একদিনের সংগ্রাম, একটি যুদ্ধের মধ্য দিয়েই সেটি হয়নি। দীর্ঘদিনের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা সেই জায়গায় এসেছি, রাষ্ট্র অর্জন করেছি।
আলী রীয়াজ বলেন, পরবর্তী সময় ৫৩ বছর ধরে আমরা গণতন্ত্রের সংগ্রাম করেছি। আমরা চেষ্টা করেছি, একটি গণতান্ত্রিক জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার। সেই সংগ্রাম অব্যাহত আছে। তারই এক পর্যায়ে আমরা ভয়াবহ ফ্যাসিবাদের শাসনে নিপতিত হয়েছিলাম। সেখান থেকে সব রকম ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে সবাই মিলে সব মতপার্থক্য ভুলে একটা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা আজকের এই জায়গায় এসেছি।
আলোচনায় কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত আছেন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ অনেক রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেছেন।