Dhaka বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সদিচ্ছা থাকলে দুর্নীতি কমে আসবে : দুদক চেয়ারম্যান

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি : 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন বলেন, দুর্নীতি সেই পুরোনো আমলেও ছিল, অদূর ভবিষ্যতেও থাকবে। কিন্তু আমরা অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারব। এ জন্য দরকার হচ্ছে আমাদের সদিচ্ছা।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের আকাঙ্ক্ষা হলো একটা ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গঠিত হোক। সেই ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ যদি গঠিত হতে হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে দুর্নীতি একেবারে নির্মূল হবে এখনো সেটা মনে করি না। আমরা যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করছি, আমরা দুর্নীতিগ্রস্ত কিনা এটা যদি নিশ্চিত হতে পারেন যে না এ দপ্তরে যারা কাজ করছেন না তারা দুর্নীতি করছেন না তাহলে মনে করবেন যে বেশ খানিকটা অগ্রগতি হয়েছে।

দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, আজকে আমি আপনাদের সবাইকে বলব, আপনারা সবার আগে লক্ষ্য রাখবেন দুর্নীতি দমন কমিশনে আপনাদের সাথে আমরা যারা কাজ করছি আমরা দুর্নীতিগ্রস্ত কি-না। এটা যদি নিশ্চিত করতে পারেন তাহলে মনে করবেন যে বেশ খানিকটা অগ্রগতি হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা সেবাদাতা এবং সেবাগ্রহীতার কথা বলি, সংকটটা সেবাগ্রহীতাকে নিয়ে নয়, সেবাদাতাকে নিয়ে। সেবাগ্রহীতার প্রত্যাশা থাকতেই পারে। কিন্তু সেবাদাতা কতটা সদিচ্ছা রাখেন সেবা দিতে সেটাই হচ্ছে বিষয়। আমরা বিশ্বাস করি আমরা যদি ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই, তাহলে আমাদের ক্ষমতার প্রয়োগটা, ক্ষমতা আমরা যেটাকে অনুভব করি সেই প্রয়োগটা আমাদের কমিয়ে আনতে হবে। দুদক একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন দুদকের চেয়ারম্যান।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনে যারা কাজ করছেন- তারা যদি দুর্নীতিতে না জড়ান তাহলে দুর্নীতি অনেকাংশেই কমে আসবে। এই সমাজে একেবারেই দুর্নীতি নির্মূল হবে সেটা আমি বলছি না। দুর্নীতি পুরোনো আমলেও ছিল ভবিষ্যতে থাকবে। কিন্তু ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা হলে দুর্নীতি আমরা অনেকটাই কমিয়ে নিয়ে আসতে পারব।

দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত কিংবা বিভিন্ন সময়ে যে আন্দোলন হয়েছে বা হচ্ছে তার পেছনের কারণটা কী? কারণ হচ্ছে, সমাজে আমরা এক ধরনের অবিচার লালন করি। প্রতিটি অবিচারের কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা গেছে- এর মূলে রয়েছে দুর্নীতি।

তিনি বলেন, দুর্নীতির যে চলমান সংকট; এই সংকট কিন্তু সেবাগ্রহীতাকে নিয়ে নয়- সেবাদাতাকে নিয়ে। সেবাগ্রহিতার প্রত্যাশা থাকতেই পারে ভালো সেবা পাওয়ার। কিন্তু যারা সেবাদাতা তারা এক অর্থে আমলা। এখন সেই আমলারা যদি অপব্যবহার না করেন, ক্ষমতাকে দায়িত্ব মনে করেন- তাহলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। আর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলেই দুর্নীতি কমে আসবে। শুনানিতে দুদক চেয়ারম্যান বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের তা তাৎক্ষণিক নিষ্পত্তির নির্দেশনা দেন।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সারের সভাপতিত্বে গণশুনানি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুদকের কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মো. আলী আকবর আজিজি, দুদকের কমিশনার (অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) হাফিজ আহসান ফরিদ এবং দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ ও গণসচেতনতা) মো. আক্তার হোসেন। এছাড়াও কুমিল্লার জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান এবং সকল সরকারি দপ্তরের প্রধান, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সদিচ্ছা থাকলে দুর্নীতি কমে আসবে : দুদক চেয়ারম্যান

প্রকাশের সময় : ০৬:৩৬:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি : 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন বলেন, দুর্নীতি সেই পুরোনো আমলেও ছিল, অদূর ভবিষ্যতেও থাকবে। কিন্তু আমরা অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারব। এ জন্য দরকার হচ্ছে আমাদের সদিচ্ছা।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের আকাঙ্ক্ষা হলো একটা ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গঠিত হোক। সেই ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ যদি গঠিত হতে হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে দুর্নীতি একেবারে নির্মূল হবে এখনো সেটা মনে করি না। আমরা যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করছি, আমরা দুর্নীতিগ্রস্ত কিনা এটা যদি নিশ্চিত হতে পারেন যে না এ দপ্তরে যারা কাজ করছেন না তারা দুর্নীতি করছেন না তাহলে মনে করবেন যে বেশ খানিকটা অগ্রগতি হয়েছে।

দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, আজকে আমি আপনাদের সবাইকে বলব, আপনারা সবার আগে লক্ষ্য রাখবেন দুর্নীতি দমন কমিশনে আপনাদের সাথে আমরা যারা কাজ করছি আমরা দুর্নীতিগ্রস্ত কি-না। এটা যদি নিশ্চিত করতে পারেন তাহলে মনে করবেন যে বেশ খানিকটা অগ্রগতি হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা সেবাদাতা এবং সেবাগ্রহীতার কথা বলি, সংকটটা সেবাগ্রহীতাকে নিয়ে নয়, সেবাদাতাকে নিয়ে। সেবাগ্রহীতার প্রত্যাশা থাকতেই পারে। কিন্তু সেবাদাতা কতটা সদিচ্ছা রাখেন সেবা দিতে সেটাই হচ্ছে বিষয়। আমরা বিশ্বাস করি আমরা যদি ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই, তাহলে আমাদের ক্ষমতার প্রয়োগটা, ক্ষমতা আমরা যেটাকে অনুভব করি সেই প্রয়োগটা আমাদের কমিয়ে আনতে হবে। দুদক একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন দুদকের চেয়ারম্যান।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনে যারা কাজ করছেন- তারা যদি দুর্নীতিতে না জড়ান তাহলে দুর্নীতি অনেকাংশেই কমে আসবে। এই সমাজে একেবারেই দুর্নীতি নির্মূল হবে সেটা আমি বলছি না। দুর্নীতি পুরোনো আমলেও ছিল ভবিষ্যতে থাকবে। কিন্তু ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা হলে দুর্নীতি আমরা অনেকটাই কমিয়ে নিয়ে আসতে পারব।

দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত কিংবা বিভিন্ন সময়ে যে আন্দোলন হয়েছে বা হচ্ছে তার পেছনের কারণটা কী? কারণ হচ্ছে, সমাজে আমরা এক ধরনের অবিচার লালন করি। প্রতিটি অবিচারের কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা গেছে- এর মূলে রয়েছে দুর্নীতি।

তিনি বলেন, দুর্নীতির যে চলমান সংকট; এই সংকট কিন্তু সেবাগ্রহীতাকে নিয়ে নয়- সেবাদাতাকে নিয়ে। সেবাগ্রহিতার প্রত্যাশা থাকতেই পারে ভালো সেবা পাওয়ার। কিন্তু যারা সেবাদাতা তারা এক অর্থে আমলা। এখন সেই আমলারা যদি অপব্যবহার না করেন, ক্ষমতাকে দায়িত্ব মনে করেন- তাহলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। আর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলেই দুর্নীতি কমে আসবে। শুনানিতে দুদক চেয়ারম্যান বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের তা তাৎক্ষণিক নিষ্পত্তির নির্দেশনা দেন।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সারের সভাপতিত্বে গণশুনানি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুদকের কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মো. আলী আকবর আজিজি, দুদকের কমিশনার (অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) হাফিজ আহসান ফরিদ এবং দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ ও গণসচেতনতা) মো. আক্তার হোসেন। এছাড়াও কুমিল্লার জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান এবং সকল সরকারি দপ্তরের প্রধান, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।