Dhaka বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সড়ক পরিবহন আইনে কমছে জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিভিন্ন ধারায় আর্থিক জরিমানা কমিয়ে ‘সড়ক পরিবহন (সংশোধন) আইন, ২০২৪’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

বুধবার (১৩ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ১২টি ধারায় আর্থিক জরিমানা কমানোর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বিদ্যমান আইনের ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন, টার্মিনালে ফি, মিটার ছাড়া চালানো, ট্রাফিক সিগন্যাল না মানা, ওভার লোড, পরিবেশ দূষণ, পার্কিং ছাড়া গাড়ি থামানো, সাধারণ নির্দেশনা না মানাসহ ১২টি ধারায় আর্থিক জরিমানা কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন আইনের তিনটি ধারার অপরাধ অজামিনযোগ্য ছিল। এখন একটি ধারার অপরাধকে অজামিনযোগ্য রেখে অন্যগুলোকে জামিনযোগ্য করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, কারিগরি নির্দেশ না মানলে এতদিন তিন বছর জেল দেওয়ার বিধান ছিল। এই অপরাধের সাজা আগের মতো রাখা হলেও এটিকে অজামিনযোগ্য থেকে জামিনযোগ্য করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রহীনভাবে বা ওভারলোড করে গাড়ি চালানোর পর দুর্ঘটনা হলে সেটিকে অজামিনযোগ্য থেকে জামিনযোগ্য অপরাধ করা হয়েছে। এখন শুধু দুর্ঘটনায় মারা গেলে বা গুরুতর আহত হলে তা অজামিনযোগ্য অপরাধ হবে।

২০১৮ সালে প্রণীত এই আইন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর নেতৃত্বে সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে আইন সংশোধন করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রস্তুত সংক্রান্ত অপরাধ করলে এতদিন দুই বছর জেল ও ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান ছিল, সেটিকে কমিয়ে ২ বছর জেল ও ৩ লাখ টাকা করা হচ্ছে।

লাইসেন্স বাতিলের পরেও যানবহান চালালে বর্তমান আইনে ৩ মাস কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান ছিল। সেটি বদলে ৩ মাস জেল ও ১৫ হাজার জরিমানা টাকা করা হচ্ছে।

লাইসেন্স ছাড়া কনডাক্টরের দায়িত্ব পালন করলে এক মাস কারাদণ্ড, ৫ হাজার জরিমানার সাজা বহাল রাখা হয়েছে। এই ধারায় এখন কনডাক্টরের সঙ্গে সুপারভাইজর শব্দটি যোগ করা হয়েছে।

ভাড়ার চার্ট না দেখালে বা বেশি ভাড়া নিলে এতদিন ১ মাস জেল বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হতো। দুটো অপরাধ একসঙ্গে করলে এতদিন এই শাস্তি দেওয়া হতো। এখন চার্ট প্রদর্শন না করলে বা বেশি ভাড়া দাবি করলে এই সাজা দেওয়া হবে।

মিটার টেম্পারিং করলে ৬ মাস জেল, ৫০ হাজার টাকা হতো। এখন এই অপরাধের জন্য তিন মাসের কারাদণ্ড, ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে, সঙ্গে এক পয়েন্ট কাটা যাবে।

সরকার নির্ধারিত হারের থেকে টার্মিনাল চার্জ বেশি নিলে তা চাঁদাবাজি হিসেবে আমলে নিয়ে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

বর্তমান আইন অনুযায়ী ট্রাফিক সাইন ও সংকেত না মানলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হতো। এখন জরিমানার পরিমাণ কমিয়ে ২ হাজার টাকা করা হচ্ছে।

অতিরিক্ত ওজন বহন করলে ৩ বছর জেল ও ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হতো। এখন সেটিকে বদলে ১ বছর জেল, ১ লাখ টাকা জরিমানার বিধান করা হচ্ছে। এরসঙ্গে চালকের এক পয়েন্ট কাটা যাবে।

পরিবেশদূষণকারী মোটরযান চালালে ৩ মাস জেল ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হতো। এটিকে কমিয়ে ১ মাস জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করালে বর্তমান আইনে ৫ হাজার জরিমানার সঙ্গে চালকের ১ পয়েন্ট কাটা হতো। এটিকে বদলে শুধু এক হাজার টাকা জরিমানার বিধান করা হচ্ছে।

কী অবস্থায়, কীভাবে গাড়ি চালাতে হবে সেই নির্দেশনা অমান্য করলে এতদিন ৩ মাস জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান ছিল। সেটিকে বদলে ১ মাস জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান করা হচ্ছে।

মোটরযান মালিককে বিমা করতে হবে বলে একটি ধারা যোগ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিমা না করলে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

দেশের স্বার্থ রক্ষা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য বিএনপিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় আনা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই

সড়ক পরিবহন আইনে কমছে জরিমানা

প্রকাশের সময় : ০৮:৫০:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিভিন্ন ধারায় আর্থিক জরিমানা কমিয়ে ‘সড়ক পরিবহন (সংশোধন) আইন, ২০২৪’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

বুধবার (১৩ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ১২টি ধারায় আর্থিক জরিমানা কমানোর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বিদ্যমান আইনের ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন, টার্মিনালে ফি, মিটার ছাড়া চালানো, ট্রাফিক সিগন্যাল না মানা, ওভার লোড, পরিবেশ দূষণ, পার্কিং ছাড়া গাড়ি থামানো, সাধারণ নির্দেশনা না মানাসহ ১২টি ধারায় আর্থিক জরিমানা কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন আইনের তিনটি ধারার অপরাধ অজামিনযোগ্য ছিল। এখন একটি ধারার অপরাধকে অজামিনযোগ্য রেখে অন্যগুলোকে জামিনযোগ্য করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, কারিগরি নির্দেশ না মানলে এতদিন তিন বছর জেল দেওয়ার বিধান ছিল। এই অপরাধের সাজা আগের মতো রাখা হলেও এটিকে অজামিনযোগ্য থেকে জামিনযোগ্য করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রহীনভাবে বা ওভারলোড করে গাড়ি চালানোর পর দুর্ঘটনা হলে সেটিকে অজামিনযোগ্য থেকে জামিনযোগ্য অপরাধ করা হয়েছে। এখন শুধু দুর্ঘটনায় মারা গেলে বা গুরুতর আহত হলে তা অজামিনযোগ্য অপরাধ হবে।

২০১৮ সালে প্রণীত এই আইন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর নেতৃত্বে সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে আইন সংশোধন করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রস্তুত সংক্রান্ত অপরাধ করলে এতদিন দুই বছর জেল ও ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান ছিল, সেটিকে কমিয়ে ২ বছর জেল ও ৩ লাখ টাকা করা হচ্ছে।

লাইসেন্স বাতিলের পরেও যানবহান চালালে বর্তমান আইনে ৩ মাস কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান ছিল। সেটি বদলে ৩ মাস জেল ও ১৫ হাজার জরিমানা টাকা করা হচ্ছে।

লাইসেন্স ছাড়া কনডাক্টরের দায়িত্ব পালন করলে এক মাস কারাদণ্ড, ৫ হাজার জরিমানার সাজা বহাল রাখা হয়েছে। এই ধারায় এখন কনডাক্টরের সঙ্গে সুপারভাইজর শব্দটি যোগ করা হয়েছে।

ভাড়ার চার্ট না দেখালে বা বেশি ভাড়া নিলে এতদিন ১ মাস জেল বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হতো। দুটো অপরাধ একসঙ্গে করলে এতদিন এই শাস্তি দেওয়া হতো। এখন চার্ট প্রদর্শন না করলে বা বেশি ভাড়া দাবি করলে এই সাজা দেওয়া হবে।

মিটার টেম্পারিং করলে ৬ মাস জেল, ৫০ হাজার টাকা হতো। এখন এই অপরাধের জন্য তিন মাসের কারাদণ্ড, ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে, সঙ্গে এক পয়েন্ট কাটা যাবে।

সরকার নির্ধারিত হারের থেকে টার্মিনাল চার্জ বেশি নিলে তা চাঁদাবাজি হিসেবে আমলে নিয়ে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

বর্তমান আইন অনুযায়ী ট্রাফিক সাইন ও সংকেত না মানলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হতো। এখন জরিমানার পরিমাণ কমিয়ে ২ হাজার টাকা করা হচ্ছে।

অতিরিক্ত ওজন বহন করলে ৩ বছর জেল ও ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হতো। এখন সেটিকে বদলে ১ বছর জেল, ১ লাখ টাকা জরিমানার বিধান করা হচ্ছে। এরসঙ্গে চালকের এক পয়েন্ট কাটা যাবে।

পরিবেশদূষণকারী মোটরযান চালালে ৩ মাস জেল ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হতো। এটিকে কমিয়ে ১ মাস জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করালে বর্তমান আইনে ৫ হাজার জরিমানার সঙ্গে চালকের ১ পয়েন্ট কাটা হতো। এটিকে বদলে শুধু এক হাজার টাকা জরিমানার বিধান করা হচ্ছে।

কী অবস্থায়, কীভাবে গাড়ি চালাতে হবে সেই নির্দেশনা অমান্য করলে এতদিন ৩ মাস জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান ছিল। সেটিকে বদলে ১ মাস জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান করা হচ্ছে।

মোটরযান মালিককে বিমা করতে হবে বলে একটি ধারা যোগ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিমা না করলে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।