Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সড়ক অবরোধ করে শিক্ষকদের বিক্ষোভ, যানজটে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে টানা অষ্টম দিনের মতো আন্দোলন করছেন সারাদেশ থেকে আগত শিক্ষকরা। বিষয়টি নিয়ে এখনও কোনো সুরাহা না পেয়ে আজও রাস্তায় অবস্থান করছেন আন্দোলনকারীরা।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) জাতীয় ঈদগাহ ময়দান থেকে প্রেসক্লাব হয়ে পল্টন মোড় পর্যন্ত সড়কে অবস্থান করছেন শিক্ষকরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকে প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। সকাল ৮টা থেকে প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষকরা। সকাল ১০টার মধ্যে পল্টন মোড় থেকে হাইকোর্ট মোড়গামী রাস্তা অবরোধ করেন তারা। তবে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা প্রেস ক্লাবের অপরপ্রান্তের সড়ক। এরপর ওই সড়কও বন্ধ করে দেয় আন্দোলকারীরা।

খাদিজা বেগম রাজধানীর সায়দাবাদ এলাকার বাসিন্দা। অসুস্থ মেয়েকে ডাক্তার দেখাবেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে চলমান আন্দোলনের কারণে পল্টন মোড়ে বাস থেকে নামতে হয় মা-মেয়েকে। খাদিজা সেখান থেকে একটি রিকশা নিয়ে শাহবাগের উদ্দেশ্যে রওনা করেন। কিন্তু আন্দোলকারীরা তাদের রিকশা থামিয়ে দেন।

তিনি বলেন, অসুস্থ মেয়েকে হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে যাব। পল্টন মোড়ে বাস থেকে নেমে রিকশা নিয়ে অনেক অনুরোধ করে এ পর্যন্ত (প্রেস ক্লাবের সামনে) আসলাম। এখানে গাড়ি থামিয়ে দেয় আন্দোলনকারী। কত অনুরোধ করলাম, রিকশাটা ছেড়ে দিতে, ওরা দিল না। এখন এই অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে হেঁটে শাহবাগ পর্যন্ত যাওয়া সম্ভব?

আফজাল হোসেন নামের একজন জানান, স্টেডিয়াম মার্কেটের একটি দোকানে কাজ করি। এই যে আন্দোলন চলতেছে, এটার কারণে গত কয়েকটা দিন মৎস্য ভবন থেকে যানজটের কারণে হেঁটে বায়তুল মোকাররমে যেতে হচ্ছে। আন্দোলন রাস্তা বন্ধ করে করতে হবে কেন? রাস্তা বন্ধের কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষকরা প্রেস ক্লাবের সামনে মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) পর্যন্ত টানা আট দিন আন্দোলন চলমান রেখেছে। শিক্ষকের আন্দোলনের কারণে খাদিজা-আফজালদের মতো সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।

কিশোরগঞ্জের জাকারিয়া বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ সৈকত বলেন, আজকে নিয়ে আমরা আটদিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদের দাবি না মানলে আন্দোলন চলবে। আমরা রাস্তা ছাড়ব না। আমাদের দাবি মানতে হবে।

ফিরোজপুর মটবাড়ির তুশখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নূর নবী বলেন, আমাদের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে নেবেন। আমরা যৌক্তিক দাবি করছি। আমরা তো অন্যায় দাবি করছি না।

সড়ক অবরোধ করার কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। চাইলে সড়ক অবরোধ না করেও তো আন্দোলন করা যেতে পারে-এমন প্রশ্নের জবাবে সিরাজগঞ্জের বিয়ারা হাই স্কুলের শিক্ষক খায়রুল আলম বলেন, আমরা অনেক আগ থেকে বলে আসছি, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করতে হবে। কিন্তু আমাদের দাবি তো সরকার মানছে না। সেজন্য আমরা আন্দোলন করছি। আমাদের দাবি না মানলে আমরা রাস্তা অবরোধ করেই রাখব।

দেশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে গত সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ব্যানারে আন্দোলনে সরব রয়েছেন শিক্ষকরা। সারাদেশ থেকে কয়েক হাজার শিক্ষক-কর্মচারী এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার থেকে আন্দোলন শুরু করেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। আজ চলছে আন্দোলনের অষ্টম দিন। এদিনেও কোনো সমাধান পায়নি আন্দোলনকারীরা। তবে শিক্ষকরা বলছেন— দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।

এদিকে কর্মসূচিতে আসা অনেকেই ইতিমধ্যে অসুস্থ হয়ে গেছেন। শিক্ষকরা বলছেন, আজ শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ফোন করা হয়েছে। তারা আমাদের সবার কথা জানিয়েছেন। বিষয়টি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাওসার আহমেদ আমাদের জানিয়েছেন। তাদের দেওয়া তথ্যমতে— ২০০৮ সাল থেকে জেলায় জেলায় আন্দোলন চলছে। আশা করি প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে নেবেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

সড়ক অবরোধ করে শিক্ষকদের বিক্ষোভ, যানজটে ভোগান্তি

প্রকাশের সময় : ০৩:২৭:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে টানা অষ্টম দিনের মতো আন্দোলন করছেন সারাদেশ থেকে আগত শিক্ষকরা। বিষয়টি নিয়ে এখনও কোনো সুরাহা না পেয়ে আজও রাস্তায় অবস্থান করছেন আন্দোলনকারীরা।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) জাতীয় ঈদগাহ ময়দান থেকে প্রেসক্লাব হয়ে পল্টন মোড় পর্যন্ত সড়কে অবস্থান করছেন শিক্ষকরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকে প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। সকাল ৮টা থেকে প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষকরা। সকাল ১০টার মধ্যে পল্টন মোড় থেকে হাইকোর্ট মোড়গামী রাস্তা অবরোধ করেন তারা। তবে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা প্রেস ক্লাবের অপরপ্রান্তের সড়ক। এরপর ওই সড়কও বন্ধ করে দেয় আন্দোলকারীরা।

খাদিজা বেগম রাজধানীর সায়দাবাদ এলাকার বাসিন্দা। অসুস্থ মেয়েকে ডাক্তার দেখাবেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে চলমান আন্দোলনের কারণে পল্টন মোড়ে বাস থেকে নামতে হয় মা-মেয়েকে। খাদিজা সেখান থেকে একটি রিকশা নিয়ে শাহবাগের উদ্দেশ্যে রওনা করেন। কিন্তু আন্দোলকারীরা তাদের রিকশা থামিয়ে দেন।

তিনি বলেন, অসুস্থ মেয়েকে হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে যাব। পল্টন মোড়ে বাস থেকে নেমে রিকশা নিয়ে অনেক অনুরোধ করে এ পর্যন্ত (প্রেস ক্লাবের সামনে) আসলাম। এখানে গাড়ি থামিয়ে দেয় আন্দোলনকারী। কত অনুরোধ করলাম, রিকশাটা ছেড়ে দিতে, ওরা দিল না। এখন এই অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে হেঁটে শাহবাগ পর্যন্ত যাওয়া সম্ভব?

আফজাল হোসেন নামের একজন জানান, স্টেডিয়াম মার্কেটের একটি দোকানে কাজ করি। এই যে আন্দোলন চলতেছে, এটার কারণে গত কয়েকটা দিন মৎস্য ভবন থেকে যানজটের কারণে হেঁটে বায়তুল মোকাররমে যেতে হচ্ছে। আন্দোলন রাস্তা বন্ধ করে করতে হবে কেন? রাস্তা বন্ধের কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষকরা প্রেস ক্লাবের সামনে মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) পর্যন্ত টানা আট দিন আন্দোলন চলমান রেখেছে। শিক্ষকের আন্দোলনের কারণে খাদিজা-আফজালদের মতো সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।

কিশোরগঞ্জের জাকারিয়া বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ সৈকত বলেন, আজকে নিয়ে আমরা আটদিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদের দাবি না মানলে আন্দোলন চলবে। আমরা রাস্তা ছাড়ব না। আমাদের দাবি মানতে হবে।

ফিরোজপুর মটবাড়ির তুশখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নূর নবী বলেন, আমাদের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে নেবেন। আমরা যৌক্তিক দাবি করছি। আমরা তো অন্যায় দাবি করছি না।

সড়ক অবরোধ করার কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। চাইলে সড়ক অবরোধ না করেও তো আন্দোলন করা যেতে পারে-এমন প্রশ্নের জবাবে সিরাজগঞ্জের বিয়ারা হাই স্কুলের শিক্ষক খায়রুল আলম বলেন, আমরা অনেক আগ থেকে বলে আসছি, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করতে হবে। কিন্তু আমাদের দাবি তো সরকার মানছে না। সেজন্য আমরা আন্দোলন করছি। আমাদের দাবি না মানলে আমরা রাস্তা অবরোধ করেই রাখব।

দেশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে গত সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ব্যানারে আন্দোলনে সরব রয়েছেন শিক্ষকরা। সারাদেশ থেকে কয়েক হাজার শিক্ষক-কর্মচারী এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার থেকে আন্দোলন শুরু করেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। আজ চলছে আন্দোলনের অষ্টম দিন। এদিনেও কোনো সমাধান পায়নি আন্দোলনকারীরা। তবে শিক্ষকরা বলছেন— দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।

এদিকে কর্মসূচিতে আসা অনেকেই ইতিমধ্যে অসুস্থ হয়ে গেছেন। শিক্ষকরা বলছেন, আজ শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ফোন করা হয়েছে। তারা আমাদের সবার কথা জানিয়েছেন। বিষয়টি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাওসার আহমেদ আমাদের জানিয়েছেন। তাদের দেওয়া তথ্যমতে— ২০০৮ সাল থেকে জেলায় জেলায় আন্দোলন চলছে। আশা করি প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে নেবেন।