Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন, খালাস ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় নিহতের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরীর শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান ও মারুফ রেজার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। অপরদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সগিরার ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী, স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন ও অপর আসামি মন্টু মোরলকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

কারাদণ্ডের পাশাপাশি দুই আসামির ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও ছয় মাস তাদের কারাভোগ করতে হবে।

বুধবার (১৩ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইনের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

আসামি মন্টু মণ্ডল ছাড়া বাকি দুই আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে বাদীপক্ষ উচ্চ আদালতে যাবে বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ।

এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি একই আদালত রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে এ মামলায় রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন। রায় প্রস্তুত না হওয়ায় আদালত দুই দফায় রায় ঘোষণা পিছিয়ে দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় সগিরার স্বামীর করা মামলায় মারুফ রেজা ও আনাস মাহমুদকে আসামি করা হয়।

২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম আদালতে চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, সগিরা মোর্শেদের পরিবারের সঙ্গে আসামি শাহীনের বিভেদ তৈরি হয়েছিল। এছাড়া শাশুড়ি সগিরাকে অপছন্দ করতেন এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সগিরা-শাহীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। সম্বোধন করা নিয়েও ছিল পারিবারিক দ্বন্দ্ব।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, সগিরার কাজের মেয়েকে মারধর করেন আসামি ডা. হাসান আলী চৌধুরী। এ নিয়ে পারিবারিক বৈঠকে সগিরাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন শাহীন। আসামিরা নিজেদের বাসায় বসে সগিরাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ডা. হাসান আলী তার চেম্বারে অন্য আসামি মারুফ রেজার সঙ্গে ২৫ হাজার টাকায় হত্যার চুক্তি করেন।চুক্তি করা ২৫ হাজার টাকার মধ্যে মারুফ রেজাকে ১৫ হাজার টাকা দেন হাসান আলী। ১০ হাজার টাকা পরে দেওয়ার কথা বললেও আর দেননি।

২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত সগিরা মোর্শেদের ভাসুরসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর মধ্যদিয়ে দীর্ঘ ৩১ বছর পর এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হয়। এরপর গত বছরের ১১ জানুয়ারি মামলার বাদী ও সগিরা মোর্শেদের স্বামী আব্দুস সালাম চৌধুরী আদালতে সাক্ষ্য দেন। এর মধ্যদিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।এ মামলায় ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়ক চার লেন দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন 

সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন, খালাস ৩

প্রকাশের সময় : ১২:৫৪:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় নিহতের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরীর শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান ও মারুফ রেজার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। অপরদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সগিরার ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী, স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন ও অপর আসামি মন্টু মোরলকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

কারাদণ্ডের পাশাপাশি দুই আসামির ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও ছয় মাস তাদের কারাভোগ করতে হবে।

বুধবার (১৩ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইনের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

আসামি মন্টু মণ্ডল ছাড়া বাকি দুই আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে বাদীপক্ষ উচ্চ আদালতে যাবে বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ।

এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি একই আদালত রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে এ মামলায় রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন। রায় প্রস্তুত না হওয়ায় আদালত দুই দফায় রায় ঘোষণা পিছিয়ে দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় সগিরার স্বামীর করা মামলায় মারুফ রেজা ও আনাস মাহমুদকে আসামি করা হয়।

২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম আদালতে চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, সগিরা মোর্শেদের পরিবারের সঙ্গে আসামি শাহীনের বিভেদ তৈরি হয়েছিল। এছাড়া শাশুড়ি সগিরাকে অপছন্দ করতেন এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সগিরা-শাহীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। সম্বোধন করা নিয়েও ছিল পারিবারিক দ্বন্দ্ব।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, সগিরার কাজের মেয়েকে মারধর করেন আসামি ডা. হাসান আলী চৌধুরী। এ নিয়ে পারিবারিক বৈঠকে সগিরাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন শাহীন। আসামিরা নিজেদের বাসায় বসে সগিরাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ডা. হাসান আলী তার চেম্বারে অন্য আসামি মারুফ রেজার সঙ্গে ২৫ হাজার টাকায় হত্যার চুক্তি করেন।চুক্তি করা ২৫ হাজার টাকার মধ্যে মারুফ রেজাকে ১৫ হাজার টাকা দেন হাসান আলী। ১০ হাজার টাকা পরে দেওয়ার কথা বললেও আর দেননি।

২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত সগিরা মোর্শেদের ভাসুরসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর মধ্যদিয়ে দীর্ঘ ৩১ বছর পর এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হয়। এরপর গত বছরের ১১ জানুয়ারি মামলার বাদী ও সগিরা মোর্শেদের স্বামী আব্দুস সালাম চৌধুরী আদালতে সাক্ষ্য দেন। এর মধ্যদিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।এ মামলায় ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত।