Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংস্কৃতির চেতনাকে রুখে দেওয়ার চেষ্টা বারবার ব্যর্থ হয়েছে : রাষ্ট্রপতি

পাবনা জেলা প্রতিনিধি : 

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, বাংলার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে লোকসংস্কৃতির অমূল্য বহু উপাদান। এসব লোকসংস্কৃতি সঠিকভাবে লালন করা গেলে এগুলো বিশ্ব সংস্কৃতি ও সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ হয়ে উঠতে পারে। ধর্মের দোহাই দিয়ে অনেকেই বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতির চেতনাকে রুখে দেওয়ার চেষ্টা করেছে বারবার। যারা যারা চেষ্টা করেছে তারা বারবার ব্যর্থ হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম শুভ জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষ্যে ইছামতি নদীতে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান তিনি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেখানো পথে দেশ এগিয়ে যাবে। জননেত্রীর শেখ হাসিনার দেখানো পথে আমরা এগিয়ে যাবো অগ্রগতির দিকে, উন্নয়নের দিকে। দেশ ধাবিত হবে সব ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে। আমরা সেই অগ্রযাত্রায় শামিল হবো।

রাষ্ট্রপতি বলেন, নৌকা বাইচ আবহমান বাংলার সমৃদ্ধ সংস্কৃতির একটি অনন্য ঐতিহ্য। বাংলার প্রতিটি আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে লোকসংস্কৃতির অমূল্য বহ উপাদান। এসব লোকসংস্কৃতি সঠিকভাবে লালন করা গেলে এগুলো বিশ্ব সংস্কৃতি ও সাহিত্যেরও অমূল্য সম্পদ হয়ে উঠতে পারে। পাবনা জেলা বাঙালি লোকসংস্কৃতির উর্বর ক্ষেত্র। নৌকা বাইচ আমাদের এলাকার তেমনই একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব।

তিনি বলেন, বাঙালি বীরের জাতি। আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করে এদেশ স্বাধীন করেছি। তিনি বাংল্যর মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে আমৃত্যু লড়াই-সংগ্রাম করেছেন, জেল-জুলুম ও অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছেন। স্বাধীনতার পর দেশকে এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক বাঙালিকে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ শুরু করেছিলেন। সে লক্ষ্যে তিনি অল্প সময়ের মধ্যে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি সংবিধানও আমাদেরকে উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতক চক্রের ষড়যন্ত্রের কারণে স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথ্যয়ই আমরা জাতির পিতাকে হারাই। এটা ছিল জাতি হিসেবে আমাদের চরম ব্যর্থতা। কারণ আমরা তাকে ধরে রাখতে পারিনি। বঙ্গবন্ধু আমাদের সঙ্গে না থাকলেও তার নীতি-আদর্শই বাঙালির এগিয়ে যাওয়ার পথ-নির্দেশিকা ও অনুপ্রেরণা।

রাষ্ট্রপতি বলেন, করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশ অর্থনীতির নেতিবাচক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে এগিয়ে যাচ্ছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এপ্রেসওয়ে ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সব মেগা প্রকল্পের কাজ সময় মতো শেষ হয়েছে। এর সুফল পেতে শুরু করেছে জনগণ।

সাহাবুদ্দিন বলেন, পাবনার উন্নয়নে নতুন গতি এসেছে। ২০০৮ সালে পাবনায় মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলেও এতোদিনে কোনো হাসপাতাল ছিল না। আজ সকালেই পাবনার ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ কাজের শুভসূচনা করা হয়েছে। পাবনা থেকে ঢাকা রেল চলাচল এ মাসেই শুরুর কথা থাকলেও প্রশাসনিক ও কারিগরিককারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই তা শুরু হবে। এছাড়া, ইছামতি নদী সংস্কার ও পুনঃখননের একটি প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফার্স্ট লেডি ড. রেবেকা সুলতানা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সাঁথিয়া পৌরসভার মেয়র মাহবুবুল আলম বাচ্চু।

অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাস, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আ স ম আব্দুর রহিম পাকন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, বেড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট আসিফ শামস রঞ্জন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষ্যে পাবনার সাঁথিয়া পৌরসভার উদ্যোগে ইছামতি নদীতে গত ২২ সেপ্টেম্বর সপ্তাহব্যাপী নৌকা বাইচের উদ্বোধন করা হয়। বৃহস্পতিবার প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় বাগচী চ্যালেঞ্জার্স নামে নৌকা চ্যাম্পিয়ন ও শারিরভিটা এক্সপ্রেস নৌকা রানার্সআপ হয়। নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষের ভিড় জমে।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলার বহু কাঙিক্ষত পাবনা মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রিজের সুফল পাচ্ছে না সাত গ্রামের মানুষ

সংস্কৃতির চেতনাকে রুখে দেওয়ার চেষ্টা বারবার ব্যর্থ হয়েছে : রাষ্ট্রপতি

প্রকাশের সময় : ১১:৪৪:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

পাবনা জেলা প্রতিনিধি : 

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, বাংলার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে লোকসংস্কৃতির অমূল্য বহু উপাদান। এসব লোকসংস্কৃতি সঠিকভাবে লালন করা গেলে এগুলো বিশ্ব সংস্কৃতি ও সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ হয়ে উঠতে পারে। ধর্মের দোহাই দিয়ে অনেকেই বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতির চেতনাকে রুখে দেওয়ার চেষ্টা করেছে বারবার। যারা যারা চেষ্টা করেছে তারা বারবার ব্যর্থ হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম শুভ জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষ্যে ইছামতি নদীতে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান তিনি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেখানো পথে দেশ এগিয়ে যাবে। জননেত্রীর শেখ হাসিনার দেখানো পথে আমরা এগিয়ে যাবো অগ্রগতির দিকে, উন্নয়নের দিকে। দেশ ধাবিত হবে সব ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে। আমরা সেই অগ্রযাত্রায় শামিল হবো।

রাষ্ট্রপতি বলেন, নৌকা বাইচ আবহমান বাংলার সমৃদ্ধ সংস্কৃতির একটি অনন্য ঐতিহ্য। বাংলার প্রতিটি আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে লোকসংস্কৃতির অমূল্য বহ উপাদান। এসব লোকসংস্কৃতি সঠিকভাবে লালন করা গেলে এগুলো বিশ্ব সংস্কৃতি ও সাহিত্যেরও অমূল্য সম্পদ হয়ে উঠতে পারে। পাবনা জেলা বাঙালি লোকসংস্কৃতির উর্বর ক্ষেত্র। নৌকা বাইচ আমাদের এলাকার তেমনই একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব।

তিনি বলেন, বাঙালি বীরের জাতি। আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করে এদেশ স্বাধীন করেছি। তিনি বাংল্যর মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে আমৃত্যু লড়াই-সংগ্রাম করেছেন, জেল-জুলুম ও অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছেন। স্বাধীনতার পর দেশকে এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক বাঙালিকে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ শুরু করেছিলেন। সে লক্ষ্যে তিনি অল্প সময়ের মধ্যে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি সংবিধানও আমাদেরকে উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতক চক্রের ষড়যন্ত্রের কারণে স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথ্যয়ই আমরা জাতির পিতাকে হারাই। এটা ছিল জাতি হিসেবে আমাদের চরম ব্যর্থতা। কারণ আমরা তাকে ধরে রাখতে পারিনি। বঙ্গবন্ধু আমাদের সঙ্গে না থাকলেও তার নীতি-আদর্শই বাঙালির এগিয়ে যাওয়ার পথ-নির্দেশিকা ও অনুপ্রেরণা।

রাষ্ট্রপতি বলেন, করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশ অর্থনীতির নেতিবাচক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে এগিয়ে যাচ্ছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এপ্রেসওয়ে ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সব মেগা প্রকল্পের কাজ সময় মতো শেষ হয়েছে। এর সুফল পেতে শুরু করেছে জনগণ।

সাহাবুদ্দিন বলেন, পাবনার উন্নয়নে নতুন গতি এসেছে। ২০০৮ সালে পাবনায় মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলেও এতোদিনে কোনো হাসপাতাল ছিল না। আজ সকালেই পাবনার ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ কাজের শুভসূচনা করা হয়েছে। পাবনা থেকে ঢাকা রেল চলাচল এ মাসেই শুরুর কথা থাকলেও প্রশাসনিক ও কারিগরিককারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই তা শুরু হবে। এছাড়া, ইছামতি নদী সংস্কার ও পুনঃখননের একটি প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফার্স্ট লেডি ড. রেবেকা সুলতানা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সাঁথিয়া পৌরসভার মেয়র মাহবুবুল আলম বাচ্চু।

অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাস, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আ স ম আব্দুর রহিম পাকন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, বেড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট আসিফ শামস রঞ্জন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষ্যে পাবনার সাঁথিয়া পৌরসভার উদ্যোগে ইছামতি নদীতে গত ২২ সেপ্টেম্বর সপ্তাহব্যাপী নৌকা বাইচের উদ্বোধন করা হয়। বৃহস্পতিবার প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় বাগচী চ্যালেঞ্জার্স নামে নৌকা চ্যাম্পিয়ন ও শারিরভিটা এক্সপ্রেস নৌকা রানার্সআপ হয়। নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষের ভিড় জমে।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলার বহু কাঙিক্ষত পাবনা মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।