নিজস্ব প্রতিবেদক :
যেসব সংস্কারের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐক্যমত হবে, অন্তর্বর্তী সরকার ততটুকুই বাস্তবায়ন করতে চায় বলে জানিয়েছেন আইন বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনগুলোর দেওয়া প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশনগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নের পথে যাবে সরকার। এর জন্য বাস্তবায়ন নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর ইচ্ছার ওপর।
তিনি বলেন, প্রত্যাশিত সংস্কার করতে আগামী বছরের জুন মাস পর্যন্ত সময় লাগবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে। আগামী নির্বাচনের আগেই ট্রায়াল কোর্টে জুলাই গণহত্যার বিচার শুরু হবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আমাদের আশা আছে, বিশ্বাস আছে যেই গতিতে এগুচ্ছি ইনশাআল্লাহ সামনের নির্বাচনের আগে অন্তত ট্রায়াল কোর্টে বিচার কাজ সম্পন্ন করতে পারবো। এখানে কারো কোনো প্রকার গাফিলতি নাই, আপনাদের কাছে আমাদের প্রতিজ্ঞা অবশ্যই বাংলাদেশে যে নির্মম অমানবিক গণহত্যা হয়েছে সরকার তার বিচার করবে।
আসিফ নজরুল বলেন, আমি নিশ্চিতভাবে বলতে চাই, বিচারের কার্যক্রম অত্যন্ত সাবলীলভাবে চলছে। আমরা বিচারের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিচ্ছি— আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ওপর। এখানে রাষ্ট্রপক্ষের অংশগ্রহণ বেশি। ফলে আমরা এটাকে খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। যেই গতিতে মামলার তদন্ত কাজ চলছে, আশা করছি— আগামী মার্চ থেকে শুনানি শুরু হতে পারে।
আসিফ নজরুল আরো বলেন, সংস্কার নিয়ে আমাদের কর্ম পরিকল্পনার চারটা ধাপ ছিল। একটা হচ্ছে কমিশনগুলো তাদের রিপোর্ট প্রণয়ন করবে, তাদের সুপারিশ দেবে। দ্বিতীয় হচ্ছে, কমিশনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য আলোচনা হবে। এই লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়েছে। এই কমিশনের নেতৃত্বে আছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সংস্কার কমিশনের প্রধানরা এখানে সদস্য হিসেবে আছেন। ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা প্রয়োজনীয় আইন এবং নীতি প্রনয়ণের কাজ শুরু করবো। চতুর্থ ধাপে বাস্তবায়ন। আমাদের প্রত্যাশা আছে আমরা পুরো কাজটা সম্পূর্ণ করে যেতে পারবো। নির্ভর করছে, রাজনৈতিক দলগুলো কতটুকু সংস্কার করতে ঐকমত্য হতে পারে তার উপর।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ১৬ ডিসেম্বরের ভাষণে বলেছেন যে, আমরা ন্যূনতম কিছু সংস্কার সম্পূর্ণ করে যদি নির্বাচন করতে চাই তাহলে এই বছর হবে। যদি আমরা আরও কিছু সংস্কার প্রত্যাশিত মাত্রায় করতে চাই, তাহলে আরও কয়েক মাস লাগতে পারে, সেটা হচ্ছে সামনের বছর জুনের মধ্যে। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যখন আমরা আলাপ-আলোচনা করবো তখন দেখবো যে ন্যূনতম সংস্কার কোনগুলো আছে। এর বাইরে প্রত্যাশিত সংস্কার চিহ্নিত করার চেষ্টা করবো।
এ সময় পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ , প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।