নিজস্ব প্রতিবেদক :
সংস্কার ও নির্বাচনের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই, দু’টি একসাথে চলতে বাধা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার মাজারে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, সংস্কার চলবে, নির্বাচন চলবে। নির্বাচনের পর যে সরকারে আসবে তারাই এই সংস্কারগুলো এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আমরা আমাদের দলের পক্ষে থেকে পরিষ্কার করে বলতে পারি, প্রতিটি সংস্কার আমরা এগিয়ে নিয়ে যাবো। তাছাড়া সংস্কার ও নির্বাচন একসাথে চলতে কোনো বাধা নেই।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে সংস্কার কমিশনগুলো যে রিপোর্ট দিয়েছে, তা দ্রুত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ ঐকমত্য ছাড়া কোনো কিছু সম্ভব না।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দলের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে বলতে পারি, প্রতিটি সংস্কারকে এগিয়ে নিয়ে যাব।
অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত ৪টি সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে বিএনপি কোনো মন্তব্য করতে চায় না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। ‘দ্বিতীয় সরকার’ যেটা বলেছে এবং পরিকল্পনা করেছে যে রিপোর্টগুলো হাতে পাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা করবে। তারপরই সিদ্ধান্ত হবে। ঐকমত্য ছাড়া কোনোটিই গ্রহণযোগ্য হবে না।
‘অতি অল্প সময়ে নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে যাতে গণতন্ত্রে ফিরে যেতে পারি সেই ব্যবস্থা করা হোক’ উল্লেখ করেন সাবেক এই মন্ত্রী।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সিপাহি-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দায়িত্বে এসেছিলেন। তখন তিনি আধুনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণের জন্য খুব অল্প সময়ে সব ক্ষেত্রে সংস্কার করে কাজ শুরু করেন।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান প্রথম সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশে একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় শাসনের ব্যবস্থা করেছেন। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর বদ্ধ অর্থনীতিকে মুক্তবাজার অর্থনীতির পরিকল্পনা করেন। তার হাত ধরে কৃষি ও শিল্পে বিপ্লব ঘটেছে।
জিয়াউর রহমানের হাত ধরে জাতীয়তাবাদী দলের সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই মহান নেতার হাত ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সৃষ্টি হয়েছে। সেই দল সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে আজ বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের পর তার উত্তরসূরি খালেদা জিয়া এই দলের দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি দায়িত্ব নিয়ে দলকে আরও বেশি শক্তিশালী করেছেন। আজ তিনি অসুস্থ হয়ে লন্ডনে চিকিৎসাধীন। আমরা তার জন্য সবাই দোয়া করি। আজ তারই আরেক যোগ্য উত্তরসূরি তারেক রহমান হাসিনা-ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে নতুন নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, আমান উল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবির খোকন, আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ঢাকা উত্তর বিএনপি’র আহ্বায়ক আমিনুল হক, দক্ষিণ বিএনপি’র আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুসহ দলটির অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।