Dhaka রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংস্কারের অভাবে সড়কের বেহাল দশা, ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ

খুলনা জেলা প্রতিনিধি : 

খুলনার কয়রা উপজেলার দেউয়ারা গোপালের মোড় থেকে উপজেলা সদর পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। সাড়ে চার বছর ধরে চলা সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় খানাখন্দ আর কাদায় ভরা এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন হাজারো মানুষ। বর্ষার কাদা আর শুষ্ক মৌসুমের ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে স্থানীয়দের জীবন।

জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আওতাধীন কয়রা সদর থেকে ডুমুরিয়া উপজেলার বেতগ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৬৪ কিলোমিটার সড়ক পুনর্র্নিমাণ কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর। প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সড়ক যথাযথ মানে উন্নীত ও মজবুতকরণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় মেসার্স মোজাহার এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ধীরগতি ও নিম্নমানের কাজ করার অভিযোগ ওঠে। কিন্তু কোনো অভিযোগে কর্ণপাত না করে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ইচ্ছামতো সড়কের বিভিন্ন স্থানে এভাবে গর্ত খুঁড়ে ফেলে রাখে। এতে দুর্ভোগে পড়েন এ সড়কে চলাচলকারীরা।

কালনা গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির সময় রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গেলে কাদাপানিতে ভিজে পোশাক নষ্ট হয়ে চেনার উপায় থাকে না। আবার শুকনো মৌসুমেও ধুলায় অতিষ্ঠ হয়ে রাস্তায় চলাচলে দুর্ভোগ তৈরি হয়। রাস্তাটি সংস্কার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানাই।

কয়রা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম বলেন, সড়কের ওই অংশ দিয়ে যেসব শিক্ষার্থী আসছে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভ্যান ও অটোরিকশা অথবা মোটরসাইকেলে আসতে হয় শিক্ষার্থীদের। এ সময় অনেক শিক্ষার্থীর বিভিন্ন সমস্যা হয়।

শিক্ষার্থীরা জানায়, হেঁটে ১০ মিনিটের পথ বৃষ্টি হলে এক ঘণ্টায়ও পৌঁছানো যায় না। বাধ্য হয়ে ভ্যানে করে যেতে হচ্ছে। এতে মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা ঘটছে।

খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসান বলেন, উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় চলাচলে বাড়ছে দুর্ঘটনা। একবার এ সড়ক দিয়ে গেলে দ্বিতীয়বার যাওয়ার আর এনার্জি থাকে না। বারবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

কয়রা কপোতাক্ষ কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আ. ব. ম. আব্দুল মালেক বলেন, এ উপজেলার বাসিন্দাদের জেলা সদরে যোগাযোগের প্রধান সড়ক এটি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সাত কিলোমিটার খোঁড়া অবস্থায় রয়েছে। গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা হেঁটে চলাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। খানাখন্দে ভরা সড়কটি দ্রুত সংস্কার না হলে বর্ষা মৌসুমে দুর্ঘটনার প্রবণতা বেড়ে যাবে।

সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী তানিমুল হক বলেন, সড়কের কাজ শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তাদের মেয়াদ শেষ হয়েছে তবে নতুন করে মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে এবং অর্থছাড় বন্ধ থাকায় বাঁক সরলীকরণে ভূমি অধিগ্রহণ এখনো সম্ভব হয়নি। তবে সেই ইস্টিমেট হাতে পেয়েছি কিন্তু তাদের এখনো টাকা দিতে পারিনি। প্রতিষ্ঠানটি এর মধ্যে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অসমাপ্ত কাজ শেষ না করলে বরাদ্দের টাকা কেটে রাখা হবে।

কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্ল্যাহ আল বাকী বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সড়কটি সংস্কারের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নেতা হয়েছেন শুধু ভোটের জন্য নয়, পথ দেখানোর দায়িত্বও আপনার : উপদেষ্টা সাখাওয়াত

সংস্কারের অভাবে সড়কের বেহাল দশা, ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ

প্রকাশের সময় : ০১:৪৪:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

খুলনা জেলা প্রতিনিধি : 

খুলনার কয়রা উপজেলার দেউয়ারা গোপালের মোড় থেকে উপজেলা সদর পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। সাড়ে চার বছর ধরে চলা সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় খানাখন্দ আর কাদায় ভরা এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন হাজারো মানুষ। বর্ষার কাদা আর শুষ্ক মৌসুমের ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে স্থানীয়দের জীবন।

জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আওতাধীন কয়রা সদর থেকে ডুমুরিয়া উপজেলার বেতগ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৬৪ কিলোমিটার সড়ক পুনর্র্নিমাণ কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর। প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সড়ক যথাযথ মানে উন্নীত ও মজবুতকরণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় মেসার্স মোজাহার এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ধীরগতি ও নিম্নমানের কাজ করার অভিযোগ ওঠে। কিন্তু কোনো অভিযোগে কর্ণপাত না করে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ইচ্ছামতো সড়কের বিভিন্ন স্থানে এভাবে গর্ত খুঁড়ে ফেলে রাখে। এতে দুর্ভোগে পড়েন এ সড়কে চলাচলকারীরা।

কালনা গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির সময় রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গেলে কাদাপানিতে ভিজে পোশাক নষ্ট হয়ে চেনার উপায় থাকে না। আবার শুকনো মৌসুমেও ধুলায় অতিষ্ঠ হয়ে রাস্তায় চলাচলে দুর্ভোগ তৈরি হয়। রাস্তাটি সংস্কার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানাই।

কয়রা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম বলেন, সড়কের ওই অংশ দিয়ে যেসব শিক্ষার্থী আসছে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভ্যান ও অটোরিকশা অথবা মোটরসাইকেলে আসতে হয় শিক্ষার্থীদের। এ সময় অনেক শিক্ষার্থীর বিভিন্ন সমস্যা হয়।

শিক্ষার্থীরা জানায়, হেঁটে ১০ মিনিটের পথ বৃষ্টি হলে এক ঘণ্টায়ও পৌঁছানো যায় না। বাধ্য হয়ে ভ্যানে করে যেতে হচ্ছে। এতে মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা ঘটছে।

খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসান বলেন, উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় চলাচলে বাড়ছে দুর্ঘটনা। একবার এ সড়ক দিয়ে গেলে দ্বিতীয়বার যাওয়ার আর এনার্জি থাকে না। বারবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

কয়রা কপোতাক্ষ কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আ. ব. ম. আব্দুল মালেক বলেন, এ উপজেলার বাসিন্দাদের জেলা সদরে যোগাযোগের প্রধান সড়ক এটি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সাত কিলোমিটার খোঁড়া অবস্থায় রয়েছে। গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা হেঁটে চলাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। খানাখন্দে ভরা সড়কটি দ্রুত সংস্কার না হলে বর্ষা মৌসুমে দুর্ঘটনার প্রবণতা বেড়ে যাবে।

সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী তানিমুল হক বলেন, সড়কের কাজ শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তাদের মেয়াদ শেষ হয়েছে তবে নতুন করে মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে এবং অর্থছাড় বন্ধ থাকায় বাঁক সরলীকরণে ভূমি অধিগ্রহণ এখনো সম্ভব হয়নি। তবে সেই ইস্টিমেট হাতে পেয়েছি কিন্তু তাদের এখনো টাকা দিতে পারিনি। প্রতিষ্ঠানটি এর মধ্যে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অসমাপ্ত কাজ শেষ না করলে বরাদ্দের টাকা কেটে রাখা হবে।

কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্ল্যাহ আল বাকী বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সড়কটি সংস্কারের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।