মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি :
মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় সংস্কারের অভাবে শতাধিক কিলোমিটার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পাকা সড়কের বেহাল দশা। সড়কের বিটুমিন ও খোয়া উঠে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত আর খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায়ই স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থী ও বহনকারী যাত্রীদের টমটম, ইজিবাইক, অটোরিকশা উল্টে গিয়ে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর ইউনিয়নের মোকামবাজার-অফিসবাজার সড়কের স্থানে স্থানে ভেঙে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। একই ইউনিয়নের অফিসবাজার থেকে ভৈরববাজার সড়কটিও স্থানে স্থানে ভেঙ্গে গেছে। ওই দুই সড়ক দিয়ে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের চলাচল করতে হয়। পাশাপাশি এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত গাড়ি জেলা সদরের সাথে চলাচল করে থাকে। অপরদিকে মোস্তফাপুর ইউনিয়নের লামা জগন্নাথপুর থেকে আজমেরু পর্যন্ত সড়কটি দীঘদিন থেকে খানাখন্দ থাকায় স্বাভাবিক যানচলাচল ব্যহত হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ২০ হাজার মানুষের চলাচল রয়েছে। একই ভাবে সড়কে খানাখন্দ রয়েছে নাজিরাবাদ, আমতৈইল, কাগাবালা, কনকপুর, আখাইলকুড়া, কামালপুর, মনুমুখ, খলিলপুর, একাটুনা ও চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের উপজেলা সড়ক এবং ইউনিয়ন সড়ক গুলোতে।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সুত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় এলজিইডির উপজেলা সড়ক, ইউনিয়ন সড়ক ও গ্রামীণ সড়ক মিলে রয়েছে ৮৯৭ কিলোমিটার সড়ক। চলতি বছরেরর মে মাসের শেষ দিকে টানা ভারিবৃষ্টির কারণে অনেক জায়গায় সড়ক তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়কের। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের মধ্যে ১২৮ কিলোমিটার সড়ক মেরামতের জন্য একটি প্রস্থাবনা তৈরী করে উর্ধতন কর্তপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৩ কোটি টাকা।
ভাঙ্গা সড়কের বিষয়ে ভ্যানচালক রমিজ উদ্দিন জানান, ভাঙ্গাচোরা রাস্তায় মাল ভর্তি ভ্যান চালানো খুবই কষ্টকর। প্রায় সময়ই চাকার এসকেল ভেঙ্গে যায়। কোন যায়গায় রাস্তায় গর্তেপড়ে ভ্যান আটকে গেলে একা টেনে উঠানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। আশে পাশের কারো সহযোগীতা নিয়ে উঠে আসতে হয়।
সিএনজি চালক আব্দুর রহিম বলেন, ‘ভাঙ্গাচোরা রাস্তায় গাড়ি চালাতে গিয়ে প্রায়ই নাটবল্টু খুলে পড়ে যায়। ফলে সারা দিন গাড়ি চালিয়ে যা রোজগার করি, তার একটা অংশ মেরামতেই শেষ হয়ে যায়। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে সময় লাগায় জালানী খরচও বেড়ে যায়।
এ ব্যাপারে এলজিইডি’র মৌলভীবাজার সদর উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহেদ হোসেন বলেন, গেল ঈদুল আজহার আগে অতি বৃষ্টির কারণে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ১২৮ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা মেরামতের জন্য একটি প্রস্থাবনা তৈরি করে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ আসলে টেন্ডার পক্রিয়া শেষে কাজ শুরু হবে।