Dhaka শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংশোধিত আরপিও’র গেজেট প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভোট বন্ধের ক্ষমতা কমিয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের সদস্যদের আপত্তির মুখেও বিলটি পাস হয়।

সোমবার (১০ জুলাই) গণমাধ্যমে সংশোধিত আরপিও’র গেজেট এসে পৌঁছেছে।

এর আগে, মঙ্গলবার (৪ জুলাই) জাতীয় সংসদে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভোট বন্ধের ক্ষমতা কমিয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী বিল জাতীয় সংসদে পাস হয়। বিরোধী দলের সদস্যদের আপত্তির মুখেও বিলটি পাস হয়।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধনী) বিল-২০২৩’ উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিরোধী দলের বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নিষ্পত্তি হয়।

বিরোধী দল দাবি করেছিল, এ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে ওই দাবি নাকচ করে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ক্ষমতা খর্ব করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে অহেতুক বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।

আরপিও সংশোধনীর গেজেট প্রকাশ

আরপিওর সংশোধনী অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল ঘোষণা করার পর কোনো আসনের পুরো ফল স্থগিত বা বাতিল করতে পারবে না ইসি। যেসব ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ আসবে, শুধু সেসব (এক বা একাধিক) ভোটকেন্দ্রের ফল স্থগিত করতে পারবে। এরপর তদন্ত সাপেক্ষে ফলাফল বাতিল করে সেসব কেন্দ্রে নতুন নির্বাচন দিতে পারবে ইসি।

বর্তমান আরপিও অনুযায়ী, অনিয়ম বা বিরাজমান বিভিন্ন অপকর্মের কারণে নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে তারা আইনানুগ নির্বাচন করতে সক্ষম হবে না, তাহলে নির্বাচনের যেকোনো পর্যায়ে ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা রাখে ইসি। এখন এই ক্ষমতা সীমিত করে ইসিকে শুধু ভোটের দিন সংসদীয় আসনের (অনিয়মের কারণে) ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।

সংবিধান অনুযায়ী, আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন আভাস দিয়েছে, আগামী ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারি মাসের শুরুতে সংসদ নির্বাচন হবে। এর আগে আরপিওতে সংশোধনী আনা হলো।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯১(এ) ধারায় বলা আছে, নির্বাচন কমিশন যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে নির্বাচনে বলপ্রয়োগ, ভীতিপ্রদর্শন, চাপ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন বিরাজমান অপকর্মের কারণে যুক্তিযুক্ত, ন্যায়সংগত এবং আইনানুগভাবে নির্বাচন পরিচালনা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে না, তাহলে যেকোনো ভোটকেন্দ্র বা ক্ষেত্রমতো সম্পূর্ণ নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনের যেকোনো পর্যায়ে ভোটগ্রহণসহ নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ করতে পারবে।

এ ছাড়া সংশোধিত আরপিওতে নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা গণমাধ্যমকর্মী এবং পর্যবেক্ষকদের কাজে কেউ বাধা দিলে তাকে শাস্তির আওতায় আনার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এ ধরনের অপরাধে সর্বনিম্ন দুই থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আগের দিন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ক্ষুদ্রঋণ এবং টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির সরকারি সেবার বিল পরিশোধের সুযোগ দেয়া হয়েছে। আগে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সাত দিন আগে এসব ঋণ পরিশোধ করতে হতো।

এদিকে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছিলেন সংসদে পাস হওয়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী বিলের গেজেট পাস হলেই মতামত জানাবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান সিইসির

সংশোধিত আরপিও’র গেজেট প্রকাশ

প্রকাশের সময় : ০২:১৯:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভোট বন্ধের ক্ষমতা কমিয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের সদস্যদের আপত্তির মুখেও বিলটি পাস হয়।

সোমবার (১০ জুলাই) গণমাধ্যমে সংশোধিত আরপিও’র গেজেট এসে পৌঁছেছে।

এর আগে, মঙ্গলবার (৪ জুলাই) জাতীয় সংসদে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভোট বন্ধের ক্ষমতা কমিয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী বিল জাতীয় সংসদে পাস হয়। বিরোধী দলের সদস্যদের আপত্তির মুখেও বিলটি পাস হয়।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধনী) বিল-২০২৩’ উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিরোধী দলের বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নিষ্পত্তি হয়।

বিরোধী দল দাবি করেছিল, এ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে ওই দাবি নাকচ করে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ক্ষমতা খর্ব করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে অহেতুক বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।

আরপিও সংশোধনীর গেজেট প্রকাশ

আরপিওর সংশোধনী অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল ঘোষণা করার পর কোনো আসনের পুরো ফল স্থগিত বা বাতিল করতে পারবে না ইসি। যেসব ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ আসবে, শুধু সেসব (এক বা একাধিক) ভোটকেন্দ্রের ফল স্থগিত করতে পারবে। এরপর তদন্ত সাপেক্ষে ফলাফল বাতিল করে সেসব কেন্দ্রে নতুন নির্বাচন দিতে পারবে ইসি।

বর্তমান আরপিও অনুযায়ী, অনিয়ম বা বিরাজমান বিভিন্ন অপকর্মের কারণে নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে তারা আইনানুগ নির্বাচন করতে সক্ষম হবে না, তাহলে নির্বাচনের যেকোনো পর্যায়ে ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা রাখে ইসি। এখন এই ক্ষমতা সীমিত করে ইসিকে শুধু ভোটের দিন সংসদীয় আসনের (অনিয়মের কারণে) ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।

সংবিধান অনুযায়ী, আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন আভাস দিয়েছে, আগামী ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারি মাসের শুরুতে সংসদ নির্বাচন হবে। এর আগে আরপিওতে সংশোধনী আনা হলো।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯১(এ) ধারায় বলা আছে, নির্বাচন কমিশন যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে নির্বাচনে বলপ্রয়োগ, ভীতিপ্রদর্শন, চাপ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন বিরাজমান অপকর্মের কারণে যুক্তিযুক্ত, ন্যায়সংগত এবং আইনানুগভাবে নির্বাচন পরিচালনা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে না, তাহলে যেকোনো ভোটকেন্দ্র বা ক্ষেত্রমতো সম্পূর্ণ নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনের যেকোনো পর্যায়ে ভোটগ্রহণসহ নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ করতে পারবে।

এ ছাড়া সংশোধিত আরপিওতে নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা গণমাধ্যমকর্মী এবং পর্যবেক্ষকদের কাজে কেউ বাধা দিলে তাকে শাস্তির আওতায় আনার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এ ধরনের অপরাধে সর্বনিম্ন দুই থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আগের দিন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ক্ষুদ্রঋণ এবং টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির সরকারি সেবার বিল পরিশোধের সুযোগ দেয়া হয়েছে। আগে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সাত দিন আগে এসব ঋণ পরিশোধ করতে হতো।

এদিকে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছিলেন সংসদে পাস হওয়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী বিলের গেজেট পাস হলেই মতামত জানাবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।