Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংযোগ সড়ক না থাকায় পড়ে আছে সেতু

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে হরিনাথপুর সড়কের ইছামতি নদী থেকে বেরিয়ে আসা খালের উপর দিয়ে চার বছর আগে পাঁচগাছি সেতুর নির্মাণের জন্যে ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে দরপত্র আহবান করে কাজিপুর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়। কাজটি পান সিরাজগঞ্জ শহরের এসএস রোডের মেসার্স রফিকুল ইসলাম খান। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় দুই কোটি ৪৩ লক্ষ ৬১ হাজার ৯৭৩ টাকা। ওই বছরের পাঁচ মার্চ নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। ২৫ মিটার গার্ডার সেতুটির নির্মাণ শেষ হবার কথা ছিলো ২০২০ সালের ১৯ জুলাই। কিন্তু ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে চার বছর পেরিয়ে গেলেও ওই সেতুটির কোন গতি হয়নি। মূল কাঠামো নির্মাণ করা হলেও গত এক বছর যাবৎ সংযোগ সড়কহীন অবস্থায় রয়েছে সেতুটি। এদিকে প্রতিদিন ওই রাস্তায় চলাচলকারী কয়েক হাজার মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

কাজিপুর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়সূত্রে জানা গেছে, করোনার কারণে ঠিকাদার ওই কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে নেন পাঁচ মাস। কিন্তু সেই সময়েও কাজ শেষ হয়নি। এরপর একাধিকার সময় বাড়িয়ে নিয়েছে। সর্বশেষ গত বছর ২০২২ সালে সেতুর মূল কাজ শেষ হয়। দুইপাশের সংযোগ সড়ক ও সেতুর রেলিং নির্মাণ কাজ বাকি থাকে। সংযোগ সড়কের জন্যে সেতুটি কাজে আসছে না মর্মে স্থানীয় পর্যায়ে বসে সংযোগের জন্যে জায়গার ব্যবস্থাও করা হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে গত এক বছর যাবৎ সেতুটি সেভাবেই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এরইমধ্যে ওই রাস্তাটির সংস্কারকাজ শুরু হয় গত বছর। সে কাজটিও কয়েকদিন পূর্বে শেষ হয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পুরো ছয় কিলোমিটার রাস্তা যোগাযোগের জন্যে প্রস্তুত। রাস্তার কার্পেটিংও শেষ হয়েছে। এরপরেও মাঝারি বা ভারী কোন যানবাহন ওই রাস্তায় চলাচল করতে পারছে না ওই সেতুটির কারণে। প্রায়শই ঘটছে সেখানে দুর্ঘটনা।

স্থানীয় সবজি ব্যবসায়ী সিরাজ মিয়া জানান, আমরা হরিনাথপুর, স্থলবাড়ী, রৌহাবাড়ী থেকে সবজি কিনে ট্রাকে করে সোনামুখী বাজারে আনতে পারিনা শুধু ওই সেতুটির কারণে। এতে করে খরচাও বেড়ে যায় আমাদের। অবলিম্বে সেতুটি চালু করা হোক।

সোনামুখী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী খান বলেন, ওই ঠিকাদার কথা রাখেনি। মূল রাস্তার সাথে সেতুর কানেক্টিং জায়গার কোন ব্যবস্থা না রেখেই সেতুর কাজ শুরু হয়েছিল। ফলে সেতুর জন্যে আর জায়গা পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে আমরা বসে একটা ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন সেপথে যায়নি।

সোনামুখী ১নং ওয়ার্ডের (পাঁচগাছি গ্রামের) ইউপি সদস্য মামুনুর রশিদ বলেন, চারবছর যাবৎ ওই রাস্তায় কষ্টে চলাচল করছি। সেতুর নির্মাণও শেষ হলো। কিন্তু তা আমাদের কোন কাজেই আসছে না। জনগণ নানাকথা আমাকেই বলে। অবিলম্বে সেতুটির চালু করার দাবী জানাচ্ছি।

কাজিপুর উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসাইন জানান, ঠিকাদার অনেক সুবিধা নিয়েছেন। অনেকবার সময় নিয়েছেন। কিন্তু এখনা অবধি তিনি সেতুটি চালু করতে পারছেন না। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

সংযোগ সড়ক না থাকায় পড়ে আছে সেতু

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৫:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে হরিনাথপুর সড়কের ইছামতি নদী থেকে বেরিয়ে আসা খালের উপর দিয়ে চার বছর আগে পাঁচগাছি সেতুর নির্মাণের জন্যে ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে দরপত্র আহবান করে কাজিপুর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়। কাজটি পান সিরাজগঞ্জ শহরের এসএস রোডের মেসার্স রফিকুল ইসলাম খান। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় দুই কোটি ৪৩ লক্ষ ৬১ হাজার ৯৭৩ টাকা। ওই বছরের পাঁচ মার্চ নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। ২৫ মিটার গার্ডার সেতুটির নির্মাণ শেষ হবার কথা ছিলো ২০২০ সালের ১৯ জুলাই। কিন্তু ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে চার বছর পেরিয়ে গেলেও ওই সেতুটির কোন গতি হয়নি। মূল কাঠামো নির্মাণ করা হলেও গত এক বছর যাবৎ সংযোগ সড়কহীন অবস্থায় রয়েছে সেতুটি। এদিকে প্রতিদিন ওই রাস্তায় চলাচলকারী কয়েক হাজার মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

কাজিপুর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়সূত্রে জানা গেছে, করোনার কারণে ঠিকাদার ওই কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে নেন পাঁচ মাস। কিন্তু সেই সময়েও কাজ শেষ হয়নি। এরপর একাধিকার সময় বাড়িয়ে নিয়েছে। সর্বশেষ গত বছর ২০২২ সালে সেতুর মূল কাজ শেষ হয়। দুইপাশের সংযোগ সড়ক ও সেতুর রেলিং নির্মাণ কাজ বাকি থাকে। সংযোগ সড়কের জন্যে সেতুটি কাজে আসছে না মর্মে স্থানীয় পর্যায়ে বসে সংযোগের জন্যে জায়গার ব্যবস্থাও করা হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে গত এক বছর যাবৎ সেতুটি সেভাবেই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এরইমধ্যে ওই রাস্তাটির সংস্কারকাজ শুরু হয় গত বছর। সে কাজটিও কয়েকদিন পূর্বে শেষ হয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পুরো ছয় কিলোমিটার রাস্তা যোগাযোগের জন্যে প্রস্তুত। রাস্তার কার্পেটিংও শেষ হয়েছে। এরপরেও মাঝারি বা ভারী কোন যানবাহন ওই রাস্তায় চলাচল করতে পারছে না ওই সেতুটির কারণে। প্রায়শই ঘটছে সেখানে দুর্ঘটনা।

স্থানীয় সবজি ব্যবসায়ী সিরাজ মিয়া জানান, আমরা হরিনাথপুর, স্থলবাড়ী, রৌহাবাড়ী থেকে সবজি কিনে ট্রাকে করে সোনামুখী বাজারে আনতে পারিনা শুধু ওই সেতুটির কারণে। এতে করে খরচাও বেড়ে যায় আমাদের। অবলিম্বে সেতুটি চালু করা হোক।

সোনামুখী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী খান বলেন, ওই ঠিকাদার কথা রাখেনি। মূল রাস্তার সাথে সেতুর কানেক্টিং জায়গার কোন ব্যবস্থা না রেখেই সেতুর কাজ শুরু হয়েছিল। ফলে সেতুর জন্যে আর জায়গা পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে আমরা বসে একটা ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন সেপথে যায়নি।

সোনামুখী ১নং ওয়ার্ডের (পাঁচগাছি গ্রামের) ইউপি সদস্য মামুনুর রশিদ বলেন, চারবছর যাবৎ ওই রাস্তায় কষ্টে চলাচল করছি। সেতুর নির্মাণও শেষ হলো। কিন্তু তা আমাদের কোন কাজেই আসছে না। জনগণ নানাকথা আমাকেই বলে। অবিলম্বে সেতুটির চালু করার দাবী জানাচ্ছি।

কাজিপুর উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসাইন জানান, ঠিকাদার অনেক সুবিধা নিয়েছেন। অনেকবার সময় নিয়েছেন। কিন্তু এখনা অবধি তিনি সেতুটি চালু করতে পারছেন না। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।