Dhaka রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবিধানকে শেখ হাসিনার গার্বেজ ছাড়া কিছু মনে করি না : মাহমুদুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বর্তমান সংবিধানকে শেখ হাসিনার গার্বেজ ছাড়া আর কিছু মনে করেন দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংস্কার সংঘ আয়োজিত ‘সংবিধান সংস্কারের যাত্রায় সেকেন্ড রিপাবলিকের খোঁজে’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে যে সংবিধান আছে সেটি কি আদৌ সংবিধান? আমি মনে করি, বাংলাদেশে এখন যেটা আছে সেটা সংবিধান নামে শেখ হাসিনার গার্বেজ। শেখ হাসিনার গার্বেজ ছাড়া আমি এই সংবিধানকে আর কিছু মনে করি না।

মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘কারণ এই সংবিধানকে বিভিন্নভাবে বিকৃত করে এটিকে একটি ফ্যাসিবাদী দলিলে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এখন এই ফ্যাসিবাদী দলিল থেকে কোনো দিনও একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। ’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল প্রধানতম গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য, যখন পাকিস্তানি শাসকরা বাংলাদেশের জনগণের অভিপ্রায়কে অস্বীকার করল এবং সেটাকে কেন্দ্র করেই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। সেই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। কাজেই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে একটি স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা তৈরি করেছিলেন এবং ওই অবস্থায় সংবিধানকে রেখে গিয়েছিলেন। তারপর সংবিধানের আরও সংশোধন হয়েছে। জিয়াউর রহমান সাহেব এসে সেটাতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এনেছেন। তারপরে আল্লাহর প্রতি আস্থা এনেছিলেন, যেটাকে পরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই জনগণের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। জনগণের কোনো রেফারেন্ডম নেওয়া হয়নি এই সংবিধানের ব্যাপারে।’

তিনি বলেন, যে দলিলে জনগণের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি, জনগণের কোনো রেফারেন্ডম নেওয়া হয়নি, বর্তমান সংবিধান এমনভাবে করা হয়েছে, যে এই সংবিধান সংশোধন করতে রেফারেন্ডমের যে অংশ ছিল সেটাকে পর্যন্ত বাদ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, এখন যে গার্বেজটি আছে সংবিধানের নামে সেখানে জনগণের কোনো অধিকার নেই। কাজেই আমি মনে করি এই সংবিধানের মাধ্যমে, এই সংবিধানকে রেখে কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ সম্ভব নয়। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। কাজেই এই সংবিধান সংশোধন কিংবা পরিবর্তন যেটাই করুক না কেন এটি একটি নির্বাচিত পার্লামেন্ট ঠিক করবে। কিন্তু অবশ্যই এটাকে সংশোধন কিংবা পরিবর্তন জরুরি।

বাংলাদেশের সংবিধানে জনগণের মত প্রকাশ হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, দেশের সাংবিধানিক যাত্রার পর থেকে একে নানাভাবে বিকৃত করা হয়েছে। এর সূচনা স্বৈরাচার রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুরের হাত ধরে। ৭৫ এর সংশোধনীর মাধ্যমে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। যে গণতন্ত্রকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। শেখ মুজিবুর রহমান সেই গণতন্ত্রকেই ধ্বংস করেছিলেন। তিনি ওই অবস্থাতেই সংবিধান রেখে গিয়েছিলেন। ওই সংবিধান পরে একাধিকবার সংশোধন হয়েছে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই জনগণের সম্মতি নেওয়া হয়নি। বর্তমান সংবিধানে জনগণের সম্মতি নেওয়ার যে বিষয় ছিল তা পর্যন্ত বাদ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ সংবিধান নামে এই আবর্জনায় জনগণের কোনো অধিকারই নাই। তাই এই সংবিধান সংশোধন কিংবা পরিবর্তন করতে হবে। কিন্তু তা নির্বাচিত সরকারকে করতে হবে। এই সরকার একটি রূপরেখা দিয়ে যাবে।

বর্তমান সংবিধান জনগণের ক্ষমতার বাধা উল্লেখ করে ফ্যাসিবাদবিরোধী এই সম্পাদক বলেন, এই সংবিধান দিয়ে গণতান্ত্রিক বা নাগরিকদের পক্ষে যায় এমন কোনো রাষ্ট্র বিনির্মাণ সম্ভব নয়। কাজেই রাষ্ট্র নির্মাণে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করা। আমি আশা করবো আগামীর সংবিধানে বাংলাদেশের মানুষের যে প্রত্যাশা তার প্রতিফলন ঘটবে।

কলামিস্ট ও শিক্ষাবিদ ড. আবদুল ওয়াহিদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আবদুল লতিফ মাসুম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিভাগের শিক্ষক ড. তারেক ফজলে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বিমানের ফ্লাইটে ফের ত্রুটি, শারজাহ না গিয়ে ফিরে এলো ঢাকায়

সংবিধানকে শেখ হাসিনার গার্বেজ ছাড়া কিছু মনে করি না : মাহমুদুর রহমান

প্রকাশের সময় : ০৭:১৩:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বর্তমান সংবিধানকে শেখ হাসিনার গার্বেজ ছাড়া আর কিছু মনে করেন দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংস্কার সংঘ আয়োজিত ‘সংবিধান সংস্কারের যাত্রায় সেকেন্ড রিপাবলিকের খোঁজে’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে যে সংবিধান আছে সেটি কি আদৌ সংবিধান? আমি মনে করি, বাংলাদেশে এখন যেটা আছে সেটা সংবিধান নামে শেখ হাসিনার গার্বেজ। শেখ হাসিনার গার্বেজ ছাড়া আমি এই সংবিধানকে আর কিছু মনে করি না।

মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘কারণ এই সংবিধানকে বিভিন্নভাবে বিকৃত করে এটিকে একটি ফ্যাসিবাদী দলিলে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এখন এই ফ্যাসিবাদী দলিল থেকে কোনো দিনও একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। ’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল প্রধানতম গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য, যখন পাকিস্তানি শাসকরা বাংলাদেশের জনগণের অভিপ্রায়কে অস্বীকার করল এবং সেটাকে কেন্দ্র করেই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। সেই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। কাজেই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে একটি স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা তৈরি করেছিলেন এবং ওই অবস্থায় সংবিধানকে রেখে গিয়েছিলেন। তারপর সংবিধানের আরও সংশোধন হয়েছে। জিয়াউর রহমান সাহেব এসে সেটাতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এনেছেন। তারপরে আল্লাহর প্রতি আস্থা এনেছিলেন, যেটাকে পরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই জনগণের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। জনগণের কোনো রেফারেন্ডম নেওয়া হয়নি এই সংবিধানের ব্যাপারে।’

তিনি বলেন, যে দলিলে জনগণের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি, জনগণের কোনো রেফারেন্ডম নেওয়া হয়নি, বর্তমান সংবিধান এমনভাবে করা হয়েছে, যে এই সংবিধান সংশোধন করতে রেফারেন্ডমের যে অংশ ছিল সেটাকে পর্যন্ত বাদ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, এখন যে গার্বেজটি আছে সংবিধানের নামে সেখানে জনগণের কোনো অধিকার নেই। কাজেই আমি মনে করি এই সংবিধানের মাধ্যমে, এই সংবিধানকে রেখে কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ সম্ভব নয়। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। কাজেই এই সংবিধান সংশোধন কিংবা পরিবর্তন যেটাই করুক না কেন এটি একটি নির্বাচিত পার্লামেন্ট ঠিক করবে। কিন্তু অবশ্যই এটাকে সংশোধন কিংবা পরিবর্তন জরুরি।

বাংলাদেশের সংবিধানে জনগণের মত প্রকাশ হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, দেশের সাংবিধানিক যাত্রার পর থেকে একে নানাভাবে বিকৃত করা হয়েছে। এর সূচনা স্বৈরাচার রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুরের হাত ধরে। ৭৫ এর সংশোধনীর মাধ্যমে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। যে গণতন্ত্রকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। শেখ মুজিবুর রহমান সেই গণতন্ত্রকেই ধ্বংস করেছিলেন। তিনি ওই অবস্থাতেই সংবিধান রেখে গিয়েছিলেন। ওই সংবিধান পরে একাধিকবার সংশোধন হয়েছে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই জনগণের সম্মতি নেওয়া হয়নি। বর্তমান সংবিধানে জনগণের সম্মতি নেওয়ার যে বিষয় ছিল তা পর্যন্ত বাদ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ সংবিধান নামে এই আবর্জনায় জনগণের কোনো অধিকারই নাই। তাই এই সংবিধান সংশোধন কিংবা পরিবর্তন করতে হবে। কিন্তু তা নির্বাচিত সরকারকে করতে হবে। এই সরকার একটি রূপরেখা দিয়ে যাবে।

বর্তমান সংবিধান জনগণের ক্ষমতার বাধা উল্লেখ করে ফ্যাসিবাদবিরোধী এই সম্পাদক বলেন, এই সংবিধান দিয়ে গণতান্ত্রিক বা নাগরিকদের পক্ষে যায় এমন কোনো রাষ্ট্র বিনির্মাণ সম্ভব নয়। কাজেই রাষ্ট্র নির্মাণে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করা। আমি আশা করবো আগামীর সংবিধানে বাংলাদেশের মানুষের যে প্রত্যাশা তার প্রতিফলন ঘটবে।

কলামিস্ট ও শিক্ষাবিদ ড. আবদুল ওয়াহিদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আবদুল লতিফ মাসুম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিভাগের শিক্ষক ড. তারেক ফজলে।