Dhaka সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্রীলঙ্কাকে ১৪৬ রানের বড় ব্যবধানে হারালো যুবারা

স্পোর্টস ডেস্ক : 

তিন ম্যাচের মধ্যে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিলেন ছন্দে থাকা জাওয়াদ আবরার। যুব ওয়ানডেতে বাংলাদেশের চতুর্থ ওপেনার হিসেবে একাধিক সেঞ্চুরির কীর্তি গড়লেন তিনি। তার অসাধারণ শতক ছাড়াও রিজান হোসেন ফিফটি করে খেললেন দারুণ ইনিংস। তাদের নৈপুণ্যে বিদেশের মাটিতে সর্বোচ্চ দলীয় পুঁজির রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। এরপর বোলাররা জ্বলে ওঠায় একপেশে লড়াইয়ে বিশাল জয় তুলে নিল তারা।

শনিবার (৩ মে) কলম্বোতে চতুর্থ যুব ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ১৪৬ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টস জিতে আগে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ৩৩৬ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে তারা। জবাবে ধুঁকতে ধুঁকতে ৬৮ বল বাকি থাকতে মাত্র ১৯০ রানে গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা। ফলে টানা তৃতীয় জয়ে ছয় ম্যাচের সিরিজে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে সফরকারীরা।

দেশের বাইরে যুব ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ এটি। দেশের মাঠেও এর চেয়ে বড় ইনিংস আছে স্রেফ একটি। ২০১৯ সালে লঙ্কানদের বিপক্ষে চট্টগ্রামে রান ছিল ৩৪০।

সেবার সেঞ্চুরি করেছিলেন তাওহিদ হৃদয়, এবারের সেঞ্চুরিয়ান জাওয়াদ আবরার। গত সোমবার ১০৬ বলে ১৩০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন এই ওপেনার। এবার তার ব্যাট থেকে আসে ১১৫ বলে ১১৩ রান।

যুব ওয়ানডেতে একাধিক সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের চতুর্থ ওপেনার তিনি। এছাড়া চারে নেমে ৭৭ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলেন রিজান হোসেন। শেষ দিকে দারুণ ক্যামিও খেলেন কয়েকজন। সেই রান তাড়ায় শুরু থেকেই মুখ থুবড়ে পড়ে লঙ্কান ব্যাটিং। ধুঁকতে ধুঁকতে তারা শেষ পর্যন্ত করতে পারে ১৯০ রান।

কলম্বো ক্রিকেট ক্লাব মাঠে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ম্যাচে প্রথম বলেই চার দিয়ে শুরু করেন জাওয়াদ, তৃতীয় বলে বল বাউন্ডারিতে পাঠান তিনি আরেকবার। ম্যাচের প্রথম ছক্কাটি মারেন চতুর্থ ওভারেই।

আরেক প্রান্তে কালাম সিদ্দিকির শুরুটাও ছিল ভালো। দুই ওপেনার মিলে প্রথম সাত ওভারে ছয়টি চার ও এক ছক্কায় রান তোলেন ৪৯।

২৪ বলে ১৯ রান করে কালামের বিদায়ে ভাঙে শুরুর জুটি। দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক আজিজুল হাকিমের সঙ্গে জাওয়াদের জুটিতে আসে ৩৮ রান। আজিজুল রান আউটে ফেরেন ৩১ বলে ২৩ রান করে। ম্যাচের সবচেয়ে বড় জুটি আসে এরপরই। জাওয়াদ ও রিজান হোসেন চতুর্থ উইকেটে যোগ করেন ১৩৫ রান।

জাওয়াদ ফিফটি পূর্ণ করেন ৪৫ বলে। এরপর কিছুটা সতর্ক ব্যাটিং ইনিংস বড় করায় মন দেন তিনি। রিজান কিছুটা সাবধানী ব্যাটিংয়ে শুরুর পর আত্মবিশ্বাস পেয়ে যান সানুজা নিন্দুওয়ারাকে ছক্কা মেরে। পরে টানা দুটি ছক্কা মারেন তিনি লেগ স্পিনার হিমাল রাভিহানসাকে।

দুজনের ব্যাটে দ্রুত বাড়তে থাকে রান। রিজান যুব ওয়ানডেতে প্রথম ফিফটির স্বাদ পান ৪৯ বলে। একটু পরই জাওয়াদ পৌঁছে যান তিন অঙ্কে। ৯৫ থেকে দুলনিথ সিগেরাকে ছক্কায় তিনি পূর্ণ করেন শতরান। তিন দিনের মধ্যে তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এটি।

বাংলাদেশের হয়ে যুব ওয়ানডেতে দুটি করে সেঞ্চুরি করা ওপেনার তার আগে আছে কেবল অমিত মজুমদার, পিনাক ঘোষ ও সাইফ হাসান। সেঞ্চুরির এক বল পরই চার মারেন জাওয়াদ। তবে আউট হয়ে যান একটু পরই। ১৪ চার ও ৩ ছক্কায় ১১৫ বলে ১১৩ রানে শেষ হয় ইনিংস।

শতরানের হাতছানি ছিল রিজানের সামনেও। তবে ৪৪তম ওভারে দল আড়াইশ ছোঁয়ার পর আউট হয়ে যান তিনি ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৭ বলে ৮২ রান করে। পরের ব্যাটসম্যানদের কার্যকর ব্যাটিংয়ে শেষটাও ভালো করে বাংলাদেশ। শেষ ১০ ওভারে আসে ১১০ রান।

কিপার-ব্যাটসমান মোহাম্মদ আবদুল্লাহ দুই ছক্কায় করেন ২৭ বলে ৩২ রান, ১১ বলে ২১ করেন দেবাশিস দেবা। ৩ ছক্কায় ৮ বলে ২৩ করেন সামিউন বশির, ৯ নম্বরে নেমে ৫ বলে ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন আল ফাহাদ। শেষ ৬ ওভারে বাংলাদেশ তোলে ৮৫ রান।

১০ ওভার বোলিং করে ৯৬ রান দেন রাসিথ নিমসারা। যুব ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার হয়ে সবচেয়ে খরুচের বোলিংয়ের রেকর্ড এটি। সব মিলিয়ে চতুর্থ খরুচে।

লক্ষ্য তাড়ায় কখনোই আশা জাগাতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। সপ্তম ওভারে মাত্র ৩৬ রানে ৪ উইকেট খুইয়ে ভীষণ চাপে পড়ে তারা। সেই ধাক্কা সামলে আর ঘুরে দাঁড়ানো হয়নি তাদের। দলটির মাত্র চার ব্যাটার যেতে পারেন দুই অঙ্কে। অধিনায়ক বিমাথ দিনসারার ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৭২ বলে ৬৬ রানের ইনিংস কেবল হারের ব্যবধানই কমায়।

ক্যামিও ইনিংস খেলার পর বল হাতে ফর্মে থাকা পেসার ফাহাদ বাংলাদেশের পক্ষে ৪১ রানে পান সর্বোচ্চ ৩ উইকেট। এছাড়া, দুটি করে শিকার ধরেন অধিনায়ক আজিজুল হাকিম ও সানজিদ মজুমদার।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ত্রিশাল জিরো পয়েন্ট-হরিরামপুর সড়কটি যেন মরণফাঁদ

শ্রীলঙ্কাকে ১৪৬ রানের বড় ব্যবধানে হারালো যুবারা

প্রকাশের সময় : ০৮:৫৭:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫

স্পোর্টস ডেস্ক : 

তিন ম্যাচের মধ্যে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিলেন ছন্দে থাকা জাওয়াদ আবরার। যুব ওয়ানডেতে বাংলাদেশের চতুর্থ ওপেনার হিসেবে একাধিক সেঞ্চুরির কীর্তি গড়লেন তিনি। তার অসাধারণ শতক ছাড়াও রিজান হোসেন ফিফটি করে খেললেন দারুণ ইনিংস। তাদের নৈপুণ্যে বিদেশের মাটিতে সর্বোচ্চ দলীয় পুঁজির রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। এরপর বোলাররা জ্বলে ওঠায় একপেশে লড়াইয়ে বিশাল জয় তুলে নিল তারা।

শনিবার (৩ মে) কলম্বোতে চতুর্থ যুব ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ১৪৬ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টস জিতে আগে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ৩৩৬ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে তারা। জবাবে ধুঁকতে ধুঁকতে ৬৮ বল বাকি থাকতে মাত্র ১৯০ রানে গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা। ফলে টানা তৃতীয় জয়ে ছয় ম্যাচের সিরিজে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে সফরকারীরা।

দেশের বাইরে যুব ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ এটি। দেশের মাঠেও এর চেয়ে বড় ইনিংস আছে স্রেফ একটি। ২০১৯ সালে লঙ্কানদের বিপক্ষে চট্টগ্রামে রান ছিল ৩৪০।

সেবার সেঞ্চুরি করেছিলেন তাওহিদ হৃদয়, এবারের সেঞ্চুরিয়ান জাওয়াদ আবরার। গত সোমবার ১০৬ বলে ১৩০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন এই ওপেনার। এবার তার ব্যাট থেকে আসে ১১৫ বলে ১১৩ রান।

যুব ওয়ানডেতে একাধিক সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের চতুর্থ ওপেনার তিনি। এছাড়া চারে নেমে ৭৭ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলেন রিজান হোসেন। শেষ দিকে দারুণ ক্যামিও খেলেন কয়েকজন। সেই রান তাড়ায় শুরু থেকেই মুখ থুবড়ে পড়ে লঙ্কান ব্যাটিং। ধুঁকতে ধুঁকতে তারা শেষ পর্যন্ত করতে পারে ১৯০ রান।

কলম্বো ক্রিকেট ক্লাব মাঠে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ম্যাচে প্রথম বলেই চার দিয়ে শুরু করেন জাওয়াদ, তৃতীয় বলে বল বাউন্ডারিতে পাঠান তিনি আরেকবার। ম্যাচের প্রথম ছক্কাটি মারেন চতুর্থ ওভারেই।

আরেক প্রান্তে কালাম সিদ্দিকির শুরুটাও ছিল ভালো। দুই ওপেনার মিলে প্রথম সাত ওভারে ছয়টি চার ও এক ছক্কায় রান তোলেন ৪৯।

২৪ বলে ১৯ রান করে কালামের বিদায়ে ভাঙে শুরুর জুটি। দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক আজিজুল হাকিমের সঙ্গে জাওয়াদের জুটিতে আসে ৩৮ রান। আজিজুল রান আউটে ফেরেন ৩১ বলে ২৩ রান করে। ম্যাচের সবচেয়ে বড় জুটি আসে এরপরই। জাওয়াদ ও রিজান হোসেন চতুর্থ উইকেটে যোগ করেন ১৩৫ রান।

জাওয়াদ ফিফটি পূর্ণ করেন ৪৫ বলে। এরপর কিছুটা সতর্ক ব্যাটিং ইনিংস বড় করায় মন দেন তিনি। রিজান কিছুটা সাবধানী ব্যাটিংয়ে শুরুর পর আত্মবিশ্বাস পেয়ে যান সানুজা নিন্দুওয়ারাকে ছক্কা মেরে। পরে টানা দুটি ছক্কা মারেন তিনি লেগ স্পিনার হিমাল রাভিহানসাকে।

দুজনের ব্যাটে দ্রুত বাড়তে থাকে রান। রিজান যুব ওয়ানডেতে প্রথম ফিফটির স্বাদ পান ৪৯ বলে। একটু পরই জাওয়াদ পৌঁছে যান তিন অঙ্কে। ৯৫ থেকে দুলনিথ সিগেরাকে ছক্কায় তিনি পূর্ণ করেন শতরান। তিন দিনের মধ্যে তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এটি।

বাংলাদেশের হয়ে যুব ওয়ানডেতে দুটি করে সেঞ্চুরি করা ওপেনার তার আগে আছে কেবল অমিত মজুমদার, পিনাক ঘোষ ও সাইফ হাসান। সেঞ্চুরির এক বল পরই চার মারেন জাওয়াদ। তবে আউট হয়ে যান একটু পরই। ১৪ চার ও ৩ ছক্কায় ১১৫ বলে ১১৩ রানে শেষ হয় ইনিংস।

শতরানের হাতছানি ছিল রিজানের সামনেও। তবে ৪৪তম ওভারে দল আড়াইশ ছোঁয়ার পর আউট হয়ে যান তিনি ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৭ বলে ৮২ রান করে। পরের ব্যাটসম্যানদের কার্যকর ব্যাটিংয়ে শেষটাও ভালো করে বাংলাদেশ। শেষ ১০ ওভারে আসে ১১০ রান।

কিপার-ব্যাটসমান মোহাম্মদ আবদুল্লাহ দুই ছক্কায় করেন ২৭ বলে ৩২ রান, ১১ বলে ২১ করেন দেবাশিস দেবা। ৩ ছক্কায় ৮ বলে ২৩ করেন সামিউন বশির, ৯ নম্বরে নেমে ৫ বলে ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন আল ফাহাদ। শেষ ৬ ওভারে বাংলাদেশ তোলে ৮৫ রান।

১০ ওভার বোলিং করে ৯৬ রান দেন রাসিথ নিমসারা। যুব ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার হয়ে সবচেয়ে খরুচের বোলিংয়ের রেকর্ড এটি। সব মিলিয়ে চতুর্থ খরুচে।

লক্ষ্য তাড়ায় কখনোই আশা জাগাতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। সপ্তম ওভারে মাত্র ৩৬ রানে ৪ উইকেট খুইয়ে ভীষণ চাপে পড়ে তারা। সেই ধাক্কা সামলে আর ঘুরে দাঁড়ানো হয়নি তাদের। দলটির মাত্র চার ব্যাটার যেতে পারেন দুই অঙ্কে। অধিনায়ক বিমাথ দিনসারার ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৭২ বলে ৬৬ রানের ইনিংস কেবল হারের ব্যবধানই কমায়।

ক্যামিও ইনিংস খেলার পর বল হাতে ফর্মে থাকা পেসার ফাহাদ বাংলাদেশের পক্ষে ৪১ রানে পান সর্বোচ্চ ৩ উইকেট। এছাড়া, দুটি করে শিকার ধরেন অধিনায়ক আজিজুল হাকিম ও সানজিদ মজুমদার।