Dhaka মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্রীপুরে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৪ জুন) সকালে উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের সোনাব গ্রামের এ ঘটনা ঘটে। নিহত দুজন একই মাদ্রাসার ছাত্র ও বন্ধু ছিল।

নিহতরা হলো- উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের সোনাব গ্রামের মো. কাইয়ুম মণ্ডলের ছেলে নাসিব (৯) এবং একই ইউনিয়নের কাওরাইদ মোড়লপাড়া গ্রামের কালু মিয়ার ছেলে জাহিদ (১০)। তারা স্থানীয় দারুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র ছিল।

স্বজনদের দাবি, পুকুরের পাড় ভেঙে এক বন্ধু পুকুরে পড়ে যায়। এ সময় অপর বন্ধু বাঁচাতে গেলে দুজনই মারা যায়। তারা কেউ সাঁতার জানত না।

নিহত শিশু নাসিবের চাচা রতন মণ্ডল বলেন, নিহত দুই শিশু স্থানীয় দারুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়ত। গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের মাদ্রাসা ছুটি হয়। সকালের দিকে নাসিব বাসা থেকে নাশতা করে ঘুরতে বের হয়। এরপর অনেক বেলা হলেও সে বাড়িতে ফেরেনি। তখন নাসিবের মা মারজিয়া আক্তার আশপাশের বাড়িতে খোঁজ করতে থাকেন। কিন্তু নাসিব ও জাহিদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায় না।

এরপর রাস্তার পাশে নতুন খননকৃত পুকুরের পানিতে নাসিবের জুতা ভাসতে দেখেতে পান তার মা। তখন তিনি পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে নিথর অবস্থায় নাসিবকে উদ্ধার করেন। পুকুরের এক কোনায় জাহিদকেও পাওয়া যায়। এরপর তাদের শ্রীপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুই শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত শিশু নাসিবের মা মারজিয়া আক্তার বলেন, সকালে ছেলেকে নাশতা খাওয়াই। এরপর সে বন্ধু জাহিদের সঙ্গে দেখা করতে যাবে বলে বাড়ি থেকে বের হয়। ঘণ্টা দুই হলেও সে বাড়িতে না ফিরলে আমি জাহিদের বাড়িতে খুঁজতে যাই। সেখানে গিয়ে ছেলেকে পাইনি। এরপর আমার মনে সন্দেহ হলে পুকুরের পাড়ে গিয়ে পানিতে নাসিবের জুতা দেখতে পাই। তখন আমি ডাক-চিৎকার করে পুকুরে ঝাঁপ দিই। জুতার কাছেই পানির নিচ থেকে ছেলের মরদেহ উদ্ধার করি। আমার ছেলে ১১ পারা কোরআনের হাফেজ ছিল। আমার ছেলে সাঁতার জানত না।

নিহত শিশু জাহিদের বাবা কালু মিয়া বলেন, সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় ছেলের হাতে টাকা দিয়েছি, যাতে তারা দুজন কোনো খাবার কিনে খেতে পারে। এরপর পাশের কাওরাইদ বাজারে আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চলে যাই। এর কিছুক্ষণ পর খবর পাই ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দৌড়ে এসে দেখি বাড়ির অদূরে পুকুরে ছেলের মরদেহ ভাসছে।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শারমিন আক্তার বলেন, দুপুর পৌনে ১২টার দিকে দুই শিশুকে মৃত অবস্থায় তাদের স্বজনেরা হাসপাতালে নিয়ে আসে। এরপর পুলিশে খবর দেওয়া হয়েছে।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান বলেন, পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

শ্রীপুরে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ০৮:১৭:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪

গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৪ জুন) সকালে উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের সোনাব গ্রামের এ ঘটনা ঘটে। নিহত দুজন একই মাদ্রাসার ছাত্র ও বন্ধু ছিল।

নিহতরা হলো- উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের সোনাব গ্রামের মো. কাইয়ুম মণ্ডলের ছেলে নাসিব (৯) এবং একই ইউনিয়নের কাওরাইদ মোড়লপাড়া গ্রামের কালু মিয়ার ছেলে জাহিদ (১০)। তারা স্থানীয় দারুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র ছিল।

স্বজনদের দাবি, পুকুরের পাড় ভেঙে এক বন্ধু পুকুরে পড়ে যায়। এ সময় অপর বন্ধু বাঁচাতে গেলে দুজনই মারা যায়। তারা কেউ সাঁতার জানত না।

নিহত শিশু নাসিবের চাচা রতন মণ্ডল বলেন, নিহত দুই শিশু স্থানীয় দারুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়ত। গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের মাদ্রাসা ছুটি হয়। সকালের দিকে নাসিব বাসা থেকে নাশতা করে ঘুরতে বের হয়। এরপর অনেক বেলা হলেও সে বাড়িতে ফেরেনি। তখন নাসিবের মা মারজিয়া আক্তার আশপাশের বাড়িতে খোঁজ করতে থাকেন। কিন্তু নাসিব ও জাহিদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায় না।

এরপর রাস্তার পাশে নতুন খননকৃত পুকুরের পানিতে নাসিবের জুতা ভাসতে দেখেতে পান তার মা। তখন তিনি পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে নিথর অবস্থায় নাসিবকে উদ্ধার করেন। পুকুরের এক কোনায় জাহিদকেও পাওয়া যায়। এরপর তাদের শ্রীপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুই শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত শিশু নাসিবের মা মারজিয়া আক্তার বলেন, সকালে ছেলেকে নাশতা খাওয়াই। এরপর সে বন্ধু জাহিদের সঙ্গে দেখা করতে যাবে বলে বাড়ি থেকে বের হয়। ঘণ্টা দুই হলেও সে বাড়িতে না ফিরলে আমি জাহিদের বাড়িতে খুঁজতে যাই। সেখানে গিয়ে ছেলেকে পাইনি। এরপর আমার মনে সন্দেহ হলে পুকুরের পাড়ে গিয়ে পানিতে নাসিবের জুতা দেখতে পাই। তখন আমি ডাক-চিৎকার করে পুকুরে ঝাঁপ দিই। জুতার কাছেই পানির নিচ থেকে ছেলের মরদেহ উদ্ধার করি। আমার ছেলে ১১ পারা কোরআনের হাফেজ ছিল। আমার ছেলে সাঁতার জানত না।

নিহত শিশু জাহিদের বাবা কালু মিয়া বলেন, সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় ছেলের হাতে টাকা দিয়েছি, যাতে তারা দুজন কোনো খাবার কিনে খেতে পারে। এরপর পাশের কাওরাইদ বাজারে আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চলে যাই। এর কিছুক্ষণ পর খবর পাই ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দৌড়ে এসে দেখি বাড়ির অদূরে পুকুরে ছেলের মরদেহ ভাসছে।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শারমিন আক্তার বলেন, দুপুর পৌনে ১২টার দিকে দুই শিশুকে মৃত অবস্থায় তাদের স্বজনেরা হাসপাতালে নিয়ে আসে। এরপর পুলিশে খবর দেওয়া হয়েছে।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান বলেন, পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।