Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্যামনগরে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিময়ের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী এসআর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে কালিন্দি নদীর মোড় পর্যন্ত দুই কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন কিলোমিটার কার্পেটিং সড়ক নির্মাণে চরম দুর্নীতি ও অনিময়ের অভিযোগ উঠেছে। সড়কটির নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে আমা ইট ও ভাটার রাবিশ। ১০ সহস্রাধিক মানুষের চলাচলের জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি নির্মাণে এভাবে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিলেও কর্তৃপক্ষ নিশ্চুপ রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেনের সাথে যোগসাজশে ঠিকাদার সড়ক নির্মাণে চরম দুর্নীতি ও অনিয়মের আশ্রয় নেয়ার সুযোগ পেয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮ সালে কৈখালী এসআর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে কালিন্দি নদীর মোড় পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করেন নলতার ঠিকাদার আবদুর রাজ্জাক। দুই বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও পাঁচ বছরেও সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারেননি তিনি। বালু উত্তোলন ও এজিংয়ে নানা অনিয়ম শেষে ২০২২ সালের আগস্টে রাস্তায় ভাটার রাবিশ ও আমা ইটের খোয়া ছড়াতে শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সে সময় স্থানীয়দের রোষালনে পড়ে প্রতিষ্ঠানের ট্রাক ড্রাইভাররা। এরপর চলতি মাসের শুরুতে ফের একই কাজ করলে বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আবদুর রহিমের নজরে আসে। তিনি তখন কাজ বন্ধ করে দেন। কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে দেন দরবার করে ফের কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। এবারো সেই আগের মতোই ব্যবহার করা হয় সেই আমা ইট। স্থানীয়রা জানায়, যে ইট দিয়ে কাজ করা হচ্ছে, তাতে রাস্তা তিন মাসও টিকবে না।

স্থানীয় আবদুল আজিজ বলেন, রাস্তায় খোয়ার নামে যা দেয়া হচ্ছে, তা বৃষ্টি হলে ধুয়ে যাবে। পাকা রাস্তা নির্মাণের নামে যেন তামাশা হচ্ছে। গনি মিয়া নামে স্থানীয় আরেকজন বলেন, রাস্তায় যে রাবিশ ব্যবহার করা হচ্ছে, তা রোলার করার আগেই মাটির সাথে মিশে যায়। এই সড়ক তিন মাসও টিকবে না।

কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আবদুর রহিম বলেন, উপজেলা প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে। তারা নির্বিকার। আমা ইট ও রাবিশ দিয়ে রাস্তা বানানোয় আমি এক সময় কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। তাতে মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। পাঁচ বছর ফেলে রাখা হয়েছিল রাস্তা নির্মাণকাজ। এভাবে রাস্তা নির্মাণ হলে সরকারের কোটি টাকা পানিতেই যাবে। তিনি এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

ঠিকাদার আবদুর রাজ্জাক বলেন, করোনার কারণে সময় মতো কাজ করতে পারিনি। এ ছাড়া সরকারিভাবে আমাদের যে বিল দেয়ার কথা, আমরা সময়মতো বিল না পাওয়ায় কাজ করতে পারছি না। কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ডিসেম্বর মাসের মধ্যে কাজ শেষ করে দেবো।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেনের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি রাগান্বিত হয়ে বলেন, এ বিষয়ে আমি আপনাদের কাছে জবাবদিহি করব না।

আবহাওয়া

বদলির চিঠি প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলায় ৮ কর কর্মকর্তা বরখাস্ত

শ্যামনগরে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিময়ের অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ০৪:১২:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী এসআর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে কালিন্দি নদীর মোড় পর্যন্ত দুই কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন কিলোমিটার কার্পেটিং সড়ক নির্মাণে চরম দুর্নীতি ও অনিময়ের অভিযোগ উঠেছে। সড়কটির নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে আমা ইট ও ভাটার রাবিশ। ১০ সহস্রাধিক মানুষের চলাচলের জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি নির্মাণে এভাবে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিলেও কর্তৃপক্ষ নিশ্চুপ রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেনের সাথে যোগসাজশে ঠিকাদার সড়ক নির্মাণে চরম দুর্নীতি ও অনিয়মের আশ্রয় নেয়ার সুযোগ পেয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮ সালে কৈখালী এসআর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে কালিন্দি নদীর মোড় পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করেন নলতার ঠিকাদার আবদুর রাজ্জাক। দুই বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও পাঁচ বছরেও সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারেননি তিনি। বালু উত্তোলন ও এজিংয়ে নানা অনিয়ম শেষে ২০২২ সালের আগস্টে রাস্তায় ভাটার রাবিশ ও আমা ইটের খোয়া ছড়াতে শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সে সময় স্থানীয়দের রোষালনে পড়ে প্রতিষ্ঠানের ট্রাক ড্রাইভাররা। এরপর চলতি মাসের শুরুতে ফের একই কাজ করলে বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আবদুর রহিমের নজরে আসে। তিনি তখন কাজ বন্ধ করে দেন। কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে দেন দরবার করে ফের কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। এবারো সেই আগের মতোই ব্যবহার করা হয় সেই আমা ইট। স্থানীয়রা জানায়, যে ইট দিয়ে কাজ করা হচ্ছে, তাতে রাস্তা তিন মাসও টিকবে না।

স্থানীয় আবদুল আজিজ বলেন, রাস্তায় খোয়ার নামে যা দেয়া হচ্ছে, তা বৃষ্টি হলে ধুয়ে যাবে। পাকা রাস্তা নির্মাণের নামে যেন তামাশা হচ্ছে। গনি মিয়া নামে স্থানীয় আরেকজন বলেন, রাস্তায় যে রাবিশ ব্যবহার করা হচ্ছে, তা রোলার করার আগেই মাটির সাথে মিশে যায়। এই সড়ক তিন মাসও টিকবে না।

কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আবদুর রহিম বলেন, উপজেলা প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে। তারা নির্বিকার। আমা ইট ও রাবিশ দিয়ে রাস্তা বানানোয় আমি এক সময় কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। তাতে মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। পাঁচ বছর ফেলে রাখা হয়েছিল রাস্তা নির্মাণকাজ। এভাবে রাস্তা নির্মাণ হলে সরকারের কোটি টাকা পানিতেই যাবে। তিনি এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

ঠিকাদার আবদুর রাজ্জাক বলেন, করোনার কারণে সময় মতো কাজ করতে পারিনি। এ ছাড়া সরকারিভাবে আমাদের যে বিল দেয়ার কথা, আমরা সময়মতো বিল না পাওয়ায় কাজ করতে পারছি না। কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ডিসেম্বর মাসের মধ্যে কাজ শেষ করে দেবো।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেনের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি রাগান্বিত হয়ে বলেন, এ বিষয়ে আমি আপনাদের কাছে জবাবদিহি করব না।