Dhaka বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে কিউইদের হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার টানা চার জয়

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৭:২৫:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৩
  • ১৯৫ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

ক্রিকেটের অন্যতম পুরোনো দ্বৈরথের একটি অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড লড়াই। তাসমান সাগরের দুই পাড়ের দুই দেশের ম্যাচকে ডাকা হয় ট্রান্স-তাসমান লড়াই নামে। জমজমাট এই দ্বৈরথ দেখতে মুখিয়ে থাকে ভক্তরা। এমন ম্যাচ আগে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৯.২ ওভারে অলআউট হলেও ৩৮৮ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে অস্ট্রেলিয়া। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৮৩ রান করে কিউইরা। এতে শ্বাসরুদ্ধকর এই দুই দেশের লড়াইয়ে ৫ রানের জয় পায় প্যাট কামিন্সের দল। ফলে টানা চার জয় পেল অস্ট্রেলিয়ার।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় কিউইরা। ট্রাভিস হেডের সেঞ্চুরিতে ৩৮৮ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। ৬৭ বলে ১০৯ রান করেন ট্রাভিস হেড।

৩৮৯ রানের বিশাল লক্ষ্য। রেকর্ড গড়ে জিততে হতো। অস্ট্রেলিয়ার ছুড়ে দেওয়া এই চ্যালেঞ্জের কাছে সহজে হার মানেনি নিউজিল্যান্ড। ট্রান্সতাসমান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রান উৎসব করেছে। শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হেসেছে অস্ট্রেলিয়া।

পাওয়ার প্লেতে জশ হ্যাজেলউড পরপর দুই ওভারে ডেভন কনওয়ে ও উইল ইয়াংকে ফিরিয়ে দারুণ শুরু এনে দেন। বড় ধাক্কা লাগলেও নিউজিল্যান্ড ঘুরে দাঁড়ায় ড্যারিল মিচেল ও রাচিন রবীন্দ্রর ৯৬ রানের জুটিতে। মিচেল ৫১ বলে ৫৪ রান করে থামলেও রাচিন প্রতিরোধ গড়ে দলের হাল ধরেন।

অধিনায়ক টম ল্যাথাম (২১) রাচিনের সঙ্গে ৫৪ রানের জুটি গড়েন। গ্লেন ফিলিপসও (১২) বড় অবদান রাখতে পারেননি। ৪০ ওভারের খেলা শেষে নিউজিল্যান্ডের রান ৫ উইকেটে ২৯২। অস্ট্রেলিয়া এই পর্যায়ে করেছিল ৫ উইকেটে ২৯২ রান।

রাচিন ১১৬ রানে অপরাজিত থেকে ডেথ ওভারে খেলা শুরু করেন। সঙ্গে ছিলেন জিমি নিশাম। কিন্তু প্যাট কামিন্স দ্বিতীয় বলেই রাচিনকে থামান আর কোনও রান করতে না দিয়েই। ৮৯ বলে ৯ চার ও ৫ ছয়ে সাজানো ছিল নিউজিল্যান্ড ব্যাটারের ইনিংস।

অ্যাডাম জাম্পা ও কামিন্স আরও দুটি উইকেট তুলে নিলেও নিশাম রানরেট ধরে রাখেন। শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন ছিল ৩২ রানের। ৪৯তম ওভারে ১৩ রান আসে। নিশাম ৩৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন। শেষ ওভারে প্রয়োজন ১৯ রান। মিচেল স্টার্ক বল তুলে নেন, প্রথম বলে সিঙ্গেল নেন বোল্ট। দ্বিতীয় বল ওয়াইড হয়ে বাউন্ডারির বাইরে। বৈধ বলে দুটি রান নেন নিশাম। তৃতীয় বলে আবার ডাবলস। শেষ দুই বলে প্রয়োজন হয় ৭ রান। সেখানে দুই রান নিতে গিয়ে আউট হন নিশাম। ৩৯ বলে ৫৮ রান করে ফিরে যান তিনি। শেষ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ৬ রান। তা আটকে দেন মিচেল স্টার্ক। শেষ পর্যন্ত ৫ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অস্ট্রেলিয়া।

টস জিতে বোলিংয়ে কিছুটা সুবিধা আদায় করা যাবে, এ চিন্তা থেকে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো নিউজিল্যান্ড। ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ঝড় তোলেন দুই অসি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার এবং ট্রাভিস হেড। দু’জন মিলে ১৭৫ রানের বিশাল জুটি গড়েন ১৯.১ ওভারে।

৬৫ বলে ৮১ রান করে আউট হন ডেভিড ওয়ার্নার। ট্রাভিস হেড শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরি পূরণ করেন ৬০ বলে এবং ৬৭ বলে ১০৯ রান করে আউট হন তিনি। ১০টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৭টি ছক্কার মার মারেন তিনি।

ইনজুরির পরও কেন তাকে দলে রাখা হয়েছিলো, প্রমাণ করে দিলেন ওপেনার ট্রাভিস হেড। হাতের ইনজুরির কারণে অস্ট্রেলিয়া দলের সঙ্গে প্রথমে ভারতেও আসেননি তিনি। নিজের দেশে থেকেই ইনজুরি সারানোর ব্যবস্থা করেন। অবশেষে বিশ্বকাপে এসে দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে প্রথম সুযোগেই সেঞ্চুরি তুলে নিলেন তিনি।

দুই অসি ওপেনারের ঝড় দেখে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়াটা ভুল হয়ে গেলো কি না, তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টম ল্যাথাম?

তবে তাকে স্বস্তি দেন শেষের বোলাররা। বিশেষ করে ম্যাট হেনরি এবং ট্রেন্ট বোল্টের আগুতে বোলিংয়ে শেষের দিকে দ্রুত উইকেট হারায় তারা।

ট্রাভিস হেড এবং ওয়ার্নারের জুটিই অস্ট্রেলিয়াকে বড় ইনিংস গড়তে সাহায্য করে। পরের ব্যাটাররা খুব বড় কোনো স্কোর গড়তে পারেননি। মিচেল মার্শ ৫১ বলে করেন ৩৬ রান। স্টিভ স্মিথ ১৭ বলে ১৮ রান সংগ্রহ করেন। মার্নাস লাবুশেন ১৮ রান করেন। ২৪ বলে ৪১ রান করেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ২৮ বলে ৩৮ রান করেন জস ইংলিস। ১৪ বলে ৩৭ রান করেন প্যাট কামিন্স।

৩টি করে উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট এবং গ্লেন ফিলিপস। ২ উইকেট নেন মিচেল সান্তনার। ১টি করে উইকেট নেন ম্যাট হেনরি এবং জিমি নিশাম।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে কিউইদের হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার টানা চার জয়

প্রকাশের সময় : ০৭:২৫:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

ক্রিকেটের অন্যতম পুরোনো দ্বৈরথের একটি অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড লড়াই। তাসমান সাগরের দুই পাড়ের দুই দেশের ম্যাচকে ডাকা হয় ট্রান্স-তাসমান লড়াই নামে। জমজমাট এই দ্বৈরথ দেখতে মুখিয়ে থাকে ভক্তরা। এমন ম্যাচ আগে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৯.২ ওভারে অলআউট হলেও ৩৮৮ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে অস্ট্রেলিয়া। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৮৩ রান করে কিউইরা। এতে শ্বাসরুদ্ধকর এই দুই দেশের লড়াইয়ে ৫ রানের জয় পায় প্যাট কামিন্সের দল। ফলে টানা চার জয় পেল অস্ট্রেলিয়ার।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় কিউইরা। ট্রাভিস হেডের সেঞ্চুরিতে ৩৮৮ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। ৬৭ বলে ১০৯ রান করেন ট্রাভিস হেড।

৩৮৯ রানের বিশাল লক্ষ্য। রেকর্ড গড়ে জিততে হতো। অস্ট্রেলিয়ার ছুড়ে দেওয়া এই চ্যালেঞ্জের কাছে সহজে হার মানেনি নিউজিল্যান্ড। ট্রান্সতাসমান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রান উৎসব করেছে। শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হেসেছে অস্ট্রেলিয়া।

পাওয়ার প্লেতে জশ হ্যাজেলউড পরপর দুই ওভারে ডেভন কনওয়ে ও উইল ইয়াংকে ফিরিয়ে দারুণ শুরু এনে দেন। বড় ধাক্কা লাগলেও নিউজিল্যান্ড ঘুরে দাঁড়ায় ড্যারিল মিচেল ও রাচিন রবীন্দ্রর ৯৬ রানের জুটিতে। মিচেল ৫১ বলে ৫৪ রান করে থামলেও রাচিন প্রতিরোধ গড়ে দলের হাল ধরেন।

অধিনায়ক টম ল্যাথাম (২১) রাচিনের সঙ্গে ৫৪ রানের জুটি গড়েন। গ্লেন ফিলিপসও (১২) বড় অবদান রাখতে পারেননি। ৪০ ওভারের খেলা শেষে নিউজিল্যান্ডের রান ৫ উইকেটে ২৯২। অস্ট্রেলিয়া এই পর্যায়ে করেছিল ৫ উইকেটে ২৯২ রান।

রাচিন ১১৬ রানে অপরাজিত থেকে ডেথ ওভারে খেলা শুরু করেন। সঙ্গে ছিলেন জিমি নিশাম। কিন্তু প্যাট কামিন্স দ্বিতীয় বলেই রাচিনকে থামান আর কোনও রান করতে না দিয়েই। ৮৯ বলে ৯ চার ও ৫ ছয়ে সাজানো ছিল নিউজিল্যান্ড ব্যাটারের ইনিংস।

অ্যাডাম জাম্পা ও কামিন্স আরও দুটি উইকেট তুলে নিলেও নিশাম রানরেট ধরে রাখেন। শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন ছিল ৩২ রানের। ৪৯তম ওভারে ১৩ রান আসে। নিশাম ৩৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন। শেষ ওভারে প্রয়োজন ১৯ রান। মিচেল স্টার্ক বল তুলে নেন, প্রথম বলে সিঙ্গেল নেন বোল্ট। দ্বিতীয় বল ওয়াইড হয়ে বাউন্ডারির বাইরে। বৈধ বলে দুটি রান নেন নিশাম। তৃতীয় বলে আবার ডাবলস। শেষ দুই বলে প্রয়োজন হয় ৭ রান। সেখানে দুই রান নিতে গিয়ে আউট হন নিশাম। ৩৯ বলে ৫৮ রান করে ফিরে যান তিনি। শেষ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ৬ রান। তা আটকে দেন মিচেল স্টার্ক। শেষ পর্যন্ত ৫ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অস্ট্রেলিয়া।

টস জিতে বোলিংয়ে কিছুটা সুবিধা আদায় করা যাবে, এ চিন্তা থেকে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো নিউজিল্যান্ড। ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ঝড় তোলেন দুই অসি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার এবং ট্রাভিস হেড। দু’জন মিলে ১৭৫ রানের বিশাল জুটি গড়েন ১৯.১ ওভারে।

৬৫ বলে ৮১ রান করে আউট হন ডেভিড ওয়ার্নার। ট্রাভিস হেড শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরি পূরণ করেন ৬০ বলে এবং ৬৭ বলে ১০৯ রান করে আউট হন তিনি। ১০টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৭টি ছক্কার মার মারেন তিনি।

ইনজুরির পরও কেন তাকে দলে রাখা হয়েছিলো, প্রমাণ করে দিলেন ওপেনার ট্রাভিস হেড। হাতের ইনজুরির কারণে অস্ট্রেলিয়া দলের সঙ্গে প্রথমে ভারতেও আসেননি তিনি। নিজের দেশে থেকেই ইনজুরি সারানোর ব্যবস্থা করেন। অবশেষে বিশ্বকাপে এসে দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে প্রথম সুযোগেই সেঞ্চুরি তুলে নিলেন তিনি।

দুই অসি ওপেনারের ঝড় দেখে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়াটা ভুল হয়ে গেলো কি না, তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টম ল্যাথাম?

তবে তাকে স্বস্তি দেন শেষের বোলাররা। বিশেষ করে ম্যাট হেনরি এবং ট্রেন্ট বোল্টের আগুতে বোলিংয়ে শেষের দিকে দ্রুত উইকেট হারায় তারা।

ট্রাভিস হেড এবং ওয়ার্নারের জুটিই অস্ট্রেলিয়াকে বড় ইনিংস গড়তে সাহায্য করে। পরের ব্যাটাররা খুব বড় কোনো স্কোর গড়তে পারেননি। মিচেল মার্শ ৫১ বলে করেন ৩৬ রান। স্টিভ স্মিথ ১৭ বলে ১৮ রান সংগ্রহ করেন। মার্নাস লাবুশেন ১৮ রান করেন। ২৪ বলে ৪১ রান করেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ২৮ বলে ৩৮ রান করেন জস ইংলিস। ১৪ বলে ৩৭ রান করেন প্যাট কামিন্স।

৩টি করে উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট এবং গ্লেন ফিলিপস। ২ উইকেট নেন মিচেল সান্তনার। ১টি করে উইকেট নেন ম্যাট হেনরি এবং জিমি নিশাম।