নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঈদের ছুটি শেষ হয়েছে গত তিন দিন আগে। তবু ঈদের আমেজ রয়ে গেছে মেট্রোরেলে। শুরুর দিকের মতো উপচে পড়া ভিড় না থাকলেও শুধু ভ্রমণের জন্য আসা যাত্রীদের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। পাশাপাশি রয়েছে কর্মস্থল এবং বিভিন্ন প্রয়োজনে মেট্রোরেলে যাতায়াত করা যাত্রীরাও।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশনে সরেজমিনে এই চিত্র দেখা যায়।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেকে গ্রামের বাড়ি যাওয়াই ঈদের শুরুতে মেট্রোরেল ভ্রমণ করতে পারেননি। তাই বাড়ি থেকে ফিরে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। কেউ আবার ঢাকায় বেড়াতে আসা আত্মীয়দের সুযোগ করে নিয়ে এসেছেন মেট্রোরেল ভ্রমণ করাতে। কেউ কেউ জানান, ঈদের শুরুতে ভিড় ও সময় মতো আসতে না পারায় এখন এসেছেন। আজ আসা অধিকাংশ যাত্রীর এবারই প্রথম মেট্রোরেল ভ্রমণ! উৎসুক যাত্রীদের পাশাপাশি রয়েছে নিয়মিত প্রয়োজনে যাতায়াত করাও যাত্রীরা। যাতায়াতে তাদের কিছুটা বিলম্ব হলেও মেনে নিচ্ছেন ঈদ আমেজের বিষয়টি।
কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকায় বেড়ায়ে আসা আত্নীয়সহ পরিবার নিয়ে মেট্রোরেল ভ্রমণে এসেছেন আলি ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ঈদে আমার বাসায় আত্মীয়স্বজন এসেছেন। আগামীকাল তারা চলে যাবেন। তাই আজ তাদের নিয়ে মেট্রোরেল ভ্রমণে এসেছি। বাসার লোকেরা কখনও মেট্রোরেলে চড়েনি। এই সুযোগে সবাইকে নিয়ে আসলাম।
সিরাজগঞ্জ থেকে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন মো ফারুক নামের এক প্রবাসী। এ সুযোগে পরিবার নিয়ে মেট্রোরেলে ভ্রমণে এসেছেন তিনি। মেট্রোরেল ঘুরে কেমন লাগছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বিদেশে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশে মেট্রোরেল চালু হয়েছে। তখনই পরিকল্পনা ছিল পরিবার নিয়ে এখানে ঘুরতে আসব। আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসছি। তাই এই সুযোগে মেট্রোরেল ঘুরে গেলাম। খুবই ভালো লাগছে, সুন্দর পরিবেশ।
খুলনায় পরিবার নিয়ে ঈদ করতে গিয়েছিলেন ইমরান আল সুমন। ফিরে এসে পরিবারের আবদারে মেট্রোরেল ভ্রমণ করতে এসেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঈদে গ্রামে গিয়েছিলাম। পরিবারের বিশেষ করে শিশুদের আগ্রহ মেট্রোরেল চড়বে, তাই পুরাপুরি ব্যস্ত হওয়ার আগেই তাদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি। খুবই সুন্দর যাতায়াত ব্যবস্থা।’
ঈদের পরের দিন এসেও মেট্রোরেল ভ্রমণের সুযোগ হয়নি বলে জানানা হাসেম ও মুস্তাকিম নামে দুই বন্ধু। হাসেম বলেন, ঈদের পরের দিন একবার এসেছিলাম। কিন্তু সময় শেষ হয়ে গিয়েছিল। আজ আবার এসেছি। তাও ভিড় কম না।
আগারগাঁও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে আসা আবদুল রশিদ বলেন, ‘যাচ্ছি নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে। বাসার কাছেই মেট্রোরেল স্টেশন, তাই মেট্রোরেলে চড়ে যাচ্ছি। এমনিতে এদিকে কোনও কাজ থাকলে মেট্রোরেল ব্যবহার করি। চলাচলে সুবিধা আছে।’
উত্তরা থেকে অফিসের কাজে আসা মো. সাইদ বলেন, আমাকে প্রায়ই অফিসের কাজে আগারগাঁও আসতে হয়। এমনিতে সাধারণ দিনগুলোতে কোনও ঝামেলা হয় না। আজ ঘুরতে আসা যাত্রীদের কারণে ভিড় দেখছি।
মেট্রোরেলে ঘুরতে আসা জিহাদ নামের আরেক এক যাত্রী বলেন, আমি আগেও কয়েকবার মেট্রোরেলে চড়েছি। বর্তমানে যে গরম, তাই বাসা থেকে তেমন বের হওয়া হয় না। আজ ছুটি, তাই ভাবলাম মেট্রোতে করে ঘুরে আসি। বাংলাদেশের উত্থানের এই জেনারেশনে জন্মাতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।