Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেষ মুহূর্তে স্পেনের জয় ছিনিয়ে নিলো ব্রাজিল

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১২:১৭:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪
  • ১৮৪ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

ব্রাজিল এবং স্পেনের ম্যাচটা সম্ভবত কেউই মিস করেননি। তবে যদি কেউ মিস করেই ফেলেন, তবে ইউটিউবে ম্যাচটার হাইলাইটস দেখে নিতে পারেন। এক কথায় অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয়! যে ম্যাচ শুরু হয়েছিল সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে, সেই ম্যাচটাই এবারের ইন্টারন্যাশনাল উইন্ডোর সেরা ম্যাচ হয়ে থাকল। স্পেনের বার্নাব্যু স্টেডিয়াম সাক্ষী হলো আরও এক দুর্দান্ত ম্যাচের।

তিন পেনাল্টি, ৬ গোল, ৩-৩ সমতা। ৯০ মিনিটের ফুটবলে কত রোমাঞ্চ লুকিয়ে থাকতে পারে, তার পুরো নমুনা দেখা গেল এই ব্রাজিল ও স্পেনের এই ম্যাচে। শুরুতে স্পেন যেমন ব্রাজিলকে নাস্তানাবুদ করেছে। তেমনি দুই দফা পিছিয়ে পড়া ম্যাচে ব্রাজিলের কামব্যাকটার মাহাত্ম্যও একেবারেই ফেলনা নয়। ম্যাচের অন্তিম সময় পর্যন্ত ছিল উত্তেজনার রসদ। ড্র ফলাফলই হয়ত তাই এই ম্যাচের সবচেয়ে উপযুক্ত ফলাফল।

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর শুরুটা অবশ্য ছিল অন্য রকম। প্রথমার্ধের শুরু থেকেই স্পেনের প্রেসিংয়ে টালমাটাল ব্রাজিল। প্রথম দিকের বেশ কিছু সময় বল শুধু ব্রাজিলের অর্ধেই ছিল। একপর্যায়ে স্পেনের আক্রমণের ঝড় সামলাতে না পেরে বক্সের ভেতর লামিনে ইয়ামালকে ফাউল করে বসেন জোয়াও গোমেজ। ১২ মিনিটে স্পট কিক থেকে গোল করে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন রদ্রি।

পিছিয়ে পড়েও সেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারছিল না ব্রাজিল। ম্যাচের ১৭ মিনিটে ভিনিসিয়ুস-রদ্রিগোর সমন্বয়ে প্রথম বলার মতো আক্রমণে যায় ব্রাজিল। যদিও সেই আক্রমণ থেকে গোল পায়নি লাতিন দেশটি।

ম্যাচের শুরু থেকেই স্পেনের আধিপত্যের ছড়ি ছিল ১৬ বছর বয়সী ইয়ামালের হাতে। এখনো কৈশোর না পেরোনো ইয়ামাল যখনই পায়ে বল পেয়েছেন ব্রাজিলের রক্ষণকে নাচিয়ে ছেড়েছেন। এদিন ইয়ামালের পায়ে গোলক বস্তুটি যেন সৌন্দর্যের পসরা নিয়ে হাজির হয়েছিল। বলের ওপর তাঁর প্রতিটি স্পর্শ যেন শিল্পীর তুলির আঁচড়। এমনকি দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে মাঠ ছাড়ার সময় দর্শকেরা দাঁড়িয়ে অভিবাদনও জানান ইয়ামালকে।

ইয়ামালের মুগ্ধতা ছড়ানোর রাতে ৩৬ মিনিটে স্পেনকে দুর্দান্ত এক গোলে ২-০ লিড এনে দেন দানি অলমো। এই গোলের সহায়তাকারী কিন্তু সেই ইয়ামালই ছিলেন। তার পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের ভেতর একাধিক ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে লক্ষ্যভেদ করেছেন অলমো। এই গোলের পথে স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড যেভাবে লুকাস বেরালদোকে নাটমেগ করেছেন, তা এই সেন্টার ব্যাকের আরও অনেক দিন মনে থাকবে।

দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও খুব একটা সুবিধা করতে পারছিল না ব্রাজিল। বল পায়েই রাখতেই হিমশিম খাচ্ছিল তারা। ইংল্যান্ড ম্যাচের সেই ধারও অনেকটা অনুপস্থিত ছিল। তবে হাবুডুবু খেতে থাকা ব্রাজিলকে ম্যাচে ফেরার সুযোগ করে দেয় স্পেনই। আরও বিশেষভাবে বললে গোলরক্ষক উনাই সিমোনের হাস্যকর একটি ভুল। বক্সের সামনে রদ্রিগোর পায়ে বলটা যে তুলে দিয়েছিলেন সিমনই। এমন সুযোগ হাতছাড়া করেননি রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। ব্যবধান ২-১ করে ব্রাজিল। এই ব্যবধানেই বিরতিতে যায় দুই দল।

এদিকে ২-১ গোলে দ্বিতিয়ার্ধ শুরু পরই রাফিনিয়াকে তুলে তরুণ এন্ড্রিককে মাঠে নামান ব্রাজিল কোচ। আর মাঠে নেমেই ব্রাজিলকে সমতায় ফিরিয়েছেন এই বিস্ময় বালক। ৫০ মিনিটে দুর্দান্ত এক শটে জালের ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি।

এদিকে ম্যাচে সমতা ফেরার পর দুই দলই মরিয়া হয়ে লড়াই করেছে লিড নিতে। এমন সময়ে ম্যাচের একেবারে শেষদিকে আরও একবার পেনাল্টি পায় স্পেন। আর ৮৫ মিনিটে স্পটকিকে আরও একবার দলকে লিড এনে দেন রদ্রি। ব্রাজিল স্কোয়াডে তখন রাজ্যের হতাশা।

তবে শেষ পর্যন্ত হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়নি সেলেসাওদের। ম্যাচের যোগ করা সময়ে নিজেদের বক্সে ফাউল করে বসেন দানি কারভাহাল। আর স্পটকিকে গল করে ব্রাজিলকে সমতায় ফেরান লুকাস পাকেতা। তাঁর এই গলের শেষ পর্যন্ত সমতা নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।

এই ড্রয়ে নতুন এক বার্তাও দিলেন ব্রাজিলের নতুন কোচ দরিভাল। এই ব্রাজিল হারার আগে হারে না। কোপা আমেরিকার আগে ইংল্যান্ড ও স্পেনের বিপক্ষে এমন পারফরম্যান্স নিশ্চিতভাবে ব্রাজিলের আত্মবিশ্বাসে নতুন করে হাওয়া দেবে।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রিজের সুফল পাচ্ছে না সাত গ্রামের মানুষ

শেষ মুহূর্তে স্পেনের জয় ছিনিয়ে নিলো ব্রাজিল

প্রকাশের সময় : ১২:১৭:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪

স্পোর্টস ডেস্ক : 

ব্রাজিল এবং স্পেনের ম্যাচটা সম্ভবত কেউই মিস করেননি। তবে যদি কেউ মিস করেই ফেলেন, তবে ইউটিউবে ম্যাচটার হাইলাইটস দেখে নিতে পারেন। এক কথায় অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয়! যে ম্যাচ শুরু হয়েছিল সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে, সেই ম্যাচটাই এবারের ইন্টারন্যাশনাল উইন্ডোর সেরা ম্যাচ হয়ে থাকল। স্পেনের বার্নাব্যু স্টেডিয়াম সাক্ষী হলো আরও এক দুর্দান্ত ম্যাচের।

তিন পেনাল্টি, ৬ গোল, ৩-৩ সমতা। ৯০ মিনিটের ফুটবলে কত রোমাঞ্চ লুকিয়ে থাকতে পারে, তার পুরো নমুনা দেখা গেল এই ব্রাজিল ও স্পেনের এই ম্যাচে। শুরুতে স্পেন যেমন ব্রাজিলকে নাস্তানাবুদ করেছে। তেমনি দুই দফা পিছিয়ে পড়া ম্যাচে ব্রাজিলের কামব্যাকটার মাহাত্ম্যও একেবারেই ফেলনা নয়। ম্যাচের অন্তিম সময় পর্যন্ত ছিল উত্তেজনার রসদ। ড্র ফলাফলই হয়ত তাই এই ম্যাচের সবচেয়ে উপযুক্ত ফলাফল।

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর শুরুটা অবশ্য ছিল অন্য রকম। প্রথমার্ধের শুরু থেকেই স্পেনের প্রেসিংয়ে টালমাটাল ব্রাজিল। প্রথম দিকের বেশ কিছু সময় বল শুধু ব্রাজিলের অর্ধেই ছিল। একপর্যায়ে স্পেনের আক্রমণের ঝড় সামলাতে না পেরে বক্সের ভেতর লামিনে ইয়ামালকে ফাউল করে বসেন জোয়াও গোমেজ। ১২ মিনিটে স্পট কিক থেকে গোল করে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন রদ্রি।

পিছিয়ে পড়েও সেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারছিল না ব্রাজিল। ম্যাচের ১৭ মিনিটে ভিনিসিয়ুস-রদ্রিগোর সমন্বয়ে প্রথম বলার মতো আক্রমণে যায় ব্রাজিল। যদিও সেই আক্রমণ থেকে গোল পায়নি লাতিন দেশটি।

ম্যাচের শুরু থেকেই স্পেনের আধিপত্যের ছড়ি ছিল ১৬ বছর বয়সী ইয়ামালের হাতে। এখনো কৈশোর না পেরোনো ইয়ামাল যখনই পায়ে বল পেয়েছেন ব্রাজিলের রক্ষণকে নাচিয়ে ছেড়েছেন। এদিন ইয়ামালের পায়ে গোলক বস্তুটি যেন সৌন্দর্যের পসরা নিয়ে হাজির হয়েছিল। বলের ওপর তাঁর প্রতিটি স্পর্শ যেন শিল্পীর তুলির আঁচড়। এমনকি দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে মাঠ ছাড়ার সময় দর্শকেরা দাঁড়িয়ে অভিবাদনও জানান ইয়ামালকে।

ইয়ামালের মুগ্ধতা ছড়ানোর রাতে ৩৬ মিনিটে স্পেনকে দুর্দান্ত এক গোলে ২-০ লিড এনে দেন দানি অলমো। এই গোলের সহায়তাকারী কিন্তু সেই ইয়ামালই ছিলেন। তার পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের ভেতর একাধিক ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে লক্ষ্যভেদ করেছেন অলমো। এই গোলের পথে স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড যেভাবে লুকাস বেরালদোকে নাটমেগ করেছেন, তা এই সেন্টার ব্যাকের আরও অনেক দিন মনে থাকবে।

দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও খুব একটা সুবিধা করতে পারছিল না ব্রাজিল। বল পায়েই রাখতেই হিমশিম খাচ্ছিল তারা। ইংল্যান্ড ম্যাচের সেই ধারও অনেকটা অনুপস্থিত ছিল। তবে হাবুডুবু খেতে থাকা ব্রাজিলকে ম্যাচে ফেরার সুযোগ করে দেয় স্পেনই। আরও বিশেষভাবে বললে গোলরক্ষক উনাই সিমোনের হাস্যকর একটি ভুল। বক্সের সামনে রদ্রিগোর পায়ে বলটা যে তুলে দিয়েছিলেন সিমনই। এমন সুযোগ হাতছাড়া করেননি রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। ব্যবধান ২-১ করে ব্রাজিল। এই ব্যবধানেই বিরতিতে যায় দুই দল।

এদিকে ২-১ গোলে দ্বিতিয়ার্ধ শুরু পরই রাফিনিয়াকে তুলে তরুণ এন্ড্রিককে মাঠে নামান ব্রাজিল কোচ। আর মাঠে নেমেই ব্রাজিলকে সমতায় ফিরিয়েছেন এই বিস্ময় বালক। ৫০ মিনিটে দুর্দান্ত এক শটে জালের ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি।

এদিকে ম্যাচে সমতা ফেরার পর দুই দলই মরিয়া হয়ে লড়াই করেছে লিড নিতে। এমন সময়ে ম্যাচের একেবারে শেষদিকে আরও একবার পেনাল্টি পায় স্পেন। আর ৮৫ মিনিটে স্পটকিকে আরও একবার দলকে লিড এনে দেন রদ্রি। ব্রাজিল স্কোয়াডে তখন রাজ্যের হতাশা।

তবে শেষ পর্যন্ত হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়নি সেলেসাওদের। ম্যাচের যোগ করা সময়ে নিজেদের বক্সে ফাউল করে বসেন দানি কারভাহাল। আর স্পটকিকে গল করে ব্রাজিলকে সমতায় ফেরান লুকাস পাকেতা। তাঁর এই গলের শেষ পর্যন্ত সমতা নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।

এই ড্রয়ে নতুন এক বার্তাও দিলেন ব্রাজিলের নতুন কোচ দরিভাল। এই ব্রাজিল হারার আগে হারে না। কোপা আমেরিকার আগে ইংল্যান্ড ও স্পেনের বিপক্ষে এমন পারফরম্যান্স নিশ্চিতভাবে ব্রাজিলের আত্মবিশ্বাসে নতুন করে হাওয়া দেবে।