Dhaka শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেষ বলে লড়ে মোহামেডানকে হারাল আবাহনী

স্পোর্টস ডেস্ক : 

একটা সময় দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব আবাহনী-মোহামেডানের লড়াইয়ে থাকতো বাড়তি উত্তেজনা। সময়ের পরিক্রমায় সেই দৃশ্য একেবারেই হারিয়ে গেছে। শুরুতে তেমন কিছুর ছাপ না থাকলেও শেষে দিকে এসে রোমাঞ্চের দেখা মিলেছে। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২০ রান! কঠিন সেই সমীকরণে প্রথম বলেই ছক্কা মেরে নাটকীয়তার সৃষ্টি করেছিলেন মোহামেডানের মুশফিক হোসেন। কিন্তু এক বল পর তাকে আউট করে সব অনিশ্চয়তা দূরে ঠেলে টানা ৮ ম্যাচ জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেন আবাহনীর অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন।

এই জয়ে ১২ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেছে আবাহনী।

সোমবার (১ মে)  মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে মোহামেডানকে ২৫৯ রানের লক্ষ্য দেয় মোসাদ্দেকরা। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ঠিক যেভাবে শুরুর প্রয়োজন ছিল সেটি করতে পারেনি মোহামেডান। ১২ রানে দলের টপঅর্ডার তিন ব্যাটারকে হারিয়ে ম্যাচ থেকেই ছিটকে যায় ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি। অধিনায়ক ইমরুল ১ রানে আউটের পর অফফর্মে থাকা সৌম্য ৮ রান করতে পেরেছেন। জ্যাক লিন্টটের বদলে উড়িয়ে আনা কামিন্দু মেন্ডিসও ১ রানের বেশি করতে পারেননি।

দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেটে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও আরিফুল ইসলাম মিলে প্রতিরোধ গড়েন। এই জুটিতে তারা সংগ্রহ করেন ৭৩ রান। আরিফুল ৫৯ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন। এরপরও অবশ্য লড়াই চালিয়ে গেছে মোহামেডান। আরিফুলের বিদায়ের পর ছয় নম্বরে নামা মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে জুটি বাঁধেন মাহিদুল। ৫ চারে চলতি লিগে নিজের চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি করতে ৮২ বল খেলেছেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর হাত খুলে খেলতে শুরু করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত মোসাদ্দেককে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন তিনি। ৬ চার ও ৩ ছয়ে ১১৩ বলে ৮৮ রান করেন তিনি।

মাহিদুলের বিদায়ে ভাঙে ১০২ বলে ৮৬ রানের জুটি। তারপর দলকে জেতানোর দায়িত্ব বর্তায় মাহমুদউল্লাহর কাঁধে। কিন্তু ৬৩ বলে ৫৪ রান করা অভিজ্ঞ এই ব্যাটার আউট হলে জয়ের আশা শেষ হয়ে যায়। তবে ৪৫তম ওভারে সাইফ উদ্দিনকে জোড়া ছক্কা মেরে ক্ষীণ আশার সঞ্চার করেছিলেন আরিফুল হক। পরের ওভারে আরও একটি ছক্কা মারেন তিনি। দুর্ভাগ্য যে ওই ওভারেই দুই রান নিতে গিয়ে আফিফের সরাসরি থ্রোয়ে রানআউটে ফিরতে হয় ১৪ বলে ২৬ রান করা অলরাউন্ডারকে। মোসাদ্দেকের করা শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে কিছুক্ষণের জন্য উত্তেজনা ফিরিয়েছিলেন মুশফিক হোসেন। কিন্তু বাকি পাঁচ বলে আর কোনও বাউন্ডারি হজম করেননি মোসাদ্দেক। তাতেই আবাহনী স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করেছে আবাহনী। এদিন অবশ্য প্রিমিয়ার লিগের দুই সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এনামুল হক বিজয় ও নাঈম শেখের কেউ রান পাননি। দুই ওপেনার দলীয় ৩৬ রানে বিদায় নিয়েছেন। এনামুল হক বিজয়ের ব্যাট থেকে আসে ১১ এবং নাঈম শেখের ব্যাট থেকে আসে ২ রানের ইনিংস। তিন নম্বরে নামা মাহমুদুল হাসান জয়ও নিজের ইনিংসটাকে বড় করতে পারেননি। ২৩ বলে ১৯ রান করে আউট হয়েছেন এই ব্যাটার।

৪৩ রানে তিন উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেটে জাকের আলী অনিক ও আফিফ হোসেন মিলে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দিয়েছেন। দুজন মিলে গড়েন ৬৫ রানের জুটি। আফিফ ৪০ বলে ৩৬ রানে আউট হলেও জাকের আলী হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। শুভাগত হোমের বলে আউট হওয়ার আগে ৮২ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ে ৬৩ রান করেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। এরপর খুশদিল শাহকে নিয়ে অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন ৫২ রানের জুটিতে স্কোর দুইশ’ ছাড়িয়েছেন। ২৫ বলে ১৯ রান করে খুশদিল আউট হলেও মোসাদ্দেক খেলেন ৬৩ রানের ইনিংস। ৭০ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় মোসাদ্দেক নিজের ইনিংসটি সাজান। এরপর সাইফউদ্দিনের ১৮ বলে ১৬ এবং নাহিদুলের ১০ বলে ৯ রানের অপরাজিত ইনিংসে আবাহনী ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫৮ রান করেছে।

মোহামেডানের বোলারদের মধ্যে মুশফিক হাসান ও শুভাগত হোম দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া নাজমুল অপু ও খালেদ আহমেদ নেন একটি করে উইকেট।

ব্যাট হাতে ৭০ বলে ৬৩ রানের আক্রমনাত্মক ইনিংস উপহারের পর ৮ ওভারে ৫১ রানে ৪ উইকেট দখল করে ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা অলরাউন্ড পারফরমেন্স উপহার দিয়ে ম্যাচ সেরা হলেন আবাহনী অধিনায়ক মোসাদ্দেক।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জোর করে চাপিয়ে দেয়া শিক্ষা সম্ভাবনা নষ্ট করে দেয় : হাসনাত আব্দুল্লাহ

শেষ বলে লড়ে মোহামেডানকে হারাল আবাহনী

প্রকাশের সময় : ১১:২৯:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ মে ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

একটা সময় দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব আবাহনী-মোহামেডানের লড়াইয়ে থাকতো বাড়তি উত্তেজনা। সময়ের পরিক্রমায় সেই দৃশ্য একেবারেই হারিয়ে গেছে। শুরুতে তেমন কিছুর ছাপ না থাকলেও শেষে দিকে এসে রোমাঞ্চের দেখা মিলেছে। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২০ রান! কঠিন সেই সমীকরণে প্রথম বলেই ছক্কা মেরে নাটকীয়তার সৃষ্টি করেছিলেন মোহামেডানের মুশফিক হোসেন। কিন্তু এক বল পর তাকে আউট করে সব অনিশ্চয়তা দূরে ঠেলে টানা ৮ ম্যাচ জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেন আবাহনীর অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন।

এই জয়ে ১২ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেছে আবাহনী।

সোমবার (১ মে)  মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে মোহামেডানকে ২৫৯ রানের লক্ষ্য দেয় মোসাদ্দেকরা। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ঠিক যেভাবে শুরুর প্রয়োজন ছিল সেটি করতে পারেনি মোহামেডান। ১২ রানে দলের টপঅর্ডার তিন ব্যাটারকে হারিয়ে ম্যাচ থেকেই ছিটকে যায় ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি। অধিনায়ক ইমরুল ১ রানে আউটের পর অফফর্মে থাকা সৌম্য ৮ রান করতে পেরেছেন। জ্যাক লিন্টটের বদলে উড়িয়ে আনা কামিন্দু মেন্ডিসও ১ রানের বেশি করতে পারেননি।

দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেটে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও আরিফুল ইসলাম মিলে প্রতিরোধ গড়েন। এই জুটিতে তারা সংগ্রহ করেন ৭৩ রান। আরিফুল ৫৯ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন। এরপরও অবশ্য লড়াই চালিয়ে গেছে মোহামেডান। আরিফুলের বিদায়ের পর ছয় নম্বরে নামা মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে জুটি বাঁধেন মাহিদুল। ৫ চারে চলতি লিগে নিজের চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি করতে ৮২ বল খেলেছেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর হাত খুলে খেলতে শুরু করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত মোসাদ্দেককে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন তিনি। ৬ চার ও ৩ ছয়ে ১১৩ বলে ৮৮ রান করেন তিনি।

মাহিদুলের বিদায়ে ভাঙে ১০২ বলে ৮৬ রানের জুটি। তারপর দলকে জেতানোর দায়িত্ব বর্তায় মাহমুদউল্লাহর কাঁধে। কিন্তু ৬৩ বলে ৫৪ রান করা অভিজ্ঞ এই ব্যাটার আউট হলে জয়ের আশা শেষ হয়ে যায়। তবে ৪৫তম ওভারে সাইফ উদ্দিনকে জোড়া ছক্কা মেরে ক্ষীণ আশার সঞ্চার করেছিলেন আরিফুল হক। পরের ওভারে আরও একটি ছক্কা মারেন তিনি। দুর্ভাগ্য যে ওই ওভারেই দুই রান নিতে গিয়ে আফিফের সরাসরি থ্রোয়ে রানআউটে ফিরতে হয় ১৪ বলে ২৬ রান করা অলরাউন্ডারকে। মোসাদ্দেকের করা শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে কিছুক্ষণের জন্য উত্তেজনা ফিরিয়েছিলেন মুশফিক হোসেন। কিন্তু বাকি পাঁচ বলে আর কোনও বাউন্ডারি হজম করেননি মোসাদ্দেক। তাতেই আবাহনী স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করেছে আবাহনী। এদিন অবশ্য প্রিমিয়ার লিগের দুই সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এনামুল হক বিজয় ও নাঈম শেখের কেউ রান পাননি। দুই ওপেনার দলীয় ৩৬ রানে বিদায় নিয়েছেন। এনামুল হক বিজয়ের ব্যাট থেকে আসে ১১ এবং নাঈম শেখের ব্যাট থেকে আসে ২ রানের ইনিংস। তিন নম্বরে নামা মাহমুদুল হাসান জয়ও নিজের ইনিংসটাকে বড় করতে পারেননি। ২৩ বলে ১৯ রান করে আউট হয়েছেন এই ব্যাটার।

৪৩ রানে তিন উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেটে জাকের আলী অনিক ও আফিফ হোসেন মিলে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দিয়েছেন। দুজন মিলে গড়েন ৬৫ রানের জুটি। আফিফ ৪০ বলে ৩৬ রানে আউট হলেও জাকের আলী হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। শুভাগত হোমের বলে আউট হওয়ার আগে ৮২ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ে ৬৩ রান করেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। এরপর খুশদিল শাহকে নিয়ে অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন ৫২ রানের জুটিতে স্কোর দুইশ’ ছাড়িয়েছেন। ২৫ বলে ১৯ রান করে খুশদিল আউট হলেও মোসাদ্দেক খেলেন ৬৩ রানের ইনিংস। ৭০ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় মোসাদ্দেক নিজের ইনিংসটি সাজান। এরপর সাইফউদ্দিনের ১৮ বলে ১৬ এবং নাহিদুলের ১০ বলে ৯ রানের অপরাজিত ইনিংসে আবাহনী ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫৮ রান করেছে।

মোহামেডানের বোলারদের মধ্যে মুশফিক হাসান ও শুভাগত হোম দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া নাজমুল অপু ও খালেদ আহমেদ নেন একটি করে উইকেট।

ব্যাট হাতে ৭০ বলে ৬৩ রানের আক্রমনাত্মক ইনিংস উপহারের পর ৮ ওভারে ৫১ রানে ৪ উইকেট দখল করে ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা অলরাউন্ড পারফরমেন্স উপহার দিয়ে ম্যাচ সেরা হলেন আবাহনী অধিনায়ক মোসাদ্দেক।