Dhaka রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
টিএফআই সেলে গুম-নির্যাতন

শেখ হাসিনা হাসিনা ও সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ ২১ ডিসেম্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগের শাসনামলে র‌্যাবের টিএফআই সেলে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক-বর্তমান সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এদিন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত তিন আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ। সাতজনের পক্ষে শুনানি করেন তাবারক হোসেন। পলাতক সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এম হাসান ইমাম, তিনজনের পক্ষে সুজাদ মিয়া এবং শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী মো. আমির হোসেন শুনানি করেন। শুনানিতে প্রত্যেক আইনজীবী নিজ নিজ মক্কেলের অব্যাহতি চান।

অন্যদিকে, প্রসিকিউশনের পক্ষে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আবেদন জানান প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশের জন্য ২১ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল।

এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে প্রসিকিউশনের শুনানি শেষ হয়। সেদিন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শুনানিতে টিএফআই সেলে গুম ও নির্যাতনের ভয়াবহ বর্ণনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গুম হওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে দুটি পরিণতি নির্ধারিত হতো—ভাগ্য ভালো হলে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো। আর অন্য ক্ষেত্রে দীর্ঘ সাত থেকে আট বছর গুম করে অজ্ঞাত স্থানে ফেলে রাখা হতো। এছাড়া, আরও ভয়াবহ নির্যাতনের তথ্যও তুলে ধরেন তিনি।

রোববার সকাল ১০টার পর ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে গ্রেফতার হওয়া ১০ জন সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন—র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।

এ মামলায় পলাতক আসামিরা হলেন-সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র‌্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ এবং র‌্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. খায়রুল ইসলাম।

উল্লেখ্য, গত ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১০ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজির করতে দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন আদালত। নির্ধারিত সময়ে হাজির না হওয়ায় তাদের পক্ষে রাষ্ট্রীয় ডিফেন্স আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ৮ অক্টোবর প্রসিকিউশন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করলে তা আমলে নিয়ে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

আবহাওয়া

উত্তর বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

টিএফআই সেলে গুম-নির্যাতন

শেখ হাসিনা হাসিনা ও সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ ২১ ডিসেম্বর

প্রকাশের সময় : ০৪:০৯:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগের শাসনামলে র‌্যাবের টিএফআই সেলে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক-বর্তমান সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এদিন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত তিন আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ। সাতজনের পক্ষে শুনানি করেন তাবারক হোসেন। পলাতক সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এম হাসান ইমাম, তিনজনের পক্ষে সুজাদ মিয়া এবং শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী মো. আমির হোসেন শুনানি করেন। শুনানিতে প্রত্যেক আইনজীবী নিজ নিজ মক্কেলের অব্যাহতি চান।

অন্যদিকে, প্রসিকিউশনের পক্ষে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আবেদন জানান প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশের জন্য ২১ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল।

এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে প্রসিকিউশনের শুনানি শেষ হয়। সেদিন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শুনানিতে টিএফআই সেলে গুম ও নির্যাতনের ভয়াবহ বর্ণনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গুম হওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে দুটি পরিণতি নির্ধারিত হতো—ভাগ্য ভালো হলে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো। আর অন্য ক্ষেত্রে দীর্ঘ সাত থেকে আট বছর গুম করে অজ্ঞাত স্থানে ফেলে রাখা হতো। এছাড়া, আরও ভয়াবহ নির্যাতনের তথ্যও তুলে ধরেন তিনি।

রোববার সকাল ১০টার পর ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে গ্রেফতার হওয়া ১০ জন সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন—র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।

এ মামলায় পলাতক আসামিরা হলেন-সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র‌্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ এবং র‌্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. খায়রুল ইসলাম।

উল্লেখ্য, গত ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১০ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজির করতে দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন আদালত। নির্ধারিত সময়ে হাজির না হওয়ায় তাদের পক্ষে রাষ্ট্রীয় ডিফেন্স আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ৮ অক্টোবর প্রসিকিউশন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করলে তা আমলে নিয়ে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।