Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনার বাজেটের সঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেটের কোনো পার্থক্য নেই : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

শেখ হাসিনার বাজেটের সঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেটের কোনো পার্থক্য নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

মঙ্গলবার (৩ মে) দুপুরে পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী তাঁতি দলের উদ্যোগে দুস্থদের ঈদ সামগ্রী বিতরণকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, আপনারা (সরকার) ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন। এই বাজেটের শেখ হাসিনার সঙ্গে পার্থক্য কী বলুন? শেখ হাসিনাও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল, আপনারাও দিয়েছেন।

রিজভী বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ ভালো চলুক। দেশে সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। নির্বাচনটা কবে হবে আর কত দেরি হবে জিজ্ঞেস করলে উপদেষ্টা চুপ করে থাকেন। একটা সময় সংস্কারকে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী করেছে। সংস্কারকে সামনে নিয়ে এসেছে। এখন তাও বলছে না।

বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার প্রসঙ্গ তুলে রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনাও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল আপনারাও দিয়েছেন। এটাতো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ডক্টর ইউনূসের সরকার। এই সরকারের হাত দিয়ে কেন খারাপ কাজ হবে এটা মানুষ জানতে চায়।’

‘সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার এই বাজেটের ২৩ শতাংশের ওপরে যাবে শুধুমাত্র প্রশাসনের বেতনের জন্যে। আর সুদের টাকা যাবে ১৪ শতাংশ। তাহলে গরিব মানুষের জন্য কী রেখেছেন? লাভের গুড় তো পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলছে। তাহলে জনগণের জন্য কী করলেন?’

রিজভী বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কম। কিন্তু আমাদের তো বেশি দরকার স্বাস্থ্য খাত ও শিক্ষা খাতে। সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা তো সরকারই দেখবে। ডক্টর ইউনূস ক্ষমতায় আসার আগে অনেক কথা বলেছেন। এখনতো তিনি নিজে ক্ষমতায়। তিনি তো গরিব মানুষকে দেখবেন। তিনি বলেছিলেন দরিদ্রকে জাদুঘরে পাঠান। এখন দেখছি উনার হাত দিয়ে লুটেরা, ব্যাংক ডাকাতরা তাদের হাতে কালো টাকা, তারা সাদা করার সুযোগ পাচ্ছে। যদি শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কম থাকে তাহলে মানুষের কল্যাণে যে লড়াই ১৫ বছর ধরে হয়েছে সর্বশেষ জুলাই আগস্টে ছাত্র-জনতা আত্মহতি দিয়েছে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের প্রতিটি গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল ডক্টর ইউনূসকে সমর্থন দিয়েছে যে আপনি বেশ ভালো চালান। তার হাত দিয়ে যে বাজেট সে বাজেট গরিবকে আরো গরিব করা এবং মুদ্রাস্ফীতি কমানোরটা তো দেখতে পাচ্ছি না। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের চাপ আরও বাড়বে।’

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিভিন্ন স্মৃতি তুলে ধরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে শুধু নেতা বললে হবে না, তিনি একটা যুগ সৃষ্টি করা নেতা। জনগণ তাকে নাম দিয়েছে রাখাল রাজা। তিনি মাইলের পর মাইল হেঁটে জনগণের দুর্দশা উপলব্ধি করেছেন। তিনি অনেক ভালো ভালো কর্মসূচি করেছেন। জিয়াউর রহমান জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান এমন সময় ক্ষমতায় এসেছেন যখন একদিকে রাজনৈতিক সংকট এবং অন্যদিকে অর্থনৈতিক সংকট। ৭৪ এর দুর্ভিক্ষের সময় ক্ষুদা-দারিদ্র্যায় মানুষ এক মুঠো ভাত পাচ্ছে না। এসমস্ত বিপর্যস্তকর পরিস্থিতির পরে তিনি ক্ষমতায় এসেছেন। তিনি এগুলো রক্ষার মাধ্যমে কী করে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে, মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে, একারণে তিনি সারাদেশে খাল খনন করেছেন। খাদ্য উৎপাদনের জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। অল্প সুদে তিনি ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ দেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছেন। এভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে গোটা জাতিকে তিনি একটা শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছেন।’

তাঁতি দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

শেখ হাসিনার বাজেটের সঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেটের কোনো পার্থক্য নেই : রিজভী

প্রকাশের সময় : ০৪:১৭:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

শেখ হাসিনার বাজেটের সঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেটের কোনো পার্থক্য নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

মঙ্গলবার (৩ মে) দুপুরে পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী তাঁতি দলের উদ্যোগে দুস্থদের ঈদ সামগ্রী বিতরণকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, আপনারা (সরকার) ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন। এই বাজেটের শেখ হাসিনার সঙ্গে পার্থক্য কী বলুন? শেখ হাসিনাও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল, আপনারাও দিয়েছেন।

রিজভী বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ ভালো চলুক। দেশে সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। নির্বাচনটা কবে হবে আর কত দেরি হবে জিজ্ঞেস করলে উপদেষ্টা চুপ করে থাকেন। একটা সময় সংস্কারকে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী করেছে। সংস্কারকে সামনে নিয়ে এসেছে। এখন তাও বলছে না।

বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার প্রসঙ্গ তুলে রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনাও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল আপনারাও দিয়েছেন। এটাতো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ডক্টর ইউনূসের সরকার। এই সরকারের হাত দিয়ে কেন খারাপ কাজ হবে এটা মানুষ জানতে চায়।’

‘সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার এই বাজেটের ২৩ শতাংশের ওপরে যাবে শুধুমাত্র প্রশাসনের বেতনের জন্যে। আর সুদের টাকা যাবে ১৪ শতাংশ। তাহলে গরিব মানুষের জন্য কী রেখেছেন? লাভের গুড় তো পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলছে। তাহলে জনগণের জন্য কী করলেন?’

রিজভী বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কম। কিন্তু আমাদের তো বেশি দরকার স্বাস্থ্য খাত ও শিক্ষা খাতে। সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা তো সরকারই দেখবে। ডক্টর ইউনূস ক্ষমতায় আসার আগে অনেক কথা বলেছেন। এখনতো তিনি নিজে ক্ষমতায়। তিনি তো গরিব মানুষকে দেখবেন। তিনি বলেছিলেন দরিদ্রকে জাদুঘরে পাঠান। এখন দেখছি উনার হাত দিয়ে লুটেরা, ব্যাংক ডাকাতরা তাদের হাতে কালো টাকা, তারা সাদা করার সুযোগ পাচ্ছে। যদি শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কম থাকে তাহলে মানুষের কল্যাণে যে লড়াই ১৫ বছর ধরে হয়েছে সর্বশেষ জুলাই আগস্টে ছাত্র-জনতা আত্মহতি দিয়েছে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের প্রতিটি গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল ডক্টর ইউনূসকে সমর্থন দিয়েছে যে আপনি বেশ ভালো চালান। তার হাত দিয়ে যে বাজেট সে বাজেট গরিবকে আরো গরিব করা এবং মুদ্রাস্ফীতি কমানোরটা তো দেখতে পাচ্ছি না। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের চাপ আরও বাড়বে।’

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিভিন্ন স্মৃতি তুলে ধরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে শুধু নেতা বললে হবে না, তিনি একটা যুগ সৃষ্টি করা নেতা। জনগণ তাকে নাম দিয়েছে রাখাল রাজা। তিনি মাইলের পর মাইল হেঁটে জনগণের দুর্দশা উপলব্ধি করেছেন। তিনি অনেক ভালো ভালো কর্মসূচি করেছেন। জিয়াউর রহমান জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান এমন সময় ক্ষমতায় এসেছেন যখন একদিকে রাজনৈতিক সংকট এবং অন্যদিকে অর্থনৈতিক সংকট। ৭৪ এর দুর্ভিক্ষের সময় ক্ষুদা-দারিদ্র্যায় মানুষ এক মুঠো ভাত পাচ্ছে না। এসমস্ত বিপর্যস্তকর পরিস্থিতির পরে তিনি ক্ষমতায় এসেছেন। তিনি এগুলো রক্ষার মাধ্যমে কী করে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে, মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে, একারণে তিনি সারাদেশে খাল খনন করেছেন। খাদ্য উৎপাদনের জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। অল্প সুদে তিনি ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ দেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছেন। এভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে গোটা জাতিকে তিনি একটা শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছেন।’

তাঁতি দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।