নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না। শেখ হাসিনা যে ওয়াদা করেছিলেন দশ টাকা কেজি চাল খাওয়াবেন। কৃষকের ঘরে-ঘরে সার পৌঁছে দেবেন সেটা দিতে পারেন নাই। ঘরে-ঘরে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিলেন কিন্তু শিক্ষিত বেকার যুবক চাকরি না পেয়ে অনেকে আত্মহত্যা করছে। একটা কঠিন সময় পার করছে দেশ।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন করতে দেয়া হবে না। আর পদত্যাগ না করলে প্রধানমন্ত্রীর জন্য কষ্টদায়ক বিদায় অপেক্ষা করছে বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, আপনি আর একবার ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশে দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। দেশে দেশে রাজনীতিবিদদের পাঠাচ্ছেন। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে লবিং করছেন। কোনো লবিংয়ে কাজ হবে না। ২০১৪ ও ১৮ সালের নির্বাচনের মতো বেহায়াপনা নির্বাচন আর এদেশের মানুষ হতে দেবে না। ২০১৪ ও ১৮ সালের নির্বাচনের মতো সাজানো গোছানো নির্বাচন করে আপনি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।
তিনি বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো আপনার (হাসিনা) থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। অতি সম্প্রতি ভারত যেভাবে কথা বলছে তাতে মনে হচ্ছে ভারতও আপনার সঙ্গে নাই।
দুদু বলেন, দেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে, আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হবে। দেশের জনগণ, পেশাজীবী, রাজনীতিবিদরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। এটা যদি আপনি বুঝতে অক্ষম হন তাহলে আপনার বিদায়টা খুব ভালোভাবে হবে, এটা এখন আমরা বলতে পারবো না।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, নির্বাচন হবে এ বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের শুরুতে। আর সে নির্বাচন হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না। হওয়ার কোনো কারণ নাই। আপনি (শেখ হাসিনা) যে ওয়াদা করেছিলেন দশ টাকা কেজি চাল খাওয়াবেন। কৃষকের ঘরে ঘরে সার পৌঁছে দেবেন সেটা দিতে পারেন নাই। এখন তিন চার গুণ বেশি দাম। ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিলেন কিন্তু কোটি কোটি শিক্ষিত বেকার যুবক চাকরি না পেয়ে অনেকে আত্মহত্যা করছে। একটা কঠিন সময় পার করছে দেশ।
দল মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে দুদু বলেন, এই অপদার্থ সরকারকে পদত্যাগ করতে যে আন্দোলন চলছে সেটা আরও জোরদার করতে রাস্তায় নেমে আসতে হবে। দেশের এই অবস্থার একমাত্র মীমাংসা রাজপথে হতে পারে। যা আগে ১৯৯০ হয়েছে। ১৯৮৯ তে হয়েছে, আশা করি এবারও হবে।
নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, আসেন সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। এই অক্ষম সরকারকে পদত্যাগ করতে চলা আন্দোলন আরও জোরদার করতে রাস্তায় নেমে আসি। দেশের এই অবস্থার একমাত্র মীমাংসা রাজপথে হতে পারে। এর আগে ৯০ হয়েছে। ৮৯ তে হয়েছে এবারও হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, একটি মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি অসুস্থ। ডাক্তার বলেছে বাংলাদেশের তার আর চিকিৎসা নাই। তারপরও তাকে এই সরকার বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে দিচ্ছে না। কয়েকজন এমপি ও মন্ত্রী, যারা দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, তারাও বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। কিন্তু খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে দিচ্ছে না।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সহ তথ্য বিষয়ক সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেন, মৎসজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি রাশেদুল হক, বিএনপি নেতা গোলাম সরোয়ার সরকার, মোক্তার আকন্দ প্রমুখ।