নিজস্ব প্রতিবেদক :
ভারতের সঙ্গে বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিল্লিকে পাঠিয়েছে ঢাকা।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র বলেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে ঢাকা প্রয়োজনীয় নথি দিল্লিতে পাঠিয়েছে।
রফিকুল আলম বলেন, শেখ হাসিনা ইস্যুতে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে প্রতীক্ষা করবে বাংলাদেশ। এছাড়া ভারতে অবস্থানকারী অন্য নেতাদের ফেরাতে আন্তর্জাতিক নিয়ম প্রতিপালন করা হবে কি না সেটি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার বিষয়।
এদিকে, জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্টকে স্বাগত জানিয়ে রফিকুল আলম বলেন, প্রতিবেদনটি যে কোনো মানুষের বিবেককে নাড়া দেবে। প্রতিবেশী ভারতও সেই বিষয়টি আমলে নিয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন মুখপাত্র।
অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে মুখপাত্র বলেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান চলাকালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদন সারা বিশ্বই জেনে গেছে। এটা ভারতের সঙ্গে ভাগাভাগি করার কোনো প্রাসঙ্গিকতা নেই। এই প্রতিবেদন বাংলাদেশের নিজস্ব ব্যবহারের জন্য, এটা আমরা ভারতের সঙ্গে কেন শেয়ার করব?
জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী বিভিন্ন সংস্থা তাদের নির্দেশনা ও করণীয় ঠিক করবে। এই প্রতিবেদন যে কোনো মানুষের মনে নাড়া দেবে, বলেন মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, লিবিয়া থেকে অবৈধভাবে ইউরোপের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া একটি নৌকা ভূমধ্যসাগরে ডুবে ৭ বাংলাদেশি নিখোঁজ হয়েছেন। এ ঘটনায় জীবিত উদ্ধার হয়েছেন দুজন বাংলাদেশি।
তিনি বলেন, লিবিয়ার বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অন্যান্য বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পাওয়া যায়, লিবিয়ার ত্রিপলি হতে ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সমুদ্র উপকূলবর্তী শহর জাওয়াইয়া হতে অবৈধভাবে ইউরোপের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া একটি নৌকা ভূমধ্যসাগরের মাঝপথে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। নৌকাটি গত সপ্তাহে লিবিয়া উপকূল ছেড়ে যায় বলে ধারণা করা হয়।
এ ঘটনায় ৩৭ জনকে জীবিত ও ১৪ জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। জীবিত উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৩৫ জন পাকিস্তানি অভিবাসী ও দুজন বাংলাদেশি অভিবাসী। মৃত উদ্ধারদের সবাই পাকিস্তানি অভিবাসী বলে ত্রিপলীস্থ পাকিস্তান দূতাবাস কর্তৃক নিশ্চিত করা হয়েছে।
নৌকাটিতে ৬৩ পাকিস্তানি, ৯ বাংলাদেশি ও দুজন মিশরীয় নাগরিক ছিল বলে জানা যায়। জীবিত উদ্ধার দুজন বাংলাদেশিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্থানীয় বির আল গানাম জেলখানায় স্থানান্তর করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনার পর সাতজন বাংলাদেশি নিখোঁজ রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি জানার পরপরই দূতাবাসের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) আঞ্চলিক পরিচালক, কোস্ট গার্ড ও সংশ্লিষ্ট থানাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। জীবিত উদ্ধার বাংলাদেশি নাগরিকদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্যও দূতাবাস হতে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।