নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আমাদের মূল লক্ষ্য তাকে (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশে এনে বিচার করা। জাতিসংঘের প্রতিবেদনের পর তাকে ফেরত পাঠাতে চাপ তৈরি হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
শফিকুল আলম বলেন, ‘কিছুদিন আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কার্যালয় যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে-তাতে স্পষ্ট কী ধরনের অপরাধ উনি করেছেন। তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে। জাতিসংঘ এবং কিছু কিছু মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনের পর প্রচুর চাপ তৈরি হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারও তাকে বিচারের জন্য দেশে ফেরত আনতে যা কিছু করা দরকার, তার সবই করছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, জাতিসংঘ ও কিছু-কিছু মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের পর অনেক চাপ তৈরি হয়েছে। এই চাপের একটা নমুনা দেখেছেন যে ইন্ডিয়া টুডে একটা জরিপ করেছে, সেখানে দেখা গেছে ৫৫ শতাংশ চায়— শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে। কিছু শতাংশ চাচ্ছে, তাকে অন্যদেশে দিতে। মাত্র ১৬-১৭ শতাংশ ভারতীয় চায় শেখ হাসিনাকে তাদের দেশে রাখতে।
শফিকুল আলম বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) গত ১৫-১৬ বছরে যে নৃশংস স্বৈরাচারী ব্যবস্থা চালিয়েছেন, এটা স্পষ্টভাবে এসেছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে। আমার মনে হয় এখন চাপ আরও হবে। আমরা তাকে ফেরত চেয়ে ভারতকে একটা চিঠি দিয়েছি। চাপটা অব্যাহত থাকবে। আমরা চাইব তাকে এনে সশরীরে হাজির করে বিচার করতে। বাংলাদেশের মানুষ তার বিচার দেখতে চায়। এটা আমাদের অগ্রাধিকার এবং আমরা এটার জন্য যত কাজ করা দরকার সব করছি।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনে আসার বিষয়ে সরকারের অবস্থান কী, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে আমরা বারবার বলেছি। বাংলাদেশের জনগণ এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে আমাদের একটাই কথা— আওয়ামী লীগের নেতা, অ্যাক্টিভিস্ট, সাপোর্টার, যারা জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত বা তারও আগে গুম-খুনে যারা জড়িত, যারা ম্যাসাকারে জড়িত, দুর্নীতিতে জড়িত, সবার বিচার হবে। এটা হচ্ছে মাস্ট। এই জায়গাটা হবে, তারপর বাংলাদেশের মানুষ, রাজনৈতিক দল তারা সিদ্ধান্ত নেবেন যে তারা আওয়ামী লীগের বিষয়ে কী ভাবছেন বা এটার ভবিষ্যৎ কী হবে।’
তিনি বলেন, গত কিছুদিন আইসিটি এবং ডিজিটালাইজেশনকে ঘিরে অনেকগুলো দুর্নীতি সংবাদ গণমাধ্যমে বেরিয়েছে। ড. ইউনূস চাচ্ছেন আইসিটি খাতের দুর্নীতি নিয়ে একটা শ্বেতপত্র হোক। এই শ্বেতপত্র তৈরির জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটিতে বিশ্বের স্বনামধন্য… যারা আইসিটি নিয়ে কাজ করেছেন তাদের যুক্ত করা হবে। তাদের মূল কাজ হবে ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে যে ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে, সেটা কীভাবে করেছে, কত টাকা এখান থেকে পাচার হয়েছে তা বের করা। সুনির্দিষ্টভাবে কোন খাতে কত টাকা পাচার হয়েছে তার পুরো বিষয়টি দেখা।
আগামী দুই মাসের মধ্যে কমিটি একটি দুর্নীতির শ্বেতপত্র বের করবে বলেও জানান শফিকুল আলম।
প্রধার উপদেষ্টার দুবাই সফরের প্রসঙ্গ টেনে শফিকুল ইসলাম বলেন, দুবাইয়ে বাংলাদেশি শ্রমিক নিষেধাজ্ঞায় রয়েছে। এই নিয়ে ড. ইউনূস সেখানকার ৫ থেকে ৬ জন মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। আমরা আশা করছি, এই নিষেধাজ্ঞা দ্রুত উঠে যাবে। সেখানে আবারও বাংলাদেশি শ্রমিক যেতে পারবে। এই নিয়ে সরকারের কাজ চলমানও রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম মজুমদার।