Dhaka বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে সংলাপ করতে হবে : আমীর খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলন, আলোচনা বা সংলাপ করতে কোন সমস্যা নেই; তবে তার আগে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে।

শুক্রবার (২০ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদের উদ্যোগে ‘নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনই জাতীয় সংকট উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

তিনি বলেন, সংলাপের জন্য কোন শর্ত দেয়া যাবে না। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, চোর যদি গৃহস্থকে দরজা খোলা রাখার শর্ত দেয়, তাহলে কি মানা যাবে? শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাহলে তিনি কীভাবে সংলাপের জন্য শর্ত দেন?

আমির খসরু বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর অনেক আন্দোলন হয়েছে; কিন্তু এবারের মত এত দল একসাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আর কখনো আন্দোলন করেনি। বাংলাদেশের মালিকানা ফিরে পেতে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করছে। দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ করে আমরা আবার দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনবো।

সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা মরণপণ লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটা (আন্দোলন) ক্ষমতার লড়াই না, দেশটাকে বাঁচানোর লড়াই, বাংলাদেশের মুক্তির লড়াই। মুক্তিযুদ্ধের পরে এখন দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ চলছে। এটাকে মাথায় রেখে জনগণ আজ রাস্তায় নেমেছে। এর সফল সমাপ্তির জন্য জীবন দিতে হয়ৃ. আমি মনে করি, আমাদের নেতাকর্মীরা সেই পথে এসে পৌঁছেছে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা যেখানে গিয়েছি- এই যে রোড মার্চ হয়ে গেলো, গাড়ির দরজা ভেঙে ফেলতেছেৃ লোকজন বলছে, স্যার প্রোগ্রাম দেন, আমরা জীবন দিতে রাজি আছি। এরপর তো আর কিছু বলার থাকে না। যারা জীবন দেয় তাদের সঙ্গে কেউ লড়াই করে কোনোদিন জিততে পারে না।

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য উদ্ধৃতি করে বিএনপির এ নেতা বলেন, আমাদের এই সংগ্রাম ৩৬ দলের ইস্যু নয়, এটা ১৮ কোটি মানুষের মুক্তির সংগ্রামের ইস্যু। এটাকে মাথায় রেখে আমরা ৩১ দফা দিয়েছি যে, দেশকে আবার পুনর্গঠন করার জন্য, বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা সবাই মিলে ৩১ দফা দিয়েছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, আগামী নির্বাচনে জয়ী হলে আজকে যারা দেশকে মুক্ত করার আন্দোলন করছে- সবাইকে নিয়ে আমরা জাতীয় সরকার গঠন করবো। কারণ উনি বলেছেন, জাতি যে ক্রান্তিলগ্নে, জাতি যে গর্তের মধ্যে পড়েছে, এই জাতিকে যদি উদ্ধার করতে হয়- বিএনপি একা সরকার গঠন করে এর সমাধান দিতে পারবে না। এখানে জাতীয় ঐক্যের দরকার আছে। জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়ে আগে দেশকে বাঁচাতে হবে।

আমীর খসরু আরও বলেন, দেশে গত ১৫ বছর ভোট চুরির প্রকল্প করে সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায়। এবার আর এটা হতে দেওয়া হবে না। জনগণ এক হয়েছে, আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক বিশ্ব এক হয়েছে।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকার আবার ভোটচুরির প্রকল্প হাতে নিয়েছে। দেশের মানুষকে নির্বাচনের বাইরে রেখে রাষ্ট্রের সব সংস্থাকে ব্যবহার করে একতরফা নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে ক্ষমতাসীন দল। বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করছে সবচেয়ে বেশি।

তিনি বলেন, এসব করে আর লাভ হবে না। মানুষ রাস্তায় নেমেছে তাদের অধিকার ফিরে পেতে। বিশ্ব বিবেক বাংলাদেশের মানুষের পাশে আছে। ভোটচুরির সুদুরপ্রসারী প্রকল্প ভেঙে ফেলতে হবে।

পঞ্চদশ সংশোধনী আওয়ামী লীগের আজীবন ক্ষমতায় থাকার সংশোধনী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা বাতিল করে সারা জীবন ক্ষমতায় থাকার অপকৌশল করেছে। তারা অবৈধ-অসাংবিধানিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করেছিলো। সংবিধানের কথা বলে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করছে সরকার। অসাংবিধানিক ভাবে আদালতের কথা না শুনে সংবিধান সংশোধন করেছিলো তারা।’

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সভাপতি জাফর মাহমুদ। সংগঠনটির সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিনের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, নৈতিক সমাজের সভাপতি আমসা আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লুতফুর রহমান প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

কুড়িগ্রামে সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগে ৩০ গ্রামের মানুষ

শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে সংলাপ করতে হবে : আমীর খসরু

প্রকাশের সময় : ০৭:০৯:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলন, আলোচনা বা সংলাপ করতে কোন সমস্যা নেই; তবে তার আগে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে।

শুক্রবার (২০ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদের উদ্যোগে ‘নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনই জাতীয় সংকট উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

তিনি বলেন, সংলাপের জন্য কোন শর্ত দেয়া যাবে না। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, চোর যদি গৃহস্থকে দরজা খোলা রাখার শর্ত দেয়, তাহলে কি মানা যাবে? শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাহলে তিনি কীভাবে সংলাপের জন্য শর্ত দেন?

আমির খসরু বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর অনেক আন্দোলন হয়েছে; কিন্তু এবারের মত এত দল একসাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আর কখনো আন্দোলন করেনি। বাংলাদেশের মালিকানা ফিরে পেতে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করছে। দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ করে আমরা আবার দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনবো।

সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা মরণপণ লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটা (আন্দোলন) ক্ষমতার লড়াই না, দেশটাকে বাঁচানোর লড়াই, বাংলাদেশের মুক্তির লড়াই। মুক্তিযুদ্ধের পরে এখন দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ চলছে। এটাকে মাথায় রেখে জনগণ আজ রাস্তায় নেমেছে। এর সফল সমাপ্তির জন্য জীবন দিতে হয়ৃ. আমি মনে করি, আমাদের নেতাকর্মীরা সেই পথে এসে পৌঁছেছে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা যেখানে গিয়েছি- এই যে রোড মার্চ হয়ে গেলো, গাড়ির দরজা ভেঙে ফেলতেছেৃ লোকজন বলছে, স্যার প্রোগ্রাম দেন, আমরা জীবন দিতে রাজি আছি। এরপর তো আর কিছু বলার থাকে না। যারা জীবন দেয় তাদের সঙ্গে কেউ লড়াই করে কোনোদিন জিততে পারে না।

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য উদ্ধৃতি করে বিএনপির এ নেতা বলেন, আমাদের এই সংগ্রাম ৩৬ দলের ইস্যু নয়, এটা ১৮ কোটি মানুষের মুক্তির সংগ্রামের ইস্যু। এটাকে মাথায় রেখে আমরা ৩১ দফা দিয়েছি যে, দেশকে আবার পুনর্গঠন করার জন্য, বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা সবাই মিলে ৩১ দফা দিয়েছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, আগামী নির্বাচনে জয়ী হলে আজকে যারা দেশকে মুক্ত করার আন্দোলন করছে- সবাইকে নিয়ে আমরা জাতীয় সরকার গঠন করবো। কারণ উনি বলেছেন, জাতি যে ক্রান্তিলগ্নে, জাতি যে গর্তের মধ্যে পড়েছে, এই জাতিকে যদি উদ্ধার করতে হয়- বিএনপি একা সরকার গঠন করে এর সমাধান দিতে পারবে না। এখানে জাতীয় ঐক্যের দরকার আছে। জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়ে আগে দেশকে বাঁচাতে হবে।

আমীর খসরু আরও বলেন, দেশে গত ১৫ বছর ভোট চুরির প্রকল্প করে সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায়। এবার আর এটা হতে দেওয়া হবে না। জনগণ এক হয়েছে, আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক বিশ্ব এক হয়েছে।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকার আবার ভোটচুরির প্রকল্প হাতে নিয়েছে। দেশের মানুষকে নির্বাচনের বাইরে রেখে রাষ্ট্রের সব সংস্থাকে ব্যবহার করে একতরফা নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে ক্ষমতাসীন দল। বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করছে সবচেয়ে বেশি।

তিনি বলেন, এসব করে আর লাভ হবে না। মানুষ রাস্তায় নেমেছে তাদের অধিকার ফিরে পেতে। বিশ্ব বিবেক বাংলাদেশের মানুষের পাশে আছে। ভোটচুরির সুদুরপ্রসারী প্রকল্প ভেঙে ফেলতে হবে।

পঞ্চদশ সংশোধনী আওয়ামী লীগের আজীবন ক্ষমতায় থাকার সংশোধনী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা বাতিল করে সারা জীবন ক্ষমতায় থাকার অপকৌশল করেছে। তারা অবৈধ-অসাংবিধানিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করেছিলো। সংবিধানের কথা বলে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করছে সরকার। অসাংবিধানিক ভাবে আদালতের কথা না শুনে সংবিধান সংশোধন করেছিলো তারা।’

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সভাপতি জাফর মাহমুদ। সংগঠনটির সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিনের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, নৈতিক সমাজের সভাপতি আমসা আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লুতফুর রহমান প্রমুখ।