পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি :
শেখ পরিবারের সবাই চোর-ডাকাত বলে দাবি করেছেন জামায়াতের প্রয়াত নেতা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে শামীম সাঈদী । তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তবে, শেখ পরিবারের সবাই চোর-ডাকাত। শেখ মুজিবের ছেলে স্বাধীনতা যুদ্ধের পরবর্তী বাংলাদেশে ব্যাংক ডাকাতিসহ নানা ধরণের অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন। তার মেয়ে ১৪টি ব্যাংক ডাকাতি করেছে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) চব্বিশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি পৌরসভা চত্বরে নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত গণজমায়েত ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, তার ছেলে ৭১-পরবর্তী বাংলাদেশে ব্যাংক ডাকাতি করেছেন। তার মেয়েও বাংলাদেশের ব্যাংক ডাকাতি ও লুট করে চলে গেছেন। শেখ পরিবারের কোনো সদস্য বাংলাদেশে নেই। তারা চুরি-ডাকাতি করে বাংলাদেশ থেকে চলে গেছেন।
শামীম সাঈদী বলেন, সারা বাংলাদেশের রাস্তাঘাটের কাজ না করে বিল তুলে নিয়ে দেশ থেকে পালিয়েছে শেখ হাসিনা। কেবল শুধুমাত্র পিরোজপুরের রাস্তাঘাটের কাজ না করেই দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকা চুরি করে নিয়েছে তারা। তাই, আমরা এসব চোরদের বিপক্ষে।
তিনি বলেন, আমরা দুর্নীতির বিপক্ষে, আমরা সকল মেধার পক্ষে আছি ও থাকব। কোনো কোটার পক্ষে থাকবো না। আগামী দিনে সকল বৈষম্যর বিরুদ্ধে থাকতে চাই। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বলতে কিছু নেই। আমরা সবাই বাংলাদেশি। হাজার বছরের ঐতিহ্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রেখে তারপর এ বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসাবে গড়বো।
জামায়াতের এ নেতা আরও বলেন, জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে নির্দোষ প্রমাণ করে আদালত মুক্তি দিয়েছেন। এ নির্দোষ অর্ডারের মাধ্যমে প্রমাণ হয়, আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধীদের যে বিচার শুরু করেছিল, টোটাল বিচারটাই ছিল নাটক। মিথ্যা সাক্ষী ও নাটকের বিনিময়ে যে বিচারক, যে উকিলরা এ বিচার সাজিয়েছেন, যে বিচারকরা এ মামলার রায় দিয়েছেন তাদের প্রত্যেককেই বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
হিন্দুদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো সখ্যালঘু বা সংখ্যাগরিষ্ঠ নেই। আমাদের পাসপোর্ট বলে আমরা সবাই বাংলাদেশি। আমাদের সংগ্রামী আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন- এ দেশের হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃষ্টান সবার একটাই পরিচয়—সবাই বাংলাদেশি। এ দেশে কোনোপ্রকার সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগরিষ্ঠ চলবে না। আমার বাবা আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী যখন এমপি ছিলেন পিরোজপুরের হিন্দুরা নিরাপদে ছিল। হাসিনা সরকার তাকে ১৩ বছর জেলে রেখেই ক্ষান্ত হননি তাকে সুস্থাবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছেন। আগামীতে জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় এলে এ দেশের হিন্দুরাও নিরাপদ থাকবে। তাদের বাড়িঘর-দোকানপাট কিছুই বেদখল হবে না। আমরা হাজার বছরের ঐতিহ্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রেখে সোনার বাংলা গড়ব ইনশাআল্লাহ।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে কোনোপ্রকার চোখরাঙ্গানি চলবে না। পক্ষে থাকুন আর বিপক্ষে থাকুন ভদ্রমত থাকবেন। কোনো ধরনের অভদ্রতা, উশৃংখলতা জামায়াতে ইসলামী করে না সহ্যও করবে না। আপনাদের ভয় নাই। আমরা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির আপনাদের পাশে আছি। আপনারা আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা ভোট দিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে রাষ্ট্রপরিচালনার সুযোগ দেবেন।’
উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুর রশিদের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন ছারছিনা দরবার শরীফের ছোট হুজুর মাও. শাহ মো. আরিফ বিল্লাহ সিদ্দিকী, পিরোজপুর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাও. সিদ্দিকুল ইসলাম, আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি মাও. শফিকুল ইসলাম সহ স্থানীয় জামায়াতের নেতৃবৃন্দ। পরে সেখান থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি শুরু হয়ে পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।