Dhaka মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানানো সেই প্রধান শিক্ষিকা বরখাস্ত

পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি : 

অবশেষে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন নেছারাবাদ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোন্দকার জসিম আহমেদ।

সোমবার (৪ আগস্ট) উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পেয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে নেছারাবাদ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোন্দকার জসিম আহমেদ বলেন, বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে ওই স্কুলে আমরা তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের রিপোর্ট প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছেন। তদন্ত চলমান আছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে বিভাগীয় মামলাও হতে পারে। এমনকি স্থায়ীভাবে বহিষ্কারও হতে পারেন।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকার মোবাইলে ফোন দিলে তার স্বামী মো. হাফিজুর রহমান ফোন রিসিভ করে বলেন, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলেছেন আপনার একটা চিঠি আছে। অফিসে এসে নিয়ে যাবেন। তবে চাকরি থেকে বরখাস্তের বিষয়ে আমাদের কিছু বলেননি।

এদিকে বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে ঘিরে নেছারাবদে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই এটিকে স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর হস্তক্ষেপ এবং রাজনৈতিক প্রভাব বলেও মন্তব্য করছেন। আবার কেউকেউ ওই প্রধান শিক্ষিকাকে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর বলেও আখ্যায়িত করেছেন।

এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং শিক্ষক সমাজের একাংশ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ও অন্য একটি পক্ষ এর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৩ আগস্ট উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিনের অফিস কক্ষের দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলাব্যাপী উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার বিরোধিতা করলে প্রধান শিক্ষিকা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে। দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে আমার বাবা মইনউদ্দীন মাস্টার মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু না হলে স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টি হতো না। তাই তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমার বিদ্যালয় এই ছবি টানানো ছিল।

শিক্ষিকা শামিমা ইয়াছমিন বলেন, এছাড়া বিদ্যালয় থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি সরানোর জন্য আমার কাছে সরকারি কোনো নির্দেশনা আসেনি। তাই আমি ছবি সরাতে চাইনি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

হোমনা-মুরাদনগর সড়কের ১৪ কি.মি. খানাখন্দে বেহাল দশা

শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানানো সেই প্রধান শিক্ষিকা বরখাস্ত

প্রকাশের সময় : ১২:৫৬:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ অগাস্ট ২০২৫

পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি : 

অবশেষে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন নেছারাবাদ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোন্দকার জসিম আহমেদ।

সোমবার (৪ আগস্ট) উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পেয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে নেছারাবাদ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোন্দকার জসিম আহমেদ বলেন, বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে ওই স্কুলে আমরা তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের রিপোর্ট প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছেন। তদন্ত চলমান আছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে বিভাগীয় মামলাও হতে পারে। এমনকি স্থায়ীভাবে বহিষ্কারও হতে পারেন।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকার মোবাইলে ফোন দিলে তার স্বামী মো. হাফিজুর রহমান ফোন রিসিভ করে বলেন, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলেছেন আপনার একটা চিঠি আছে। অফিসে এসে নিয়ে যাবেন। তবে চাকরি থেকে বরখাস্তের বিষয়ে আমাদের কিছু বলেননি।

এদিকে বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে ঘিরে নেছারাবদে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই এটিকে স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর হস্তক্ষেপ এবং রাজনৈতিক প্রভাব বলেও মন্তব্য করছেন। আবার কেউকেউ ওই প্রধান শিক্ষিকাকে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর বলেও আখ্যায়িত করেছেন।

এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং শিক্ষক সমাজের একাংশ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ও অন্য একটি পক্ষ এর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৩ আগস্ট উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিনের অফিস কক্ষের দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলাব্যাপী উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার বিরোধিতা করলে প্রধান শিক্ষিকা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে। দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে আমার বাবা মইনউদ্দীন মাস্টার মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু না হলে স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টি হতো না। তাই তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমার বিদ্যালয় এই ছবি টানানো ছিল।

শিক্ষিকা শামিমা ইয়াছমিন বলেন, এছাড়া বিদ্যালয় থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি সরানোর জন্য আমার কাছে সরকারি কোনো নির্দেশনা আসেনি। তাই আমি ছবি সরাতে চাইনি।