Dhaka বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ৩১টি বিলাসবহুল গাড়ি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তরের নির্দেশ এনবিআরের

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিলুপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সদস্যদের নামে আমদানিকৃত অখালাসকৃত ৩১টি বিলাসবহুল গাড়ি জনস্বার্থে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি যানবাহন অধিদফতরে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

বুধবার (১২ নভেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি বিশেষ আদেশ জারি করেছে সংস্থাটি।

বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর জানায়, বিলুপ্ত দ্বাদশ সংসদ সদস্যদের জন্য বিশেষ শুল্কমুক্ত সুবিধায় উচ্চমূল্যের গাড়ি আমদানি করা হয়েছিল। তবে এই সুবিধা তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে কি না তা জানতে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস এনবিআরের কাছে নির্দেশনা চায়। পরে ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর এনবিআর জানায়, এসব গাড়ির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রযোজ্য নয় এবং আমদানিকারকদের স্বাভাবিক হারে শুল্ককর পরিশোধপূর্বক গাড়িগুলো খালাস করতে হবে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকরা শুল্ক-কর পরিশোধ না করায় কাস্টমস আইন, ২০২৩ এর ধারা ৯৪(৩) অনুযায়ী গাড়িগুলো নিলামে তোলা হয়। তবে কোনো নিলামকারী গাড়িগুলোর যৌক্তিক মূল্য প্রস্তাব না করায় সেগুলো বিক্রি করা সম্ভব হয়নি।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পরে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জনস্বার্থে এসব উচ্চমূল্যের গাড়ি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা এই ৩১টি গাড়ির মোট প্রদেয় শুল্ক ও করের পরিমাণ ২৬৯ কোটি ৬১ লাখ ৮৯ হাজার ৬০০ টাকা। এর মধ্যে একক গাড়ির সর্বোচ্চ শুল্ক-কর ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৮৩ হাজার ৩০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৮ কোটি ৬২ লাখ ৬৭ হাজার ৪০০ টাকা।

এনবিআর জানায়, ভবিষ্যতে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকরা যদি আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য শুল্ক-কর পরিশোধ করেন, তাহলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস শুল্কায়ন সম্পন্ন করে গাড়িগুলো তাদের অনুকূলে খালাস দিতে পারবে। সেক্ষেত্রে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট গাড়িগুলো কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে ফেরত দেবে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস সূত্রে জানা গেছে, বিলুপ্ত সংসদের বেশ কয়েকজন সাবেক সংসদ সদস্যের জন্য নির্ধারিত বিশেষ শুল্কমুক্ত কোটা ব্যবহার করে বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি করেছিলেন। তবে সংসদ ভেঙে যাওয়ার পর শুল্কমুক্ত সুবিধা কার্যকর না থাকায় এই গাড়িগুলো দীর্ঘদিন বন্দর এলাকায় খালাসহীন অবস্থায় পড়ে ছিল।

এর আগে সেপ্টেম্বরে এক অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, দ্বাদশ সংসদ সদস্যদের জন্য আমদানি করা ৩০টি গাড়ি সরকারকে দেওয়া হচ্ছে। নিলামে ভালো দর না পাওয়ায় এসব গাড়ি এখন সরকারকে দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

জানা যায়, ২০২৪ সালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এই গাড়িগুলো শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করেছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্যরা। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত বছরের ৬ আগস্ট সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়। শুল্কমুক্ত সুবিধাও বাতিল করে এনবিআর। তাতে এই গাড়িগুলো বন্দর থেকে আর ছাড় করেননি সাবেক সংসদ সদস্যরা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ৩১টি বিলাসবহুল গাড়ি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তরের নির্দেশ এনবিআরের

প্রকাশের সময় : ১২:৪৯:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিলুপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সদস্যদের নামে আমদানিকৃত অখালাসকৃত ৩১টি বিলাসবহুল গাড়ি জনস্বার্থে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি যানবাহন অধিদফতরে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

বুধবার (১২ নভেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি বিশেষ আদেশ জারি করেছে সংস্থাটি।

বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর জানায়, বিলুপ্ত দ্বাদশ সংসদ সদস্যদের জন্য বিশেষ শুল্কমুক্ত সুবিধায় উচ্চমূল্যের গাড়ি আমদানি করা হয়েছিল। তবে এই সুবিধা তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে কি না তা জানতে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস এনবিআরের কাছে নির্দেশনা চায়। পরে ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর এনবিআর জানায়, এসব গাড়ির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রযোজ্য নয় এবং আমদানিকারকদের স্বাভাবিক হারে শুল্ককর পরিশোধপূর্বক গাড়িগুলো খালাস করতে হবে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকরা শুল্ক-কর পরিশোধ না করায় কাস্টমস আইন, ২০২৩ এর ধারা ৯৪(৩) অনুযায়ী গাড়িগুলো নিলামে তোলা হয়। তবে কোনো নিলামকারী গাড়িগুলোর যৌক্তিক মূল্য প্রস্তাব না করায় সেগুলো বিক্রি করা সম্ভব হয়নি।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পরে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জনস্বার্থে এসব উচ্চমূল্যের গাড়ি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা এই ৩১টি গাড়ির মোট প্রদেয় শুল্ক ও করের পরিমাণ ২৬৯ কোটি ৬১ লাখ ৮৯ হাজার ৬০০ টাকা। এর মধ্যে একক গাড়ির সর্বোচ্চ শুল্ক-কর ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৮৩ হাজার ৩০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৮ কোটি ৬২ লাখ ৬৭ হাজার ৪০০ টাকা।

এনবিআর জানায়, ভবিষ্যতে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকরা যদি আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য শুল্ক-কর পরিশোধ করেন, তাহলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস শুল্কায়ন সম্পন্ন করে গাড়িগুলো তাদের অনুকূলে খালাস দিতে পারবে। সেক্ষেত্রে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট গাড়িগুলো কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে ফেরত দেবে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস সূত্রে জানা গেছে, বিলুপ্ত সংসদের বেশ কয়েকজন সাবেক সংসদ সদস্যের জন্য নির্ধারিত বিশেষ শুল্কমুক্ত কোটা ব্যবহার করে বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি করেছিলেন। তবে সংসদ ভেঙে যাওয়ার পর শুল্কমুক্ত সুবিধা কার্যকর না থাকায় এই গাড়িগুলো দীর্ঘদিন বন্দর এলাকায় খালাসহীন অবস্থায় পড়ে ছিল।

এর আগে সেপ্টেম্বরে এক অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, দ্বাদশ সংসদ সদস্যদের জন্য আমদানি করা ৩০টি গাড়ি সরকারকে দেওয়া হচ্ছে। নিলামে ভালো দর না পাওয়ায় এসব গাড়ি এখন সরকারকে দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

জানা যায়, ২০২৪ সালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এই গাড়িগুলো শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করেছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্যরা। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত বছরের ৬ আগস্ট সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়। শুল্কমুক্ত সুবিধাও বাতিল করে এনবিআর। তাতে এই গাড়িগুলো বন্দর থেকে আর ছাড় করেননি সাবেক সংসদ সদস্যরা।