নিজস্ব প্রতিবেদক :
শুধু স্বাস্থ্যসেবাই নয়, কমিউনিটি ক্লিনিকের কারণে দেশে মাতৃ ও শিশুমৃত্যু কমেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবায় সুফল পাচ্ছে জনগণ। এসব ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের পাশাপাশি মৃত্যুহারও কমেছে।
সেবা নিয়ে মানুষ নৌকা মার্কায় ভোট দেবে ভেবে ক্ষমতায় থাকাকালীন বিএনপি-জামায়াত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারসব কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছিল, বিএনপি-জামায়াত ২০০১ সালে সরকারে আসার পর সেগুলো বন্ধ করে দেয়। তবে বন্ধ করে দেওয়ার যুক্তি ছিল এই ক্লিনিকগুলো যদি চালু থাকে, তাহলে বাংলাদেশের মানুষ নাকি শুধু নৌকায় ভোট দেবে। তাদের ভোট দেবে না। তাই জনগণের যে স্বাস্থ্যসেবা দোরগোড়ায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা আমরা করেছিলাম, সেটি তারা বন্ধ করে দিয়েছিল।
সরকারপ্রধান বলেন, মানুষ বারবার ভোট নিয়ে নির্বাচিত করেছে বলেই মানুষের জন্য কাজ করতে পারছি।
জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বীকৃতি পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্বাস্থ্যসেবা সারা দেশের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, গ্রেনেড-বোমা-গুলি সব কিছু মুখোমুখি হয়েও আমি বেঁচে আছি এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে পারছি। এটাই সবচেয়ে বড় কথা।
দেশের জনগণকে ধন্যবাদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ধন্যবাদ আমার দেশবাসীকে, তারা যদি বার বার ভোট না দিতো, আর আমাকে সেবা করার সুযোগ না দিতো আমি তো আসতে পারতাম না। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, গ্রেনেড-বোমা-গুলি সব কিছু মুখোমুখি হয়েও আমি বেঁচেও আছি এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে পারছি। এটাই সবচেয়ে বড় কথা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি নিজেও জানতাম না যে প্রস্তাবটি (কমিউনিটি ক্লিনিকের বিষয়ে) কখন জাতিসংঘে উত্থাপিত হয়েছিল। প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে পাস হওয়ার পর জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি আমাকে অবহিত করেছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অভিজ্ঞতা আমরা সকলের সঙ্গে শেয়ার করবো। অনেক দেশ এভাবে স্বাস্থ্য সেবা দিতে পারেনি তাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। চিকিৎসা সেবা মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসা নিতে আসে সেটাই সবচেয়ে বড় কথা। ২০০১ সালে দোরগোড়ায় ক্ষমতায় এসে এটা বন্ধ করে দিল। তাদের বন্ধ করার যুক্তি হলো, কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে মানুষ যদি চিকিৎসা সেবা নেয় তাহলে সবাই নৌকায় ভোট দেবে। তাদের কেউ ভোট দেবে না এজন্য বন্ধ করে দিল। আমার খুব কষ্ট লাগলো, আমরা যে ক্লিনিক করলাম সেখানে শুধু আওয়ামী লীগের লোক চিকিৎসা নেবে না। জনগণ সেবা পাবে। সাধারণ মানুষ সেবা পাবে। ওইসব এলাকায় অন্য দলের সমর্থক আছে না? তাহলে বন্ধ কেন করলো?
এ সময় কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন শুরুর কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা প্রায় ১১ হাজার ঘর করেছিলাম। তার মধ্যে প্রায় ৪ হাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করে দিলাম। চালু করার ১ বছর পর আমরা একটা সার্ভে করলাম। যে এটা যে করে দিলাম রেজাল্ট কি আসে। মানুষ কতটুকু লাভবান হয়। এর মধ্যে বিশ্ব ব্যাংক থেকে শুরু করে অনেকে এগিয়ে এলো। এক বছর পর আমরা একটা জরিপ করলাম। তাতে দেখা গেল ৭০ শতাংশের ওপর এর সাফল্য। আমরা আরও উৎসাহিত হলাম যে ৪ হাজার চালুর পর, ১১ হাজার চালু করে দেওয়ার সমস্ত ব্যবস্থা করার সাথে সাথে আমাদের পাঁচ বছর সময় শেষ।
ভবিষ্যতে কমিউনিটি ক্লিনিক যাতে কেউ বন্ধ করতে না পারে সে জন্য ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে এটিকে একটি ট্রাস্টের আওতায় দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন সরকার প্রধান।