Dhaka রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শুধু বইয়ের কিছু লাইন সংস্কার করলেই তাকে সংস্কার বলে না : তারেক রহমান

যশোর জেলা প্রতিনিধি : 

শুধু বইয়ের কিছু লাইন সংষ্কার করলেই তাকে সংস্কার বলে না এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে যশোরের টাউন হল ময়দানে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য সাবেক মন্ত্রী মরহুম তরিকুল ইসলামের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে যশোর জেলা বিএনপি আয়োজিত স্মরণ সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, শুধু বইয়ের কিছু লাইন সংষ্কার করলেই তাকে সংস্কার বলে না। বেকারদের কর্মসংস্থান, নারীদের স্বাধীনতা, মানুষের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সুবিধা নিশ্চিত করতে পারলে তাকেই সংস্কার বলব।

তারেক রহমান বলেন, আজ অনেকে অনেক ধরনের সংস্কারের কথা বলছেন। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি মনে করি, যে কাজ করলে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে তাকেই সংস্কার বলে। যে সংষ্কার দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটে, সুশিক্ষা নিশ্চিত হয়, আমি তাকে সংষ্কার বলি। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারের পতন হলেও তার প্রেতাত্মারা এখনো রয়েছে। তারা নানাভাবে স্বৈরাচারের বীজ বপনের সুযোগ খুঁজছে।

প্রশাসনে থাকা স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা এখনো ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও এখনো ক্রান্তিকাল চলছে।দেশে সংস্কার প্রয়োজন এবং যে সংস্কার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে, সেটাকেই সংস্কার মনে করে বিএনপি।

আন্দোলন-সংগ্রামে তরিকুল ইসলামের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। শুধু তাই না, ওই সরকার মানুষের সব অধিকার ডাকাতি করেছিল।

তিনি বলেন, স্বৈরাচারের সন্ত্রাসী শাসন শেষ হলেও সেই শাসনের অবশিষ্ট প্রেতাত্মারা এখনো রাজনীতির ক্রান্তিকালে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে। আমাদের লক্ষ্য সেই অধিকার পুনরুদ্ধার করা, যা এই সরকার মানুষের কাছ থেকে ছিনতাই করেছে।

মরহুম তরিকুল ইসলামের স্মৃতিচারণা করে তারেক রহমান বলেন, ‘তিনি ছিলেন গণমানুষের নেতা। আন্দোলন-সংগ্রামে অবদানের জন্য জাতি যে কয়জনকে নিয়ে গর্ব করতে পারে, তরিকুল ইসলাম তাদের একজন। ২০১৩ সালের আন্দোলনে তিনি অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতা দেখিয়েছিলেন। আজকের এই অনুষ্ঠানে বিপুল জনসমাগম তার গণসম্পৃক্ততার সাক্ষ্য দেয়। তার শূন্যতা আমরা অনুভব করছি।’

তিনি বলেন, ২০০৮-এর পর স্বৈরাচার জাতির কাঁধে চেপে বসে। পতিত স্বৈরাচার মানুষের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছিল। ২০১৪, ১৮, ২৪ সালে মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। ছিনিয়ে নেওয়া অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য তরিকুল ইসলাম লড়ে গেছেন। তাকে আমরা যোদ্ধা হিসেবে চিনি। তিনি মানুষের রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করার লড়াই করেছেন আজীবন।

তিনি বলেন, আজকের নতুন প্রজন্মকে তরিকুল ইসলামের রাজনৈতিক জীবন ও শিষ্ঠাচার থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে লাভবান বা অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে যিনি বা যারা রাজনীতি করেন বা করেছেন তাদের পরিণতি দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। পতিত স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টদের পরিণতি কী হতে পারে তা দেশের মানুষ ৫ আগস্ট উপলব্ধি করেছে। তাই আগামীর বাংলাদেশ হতে হবে শোষণ, নির্যাতন ও বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ। মনে রাখতে হবে ঐক্যবদ্ধতার কোনো বিকল্প নেই।

তারেক রহমান বলেন, আজকের এই স্মরণ সভায় হাজারো মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে মরহুম তরিকুল ইসলাম কতটা জনপ্রিয় ছিলেন। তরিকুল ইসলাম কখনো আদর্শের সঙ্গে কোনো বেইমানি করেননি। বিগত স্বৈরাচার এরশাদ আমলে এবং ফ্যাসিস্ট পতিত স্বৈরাচার হাসিনার আমলে ও ওয়ান ইলেভেন সরকারের আমলে মরহুম তরিকুল ইসলাম বারবার কারাবরণ, হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন। কিন্তু তিনি কখনো তার আদর্শ থেকে বিন্দু মাত্র বিচ্যুত হননি।

তিনি বলেন, মরহুম তরিকুল ইসলামের সঙ্গে আমার কাজ করার বেশি অভিজ্ঞতা নেই। তারপরও যতটুকু সময় পেয়েছি ততটুকু সময়ে আমি তার কাছ থেকে মানুষের জন্য রাজনীতি করা শিখেছি। ওয়ান ইলেভেন সরকারের আমলে আমি ও মরহুম তরিকুল ইসলাম সাহেব একসঙ্গে কারাবরণ করেছি। একদিন পিজি হাসপাতালে কিছু সময়ের জন্য তার সঙ্গে আমার দেখা হয় ও খুব সামান্য কথা হয়। জীবনে প্রথম কারাবরণ করায় আমি কিছুটা নার্ভাস ছিলাম। আমাকে দেখে তিনি বলেছিলেন, তারেক বুকে সাহস রাখ, নিজেকে শক্ত রাখ, ইনশাআল্লাহ একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। সেই কথা শুনে আমি কিছুটা হলেও সাহস পেয়েছিলাম।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনের সভাপতিত্বে সভায় অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য সদস্য আবুল হোসেন আজাদ, খুলনা জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব, যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান খান, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন প্রমুখ।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কারের ভবিষ্যৎ পরবর্তী সংসদের হাতে ছেড়ে দেব না : নাহিদ ইসলাম

শুধু বইয়ের কিছু লাইন সংস্কার করলেই তাকে সংস্কার বলে না : তারেক রহমান

প্রকাশের সময় : ০৮:২৬:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪

যশোর জেলা প্রতিনিধি : 

শুধু বইয়ের কিছু লাইন সংষ্কার করলেই তাকে সংস্কার বলে না এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে যশোরের টাউন হল ময়দানে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য সাবেক মন্ত্রী মরহুম তরিকুল ইসলামের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে যশোর জেলা বিএনপি আয়োজিত স্মরণ সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, শুধু বইয়ের কিছু লাইন সংষ্কার করলেই তাকে সংস্কার বলে না। বেকারদের কর্মসংস্থান, নারীদের স্বাধীনতা, মানুষের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সুবিধা নিশ্চিত করতে পারলে তাকেই সংস্কার বলব।

তারেক রহমান বলেন, আজ অনেকে অনেক ধরনের সংস্কারের কথা বলছেন। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি মনে করি, যে কাজ করলে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে তাকেই সংস্কার বলে। যে সংষ্কার দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটে, সুশিক্ষা নিশ্চিত হয়, আমি তাকে সংষ্কার বলি। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারের পতন হলেও তার প্রেতাত্মারা এখনো রয়েছে। তারা নানাভাবে স্বৈরাচারের বীজ বপনের সুযোগ খুঁজছে।

প্রশাসনে থাকা স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা এখনো ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও এখনো ক্রান্তিকাল চলছে।দেশে সংস্কার প্রয়োজন এবং যে সংস্কার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে, সেটাকেই সংস্কার মনে করে বিএনপি।

আন্দোলন-সংগ্রামে তরিকুল ইসলামের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। শুধু তাই না, ওই সরকার মানুষের সব অধিকার ডাকাতি করেছিল।

তিনি বলেন, স্বৈরাচারের সন্ত্রাসী শাসন শেষ হলেও সেই শাসনের অবশিষ্ট প্রেতাত্মারা এখনো রাজনীতির ক্রান্তিকালে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে। আমাদের লক্ষ্য সেই অধিকার পুনরুদ্ধার করা, যা এই সরকার মানুষের কাছ থেকে ছিনতাই করেছে।

মরহুম তরিকুল ইসলামের স্মৃতিচারণা করে তারেক রহমান বলেন, ‘তিনি ছিলেন গণমানুষের নেতা। আন্দোলন-সংগ্রামে অবদানের জন্য জাতি যে কয়জনকে নিয়ে গর্ব করতে পারে, তরিকুল ইসলাম তাদের একজন। ২০১৩ সালের আন্দোলনে তিনি অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতা দেখিয়েছিলেন। আজকের এই অনুষ্ঠানে বিপুল জনসমাগম তার গণসম্পৃক্ততার সাক্ষ্য দেয়। তার শূন্যতা আমরা অনুভব করছি।’

তিনি বলেন, ২০০৮-এর পর স্বৈরাচার জাতির কাঁধে চেপে বসে। পতিত স্বৈরাচার মানুষের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছিল। ২০১৪, ১৮, ২৪ সালে মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। ছিনিয়ে নেওয়া অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য তরিকুল ইসলাম লড়ে গেছেন। তাকে আমরা যোদ্ধা হিসেবে চিনি। তিনি মানুষের রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করার লড়াই করেছেন আজীবন।

তিনি বলেন, আজকের নতুন প্রজন্মকে তরিকুল ইসলামের রাজনৈতিক জীবন ও শিষ্ঠাচার থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে লাভবান বা অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে যিনি বা যারা রাজনীতি করেন বা করেছেন তাদের পরিণতি দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। পতিত স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টদের পরিণতি কী হতে পারে তা দেশের মানুষ ৫ আগস্ট উপলব্ধি করেছে। তাই আগামীর বাংলাদেশ হতে হবে শোষণ, নির্যাতন ও বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ। মনে রাখতে হবে ঐক্যবদ্ধতার কোনো বিকল্প নেই।

তারেক রহমান বলেন, আজকের এই স্মরণ সভায় হাজারো মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে মরহুম তরিকুল ইসলাম কতটা জনপ্রিয় ছিলেন। তরিকুল ইসলাম কখনো আদর্শের সঙ্গে কোনো বেইমানি করেননি। বিগত স্বৈরাচার এরশাদ আমলে এবং ফ্যাসিস্ট পতিত স্বৈরাচার হাসিনার আমলে ও ওয়ান ইলেভেন সরকারের আমলে মরহুম তরিকুল ইসলাম বারবার কারাবরণ, হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন। কিন্তু তিনি কখনো তার আদর্শ থেকে বিন্দু মাত্র বিচ্যুত হননি।

তিনি বলেন, মরহুম তরিকুল ইসলামের সঙ্গে আমার কাজ করার বেশি অভিজ্ঞতা নেই। তারপরও যতটুকু সময় পেয়েছি ততটুকু সময়ে আমি তার কাছ থেকে মানুষের জন্য রাজনীতি করা শিখেছি। ওয়ান ইলেভেন সরকারের আমলে আমি ও মরহুম তরিকুল ইসলাম সাহেব একসঙ্গে কারাবরণ করেছি। একদিন পিজি হাসপাতালে কিছু সময়ের জন্য তার সঙ্গে আমার দেখা হয় ও খুব সামান্য কথা হয়। জীবনে প্রথম কারাবরণ করায় আমি কিছুটা নার্ভাস ছিলাম। আমাকে দেখে তিনি বলেছিলেন, তারেক বুকে সাহস রাখ, নিজেকে শক্ত রাখ, ইনশাআল্লাহ একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। সেই কথা শুনে আমি কিছুটা হলেও সাহস পেয়েছিলাম।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনের সভাপতিত্বে সভায় অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য সদস্য আবুল হোসেন আজাদ, খুলনা জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব, যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান খান, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন প্রমুখ।