Dhaka শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিশু সাজিদের দাফন সম্পন্ন, জানাজায় মানুষের ঢল

রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি :

অশ্রুসিক্তে শিশু সাজিদকে শেষ বিদায় জানিয়েছেন এলাকার হাজার হাজার মানুষ। রাজশাহীর তানোর উপজেলার কোয়েলহাট মধ্যপাড়া এলাকার শিশু সাজিদের বাবার বাড়ির পাশের একটি মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার নেককিড়ি কবরস্থানের সামনের ফাঁকা মাঠে জানাজা শেষে কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে শুক্রবার সকাল থেকেই গ্রামের বাতাস ছিল ভারী। মসজিদের মাইকে বারবার ভেসে আসে সেই ঘোষণা—কোয়েলহাট পূর্বপাড়া নিবাসী রাকিব উদ্দীনের দুই বছরের শিশুসন্তান সাজিদ মারা গেছে।

মাইকে দেওয়া ঘোষণার শব্দগুলো শুনেই থেমে গেছে গ্রামের মানুষের কাজকর্ম। কেউ মাঠে যাননি, তেমন কেউ দোকান খোলেননি। সবাই গ্রামের রাস্তা ধরে গায়ে পাঞ্জাবি জড়িয়ে মাথায় টুপি দিয়ে যান সাজিদের বাড়ির দিকে। তারা একবার দেখতে চান সেই নিষ্পাপ মুখটা, যে মুখে প্রতিদিন হাসি ছিল, আজ সেখানে নিস্তব্ধতা। জানাজার মাঠে মানুষের ঢল নামে সকালেই। গ্রামের বৃদ্ধ থেকে শুরু করে স্কুলপড়ুয়া ছেলে— সবার চোখ ছিল ভেজা।

কারও কণ্ঠে ফিসফিস— আল্লাহ, এমন মৃত্যু কেউ না পাক। সাজিদের ছোট্ট দেহটি যখন সাদা কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় আনা হলো, তখন কান্নার রোল পড়ে গেল চারপাশে। তার মা বারবার ছুটে আসতে চাইছিলেন— করছেন আহাজারি।

মানুষজন তাকে ধরে রাখছিলেন; কিন্তু কান্না থামাতে পারেননি কেউ।

জানাজার ইমাতি করেন কাজী মাওলানা মিজানুর রহমান। ইমাম সাহেব জানাজা শেষে যখন তাকবির দিলেন, মানুষ হাত তুলল দোয়ার ভঙ্গিতে। দোয়া অনুষ্ঠিত হলো। সবাই সাজিদের আত্মার মাগফিরাতের জন্য দোয়া করেন। একই সঙ্গে তার পরিবারকে আল্লাহ ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করেন এমন দোয়াও সবাই করেছেন।

জানাজায় স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাসহ সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

জানাজা শেষে সাজিদের ছোট্ট কফিনটা যখন কবরের দিকে নেওয়া হলো, তখন বাতাস যেন থেমে গেল, শুধু শোনা যাচ্ছিল কান্নার শব্দ। কান্না করছেন স্বজনরা। একটি শিশুর জানাজা— যেখানে অংশ নিয়েছে পুরো গ্রাম, এমন দৃশ্য কেউ কখনো দেখেনি গ্রামবাসী।

এর আগে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে সাজিদ গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে নিখোঁজ হয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ৫০ ফুট মাটি খনন করে ৩২ ঘণ্টা পর শিশুটিকে উদ্ধার করে। এরপর তাকে উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আবহাওয়া

নির্বাচনকে বানচাল করার মতো কোনো শক্তি পৃথিবীতে নেই : প্রেস সচিব

শিশু সাজিদের দাফন সম্পন্ন, জানাজায় মানুষের ঢল

প্রকাশের সময় : ১২:২৬:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫

রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি :

অশ্রুসিক্তে শিশু সাজিদকে শেষ বিদায় জানিয়েছেন এলাকার হাজার হাজার মানুষ। রাজশাহীর তানোর উপজেলার কোয়েলহাট মধ্যপাড়া এলাকার শিশু সাজিদের বাবার বাড়ির পাশের একটি মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার নেককিড়ি কবরস্থানের সামনের ফাঁকা মাঠে জানাজা শেষে কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে শুক্রবার সকাল থেকেই গ্রামের বাতাস ছিল ভারী। মসজিদের মাইকে বারবার ভেসে আসে সেই ঘোষণা—কোয়েলহাট পূর্বপাড়া নিবাসী রাকিব উদ্দীনের দুই বছরের শিশুসন্তান সাজিদ মারা গেছে।

মাইকে দেওয়া ঘোষণার শব্দগুলো শুনেই থেমে গেছে গ্রামের মানুষের কাজকর্ম। কেউ মাঠে যাননি, তেমন কেউ দোকান খোলেননি। সবাই গ্রামের রাস্তা ধরে গায়ে পাঞ্জাবি জড়িয়ে মাথায় টুপি দিয়ে যান সাজিদের বাড়ির দিকে। তারা একবার দেখতে চান সেই নিষ্পাপ মুখটা, যে মুখে প্রতিদিন হাসি ছিল, আজ সেখানে নিস্তব্ধতা। জানাজার মাঠে মানুষের ঢল নামে সকালেই। গ্রামের বৃদ্ধ থেকে শুরু করে স্কুলপড়ুয়া ছেলে— সবার চোখ ছিল ভেজা।

কারও কণ্ঠে ফিসফিস— আল্লাহ, এমন মৃত্যু কেউ না পাক। সাজিদের ছোট্ট দেহটি যখন সাদা কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় আনা হলো, তখন কান্নার রোল পড়ে গেল চারপাশে। তার মা বারবার ছুটে আসতে চাইছিলেন— করছেন আহাজারি।

মানুষজন তাকে ধরে রাখছিলেন; কিন্তু কান্না থামাতে পারেননি কেউ।

জানাজার ইমাতি করেন কাজী মাওলানা মিজানুর রহমান। ইমাম সাহেব জানাজা শেষে যখন তাকবির দিলেন, মানুষ হাত তুলল দোয়ার ভঙ্গিতে। দোয়া অনুষ্ঠিত হলো। সবাই সাজিদের আত্মার মাগফিরাতের জন্য দোয়া করেন। একই সঙ্গে তার পরিবারকে আল্লাহ ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করেন এমন দোয়াও সবাই করেছেন।

জানাজায় স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাসহ সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

জানাজা শেষে সাজিদের ছোট্ট কফিনটা যখন কবরের দিকে নেওয়া হলো, তখন বাতাস যেন থেমে গেল, শুধু শোনা যাচ্ছিল কান্নার শব্দ। কান্না করছেন স্বজনরা। একটি শিশুর জানাজা— যেখানে অংশ নিয়েছে পুরো গ্রাম, এমন দৃশ্য কেউ কখনো দেখেনি গ্রামবাসী।

এর আগে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে সাজিদ গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে নিখোঁজ হয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ৫০ ফুট মাটি খনন করে ৩২ ঘণ্টা পর শিশুটিকে উদ্ধার করে। এরপর তাকে উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।