নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপি নেতারা শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে চায় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সেদিন আর বেশি দূরে নয়, বিএনপির রাজনীতি কবরস্থানে যাবে। কবরস্থানে যাওয়ার সময় এসেছে। তাদের হাতে বাংলাদেশ নিরাপদ নয়। সুযোগ পেলেই তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়। তাদের হাতে ভোট, গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতা নিরাপদ নয়।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে কৃষক লীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
বর্তমান সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশে এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে, পদ্মা সেতু। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে এনেছেন, কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় এলে এই আলো নিভে যাবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমান সরকারকে অবৈধ বলেন। সরকার অবৈধ হলে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে কেন বারবার আবেদন করা হচ্ছে। আগামীতে মিটিং করতে হলে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। না নিলে খবর আছে। অনুমতি না নিলে পালাবার পথ পাবেন না। পালিয়ে যেতে হবে।
বিএনপির দেওয়া ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটামের সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপির আলটিমেটাম তো শেষ। ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম কই? আলটিমেটাম ভুয়া, এক দফা ভুয়া, বিএনপি হচ্ছে ভুয়া। ৩২ দল ভুয়া, আন্দোলন ভুয়া, ক্ষমতা দখল ভুয়া, ভুয়া দল।
বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, মিটিং করতে গেলে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি না নিলে খবর আছে। পালাবার পথ পাবেন না। পালিয়ে যেতে হবে।
বিএনপি নেতাদের রাজপথ দখলের হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে কাদের বলেন, এই নগরীর রাজপথ বিএনপির দখল করার কোনো অধিকার নেই, তারা আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারে। এবার আগুন দিতে এলে তাদের হাত আমরা গুঁড়িয়ে দেব।
বিএনপির হাতে দেশ ও দেশের গণতন্ত্রণ নিরাপদ নয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাদের কাছে জনগণের স্বচ্ছ ভোট নিরাপদ নয়। বাংলাদেশের নিরাপত্তা, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার আদর্শ নিরাপদ নয়। এরা একাত্তরের বাংলাদেশ চায় না, চায় খুন আর সন্ত্রাসের বাংলাদেশ। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ছাড়া ক্ষমতার মঞ্চে গণতন্ত্র নিরাপদ নয়। আপনাদের নিরাপত্তা নিরাপদ নয়। ভাত-কাপড়ের ব্যবস্থা নিরাপদ নয়। শেখ হাসিনা আছেন বলেই বাংলাদেশ অনেক শান্তিতে আছে। একজন সৎ মানুষ রাজনীতিতে আছেন। ভালো মানুষ চোরচোট্টার দল বিএনপিতে নেই।
বিএনপি ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশের আলো নিভে যাবে দাবি করে কাদের বলেন, শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছেন। এ বাংলাদেশকে আমরা আর কোনও কালো হাতে ছেড়ে দেবো না, অন্ধকারে ফিরে যেতে দেবো না।
শেখ হাসিনার মতো কৃষকবান্ধব নেতা আর নেই মন্তব্য করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, তিনি কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি কৃষকের পরম বন্ধু। তার উন্নয়নে আজ বাংলাদেশ আলোকিত। তার উন্নয়ন সারা বাংলায় আনাচে-কানাচে পৌঁছে গেছে।
নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, জোরদার খেলা হবে। সামনে নভেম্বর, তারপরে ডিসেম্বর, তারপরে জানুয়ারি, ফাইনাল খেলা, খেলা হবে। কৃষক ভাইয়ের খেলা হবে। প্রস্তুত হয়ে যান। নেত্রী আসছেন তিনি ডাক দেবেন। তিনি যখন ডাক দেবেন, রাস্তায় নেমে আসবেন। আমরা আর কোনো কালো হাতে বাংলাদেশ ছেড়ে দেব না। আমাদের যাত্রা আলোর দিকে ও সোনার বাংলাদের গড়ার দিকে।
রাজপথ দখল নিয়ে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সেপ্টেম্বর অক্টোবর তো চলেই গেল। তারা রাজপথ দখল করতে পারবে না। বাংলার মানুষ তাদের সঙ্গে নেই। এমনকি রাজপথ ও ঢাকা নগরী দখল করার তোমাদের (বিএনপি) কোনো অধিকার নেই।
এসময় তিনি বলেন, আপনারা শপথ নিন। আগামী নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকুন।
কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, এস এম কামাল, আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমবায় সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খাঁন নিখিল প্রমূখ। সমাবেশে সঞ্চালনা করেন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি।