নিজস্ব প্রতিবেদক :
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দখলদারিত্ব শুরু হয় সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের হাত ধরে বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সোমবার (১ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি। এতে বিএনপি নেতাদের ‘রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা, বানোয়াট ও মনগড়া বক্তব্যের’ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দখলদারিত্ব শুরু হয় সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের হাত ধরে। স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান নিজের অবৈধ ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে ছাত্রদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। ক্ষমতা ও অর্থের প্রলোভনে মোহাবিস্টের মাধ্যমে ছাত্রনেতাদের আদর্শ বিচ্যুত ও পথভ্রষ্ট করে ছাত্রদল প্রতিষ্ঠা করা হয়। নীতি-আদর্শকে পাশ কাটিয়ে বৈষয়িক চিন্তা ও বিলাসি জীবন-যাপনে অভ্যন্ত করা হয় তাদের। এর ধারাবাহিকতায় দিনে দিনে ছাত্ররাজনীতিতে একটি কলুষিত ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়। একইভাবে স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে স্বাধীন বাংলাদেশে পাকিস্তানি ভাবধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়।
কাদের বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী পরাজিত শক্তি রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় এবং ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রচলন হয়। এর ছোঁয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়তে থাকে এবং তা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার গণতান্ত্রিক পরিবেশকে ব্যাহত করে। এই নীতি ও আদর্শ বিবর্জিত ধারার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নিরন্তর সংগ্রামে আবদান রেখেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের আফসোস হয়। বিএনপি নেতৃবৃন্দ বোঝে না যে, এদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মিথ্যাচারের ধারা অব্যাহত রাখলে তারা জনগণ থেকে আরও দূরে সরে যাবে।
তিনি আরও বলেন, তারা ক্ষমতায় এসে ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ বিরোধী বয়ান তৈরির মধ্য দিয়ে দেশবিরোধী রাজনীতির ধারা সৃষ্টি করেছে এবং তা পরিপুষ্ট করে চলেছে। এরই ধারাবাহিকতায় তারা স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
কাদের বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অবদান যৌক্তিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক এবং অভিন্ন। এখানে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বয়ান তৈরির অপচেষ্টা হলো ইতিহাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া। আর ইতিহাসের বিরুদ্ধে যে জাতি বা গোষ্ঠী অবস্থান নেয় তাদের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। ফলশ্রুতিতে আমরা দেখতে পাই, বাংলাদেশের মূল চেতনা হতে বিচ্ছিন্ন ইতিহাসবিরোধী অপশক্তি বিএনপি ও তাদের দোসররা জনগণ দ্বারা বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিলুপ্তির পথে।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ দেশের স্বাধীনতা অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অবদান অনস্বীকার্য। মহান মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগের ১৭ হাজার নেতাকর্মী জীবন উৎসর্গ করেছিল। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সর্বদা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে কাজ করে চলেছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সুনির্দিষ্ট গঠনতন্ত্র ও নীতি-আদর্শ মেনে পরিচালিত ছাত্র সংগঠন। ছাত্রলীগ দখলদারিত্বে বিশ্বাসী নয়।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা নির্যাতনের মনগড়া মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে সন্ত্রাস ও সহিংসতার পথে হেঁটেছিল। তাই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। এখন তো তাদের নেতাকর্মীরা একের পর এক মুক্তি পাচ্ছে । অথচ তাদের মুখে অত্যাচার-নির্যাতনের তথাকথিত বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে এটা তারা চিরস্থায়ী পন্থা হিসেবে বেছে নিয়েছে সরকার কোনো ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে নাই। বরং নির্বাচন বানচাল ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রন্ত করতে বিএনপি সন্ত্রাস ও সহিংসতা সৃষ্টির মাধ্যমে যে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করতে চেয়েছিল, সরকার তা থেকে জনগণের নিরাপত্তা বিধানের জন্য অভয়ের পরিবেশ সৃষ্টিতে বদ্ধপরিকর।