নিজস্ব প্রতিবেদক :
স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষকের মর্যাদার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে ‘ক্যাডার’ থেকে বের করার সুপারিশ করবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সচিবালয় বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে জনপ্রশাসনের সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভায় কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী ও সদস্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এ কথা জানান।
কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, শিক্ষা ক্যাডারটা অযৌক্তিক। স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা আলাদা। আমরা সুপারিশ করেছি এটা ক্যাডার করে রাখা যাবে না। একজন চোখের ডাক্তার, একজন দাঁতের ডাক্তার, একজন জেনারেল ফিজিশিয়ান; তারা কি পদোন্নতি একসঙ্গে পাচ্ছে? সেজন্য আমরা বলছি এটা ক্যাডার রাখা যাবে না, এটা আমাদের চিন্তা। এটা ক্যাডার করা অযৌক্তিক হয়েছে। এগুলোকে আলাদা করতে হবে। বেতন বাড়িয়ে দেওয়া হবে। এই দুই বিভাগ ছাড়া বাকি সবাই ক্যাডার থাকবে। এটা আমাদের ধারণা।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, আপনাদেরকে একটা খবর দিতে চাই, পাবলিক সার্ভিস কমিশন থেকে সরে যেয়ে আমাদের জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন আলাদা হয়েছে। ঠিক এরকম আমরা স্বাস্থ্য ক্যাডারকে আলাদা করার পরামর্শ দিয়েছি এবং শিক্ষা ক্যাডারকে আলাদা করার পরামর্শ দিয়েছি। এটা হয়ে যাবে।
সরকারি চাকরিতে নিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিলের জন্য সরকারকে সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
তিনি বলেন, ‘চাকরিতে রিক্রুটমেন্ট (নিয়োগ), বিভিন্ন ব্যাপারে পুলিশের ভেরিফিকেশন একটা ম্যান্ডেটরি (বাধ্যতামূলক) জিনিস। এটা আমরা সুপারিশ করছি থাকবে না। কোথাও থাকবে না।’
কমিশন প্রধান বলেন, ‘আপনি নাগরিক, পাসপোর্ট নেবেন আপনার নাগরিক অধিকার। আপনাকে পুলিশ ভেরিফিকেশন কেন করতে হবে। ইংল্যান্ডে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করলে পোস্ট অফিসে পাসপোর্ট চলে আসে।’
‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটা কমিশন আছে। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি কী জানি না। কিন্তু আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বা আমার ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি হল এটা।’
আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, ‘আমার কাছে একটা জিনিস মনে হয়- খারাপ লোক যখন দেশে আসে, তারে ঢুকতে না দেওয়ার কারণ কী? বরং সে ভেতরে আসলে আমার সুবিধা হল, তাকে শাস্তি দেওয়া যাবে। যদি কেউ চলে যেতে চায় চলে গেল, অসুবিধা কী? বিমানবন্দরে এগুলো করা হয়, আমি মনে করে এটা সময়ের অপচয় এবং অপ্রয়োজনীয়। কে করে এটা, এই যে অদৃশ্য শক্তি- আমার ব্যক্তিগত অভিমত যেগুলো হওয়া উচিত না।’
সিনিয়র সচিব বলেন, কমিশনের মেজর সুপারিশগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে- ফরিদপুর ও কুমিল্লাকে বিভাগ করা হোক। ওই এলাকার দাবির প্রেক্ষিতে আমরা দুটি বিভাগ করার পরামর্শ দিচ্ছি।
তিনি বলেন, এই দুটি বিভাগ করতে গেলে দুই একটা জেলা এই বিভাগ থেকে ওই বিভাগের দিতে হবে। সেটা আমরা ম্যাপ করে দিয়েছি। একটি ম্যাপ দেখলেই বুঝা যাবে সামনে দশটি বিভাগ, কোন জেলাকে কোন জায়গায় দেওয়া হয়েছে। সব বিভাগকে টাচ করা হয়নি। এখানে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামকে টাচ করা হয়েছে, যাতে কুমিল্লা, ফরিদপুর ও ময়মনসিংহ সেরকম হয়। আমরা দিয়েছি সরকার যদি মনে করে দশটা বিভাগ করবে, ফাইন।
মোখলেস উর রহমান আরও বলেন, জনগণের আবেদনের প্রেক্ষিতে আরও অনেক এমন সুপারিশ করেছি। আমরা গুগলে ক্লাস্টার করেছি একই বিষয় কত হাজার মানুষ সাপোর্ট করেছে, কত হাজার লোক চাহিদা দিয়েছে।