Dhaka বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিক্ষায় এত পচন ধরেছে যে শুধু, মৌলিক জিনিসগুলো ঠিক না করলে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় : পরিকল্পনা উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দেশের শিক্ষা খাতে এত বেশি পচন ধরেছে যে, মৌলিক জিনিসগুলো ঠিক না করলে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ইয়ুথ পার্সপেক্টিভ অন সোশ্যাল প্রগ্রেস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ড. ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, শিক্ষিত বেকার সমস্যা একটি বড় সমস্যা। শিক্ষায় এত বেশি পচন ধরেছে যে, মৌলিক বিষয়গুলো ঠিক না করলে সমস্যার সমাধান হবে না। তবে নিজেদেরও উদ্যোগ নিতে হবে।

তিনি বলেন, তাঁরা যখন দায়িত্ব নিয়েছেন, তখন ৫৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অভিভাবকবিহীন ছিল। শিক্ষা কমিশন এগুলো ঠিক করতে পারত না। কয়েকজন মানুষকে ওপরে বসিয়ে শিক্ষা ভালো করতে বলাটা তাদের জন্যও বিব্রতকর হতো। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে তিনটি শিক্ষা কমিশন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই রিপোর্টগুলোতেও অনেক ভালো সুপারিশ আছে। সেগুলো না মেনে নতুন কমিশন কেন এমন প্রশ্নও করেন তিনি।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে তরুণদের মধ্যে একধরনের মানসিক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। এর কারণ হিসেবে তিনি জুলাই আন্দোলনে নৃশংস দৃশ্য ও স্বজনদের মৃত্যুকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, যাঁরা আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, তাঁরা দেশের জন্য কিছু করতে চাইছেন। তবে ঠিক কীভাবে করবেন, তা বুঝে উঠতে পারছে না। সে ক্ষেত্রে প্রবীণদের সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, অস্থিরতার একটি নেতিবাচক দিক হলো দাবি আদায়ের জন্য মহাসড়ক অবরোধ, যা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য একটি খারাপ দিক। তবে ইতিবাচক দিকও রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগের আন্দোলনগুলোর সময়কার গাড়ি ভাঙচুরের সংস্কৃতি বিদায় নিয়েছে। তবে অবরোধ থেকে গেছে।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যায় এখন বয়সের দিক থেকে তরুণদের সংখ্যা অনেক বেশি, যা একধরনের ‘ইয়ুথ পাওয়ার’ বা ‘পপুলেশন’ সৃষ্টি করেছে। এ সুযোগ ১৫ বছর ধরে শুরু হয়েছে এবং আগামী আরও ১৫ বছর থেকে ২ দশকের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। এই সময়ের মধ্যে তরুণদের নিজেদের গড়ে তোলার পাশাপাশি বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হবে।

তিনি তরুণ প্রজন্মের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, যুবসমাজের ভূমিকা এখন জাতির ভবিষ্যৎ গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিজেদের যোগ্য ও সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা ছাড়াও দেশ গঠনের দায়িত্ব নিতে হবে।

ড. ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান স্বৈরাচারের পতনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছে, যেখানে পরিবর্তনের মূল চালিকা শক্তি ছিল তরুণরাই। নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার বিষয়ে শুধু নারীদের নয়, পুরুষদেরও বক্তব্য রাখতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের অনেক জায়গায় মধ্যস্বত্বভোগীরা আছে। কিন্তু যদি সেখানে সংগঠন ও সামাজিক আন্দোলন থাকত, তাহলে কেউ চর দখল বা হাওর দখল করতে পারত না। যে যেখানে আছে সে সেখান থেকে দায়িত্ব পালন করলে দেশকে ভালোভাবে গড়ে তোলা সম্ভব।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

শিক্ষায় এত পচন ধরেছে যে শুধু, মৌলিক জিনিসগুলো ঠিক না করলে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় : পরিকল্পনা উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৪:১৫:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দেশের শিক্ষা খাতে এত বেশি পচন ধরেছে যে, মৌলিক জিনিসগুলো ঠিক না করলে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ইয়ুথ পার্সপেক্টিভ অন সোশ্যাল প্রগ্রেস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ড. ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, শিক্ষিত বেকার সমস্যা একটি বড় সমস্যা। শিক্ষায় এত বেশি পচন ধরেছে যে, মৌলিক বিষয়গুলো ঠিক না করলে সমস্যার সমাধান হবে না। তবে নিজেদেরও উদ্যোগ নিতে হবে।

তিনি বলেন, তাঁরা যখন দায়িত্ব নিয়েছেন, তখন ৫৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অভিভাবকবিহীন ছিল। শিক্ষা কমিশন এগুলো ঠিক করতে পারত না। কয়েকজন মানুষকে ওপরে বসিয়ে শিক্ষা ভালো করতে বলাটা তাদের জন্যও বিব্রতকর হতো। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে তিনটি শিক্ষা কমিশন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই রিপোর্টগুলোতেও অনেক ভালো সুপারিশ আছে। সেগুলো না মেনে নতুন কমিশন কেন এমন প্রশ্নও করেন তিনি।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে তরুণদের মধ্যে একধরনের মানসিক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। এর কারণ হিসেবে তিনি জুলাই আন্দোলনে নৃশংস দৃশ্য ও স্বজনদের মৃত্যুকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, যাঁরা আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, তাঁরা দেশের জন্য কিছু করতে চাইছেন। তবে ঠিক কীভাবে করবেন, তা বুঝে উঠতে পারছে না। সে ক্ষেত্রে প্রবীণদের সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, অস্থিরতার একটি নেতিবাচক দিক হলো দাবি আদায়ের জন্য মহাসড়ক অবরোধ, যা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য একটি খারাপ দিক। তবে ইতিবাচক দিকও রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগের আন্দোলনগুলোর সময়কার গাড়ি ভাঙচুরের সংস্কৃতি বিদায় নিয়েছে। তবে অবরোধ থেকে গেছে।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যায় এখন বয়সের দিক থেকে তরুণদের সংখ্যা অনেক বেশি, যা একধরনের ‘ইয়ুথ পাওয়ার’ বা ‘পপুলেশন’ সৃষ্টি করেছে। এ সুযোগ ১৫ বছর ধরে শুরু হয়েছে এবং আগামী আরও ১৫ বছর থেকে ২ দশকের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। এই সময়ের মধ্যে তরুণদের নিজেদের গড়ে তোলার পাশাপাশি বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হবে।

তিনি তরুণ প্রজন্মের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, যুবসমাজের ভূমিকা এখন জাতির ভবিষ্যৎ গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিজেদের যোগ্য ও সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা ছাড়াও দেশ গঠনের দায়িত্ব নিতে হবে।

ড. ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান স্বৈরাচারের পতনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছে, যেখানে পরিবর্তনের মূল চালিকা শক্তি ছিল তরুণরাই। নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার বিষয়ে শুধু নারীদের নয়, পুরুষদেরও বক্তব্য রাখতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের অনেক জায়গায় মধ্যস্বত্বভোগীরা আছে। কিন্তু যদি সেখানে সংগঠন ও সামাজিক আন্দোলন থাকত, তাহলে কেউ চর দখল বা হাওর দখল করতে পারত না। যে যেখানে আছে সে সেখান থেকে দায়িত্ব পালন করলে দেশকে ভালোভাবে গড়ে তোলা সম্ভব।