Dhaka শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিক্ষক-গভর্নিং বডির পকেটে পাঁচ কোটি টাকা

যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুল

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিংবডি ও শিক্ষক প্রতিনিধিরা মিলেমিশে আত্মসাৎ করেছেন ৫ কোটি ১৪ লাখ ৮ হাজার ২০০ টাকা। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার এক চার্জশিটে এই অভিযোগ এনেছে।

অভিযোগে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা টাকা থেকে দৈনিক জমা-খরচ বইয়ে কম দেখানো হয়েছে। গরমিল করা হয়েছে জমা-খরচ হিসাবেও! প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ভবিষ্য তহবিলে (পিএফ) জমা দেয়ার জন্য ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেও পিএফ ফান্ডের অ্যাকাউন্টে জমা দেয়া হয়নি। কোনো ধরনের ঋণের প্রয়োজন ছিল না। তারপরও কাল্পনিক ঋণ গ্রহণ ও ভুয়া ঋণ পরিশোধ দেখানো হয়। স্কুলের প্যাডে তৈরি করা ডেবিট ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলন ও কোনো ধরনের ভাউচার ছাড়াই ভুয়া খরচও করা হয়। এভাবেই গভর্নিংবডি ও শিক্ষক প্রতিনিধিরা মিলেমিশে আত্মসাৎ করেছেন ৫ কোটি ১৪ লাখ ৮ হাজার ২০০ টাকা।

চার্জশিটে সাবেক অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ, অফিস সহকারী শহিদুল ইসলাম, গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি ও প্রয়াত এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার বড় ছেলে মশিউর রহমান মোল্লা সজল, সাবেক শিক্ষক প্রতিনিধি ও বর্তমানে ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক আব্দুর রউফ মোল্লা, সাবেক শিক্ষক প্রতিনিধি ও বর্তমানে ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক অহিদুল ইসলাম এবং সাবেক শিক্ষক প্রতিনিধি ও বর্তমানে প্রাথমিক শাখার শিক্ষক অহিদা খানমকে আসামি করা হয়েছে। তার মধ্যে অফিস সহকারী শহিদুল ইসলাম অবসরে চলে গেছেন। তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিটটি দাখিল করেছেন দুদকের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম। তার আগে ২০১৯ সালে উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুর আলম সিদ্দিকী মামলাটি দায়ের করেন।

স্কুলে এখনও কর্মরত চার্জশিটভুক্ত তিন শিক্ষকের বিষয়ে বর্তমান অধ্যক্ষ মরিয়ম বেগম বলেন, ‘আমরা অফিশিয়ালি চার্জশিটের বিষয়টি জানি না। এখনও কোনো কিছু আসেনি। জানার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সম্ভবত ২০১৩ কিংবা ২০১৪ সালে কলেজ শাখা চালু করা হয়।’

মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ও যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির বর্তমান সভাপতি জানে আলম বলেন, ‘আমার কাছে খবরটি এখনও আসেনি। অফিসিয়ালি জানার পর পরিপত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্ষেত্রে গভর্নিং বডিই থাকে। ম্যানেজিং কমিটি থাকে না। শুধু স্কুল হলে ম্যানেজিং কমিটি থাকে। গত জানুয়ারি মাসে আমি দায়িত্ব নিয়েছি।’

চার্জশিটের তথ্যানুযায়ী, ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ২০ মার্চ সময়ে দৈনিক আদায় রেজিস্টার অনুযায়ী বিভিন্ন তারিখে মোট ৬ কোটি ৮৭ লাখ ৯৭ হাজার ৯৫৫ টাকা আদায় করা হয়। কিন্তু, জমা-খরচ খাতায় ওই সময়ে ৬ কোটি ৫২ লাখ ১০ হাজার ৭৯৮ টাকা জমা দেখানো হয়। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে আদায় করা ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ৪৪ টাকা কম দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ তহবিলে (পিএফ) জমা দেয়ার জন্য স্কুলের নামে সোনালী ব্যাংক যাত্রাবাড়ী শাখার অ্যাকাউন্ট থেকে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তারিখে ১১ লাখ ৮৯ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন করা হয়। এই টাকা ভবিষ্য তহবিলের ব্যাংক হিসাবে জমা না দিয়ে অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ ও প্রধান হিসাবরক্ষক শহিদুল ইসলাম অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে আত্মসাৎ করেছেন।

তদন্তকালে দেখা যায়, ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি তারিখে দৈনিক জমা-খরচ বই অনুসারে নগদ কোনো স্থিতি ছিল না। কিন্তু স্কুলের নামে সোনালী ব্যাংক যাত্রাবাড়ী শাখার অ্যাকাউন্ট অনুযায়ী ওই তারিখে ২ লাখ ৪০ হাজার ৫৫৮ টাকা ব্যাংক স্থিতি ছিল। জমা-খরচ বই ও মাসিক আয়-ব্যয়ের হিসাব বিবরণী মোতাবেক ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ে মোট আয় ২৮ কোটি ৩২ লাখ ২৩ হাজার ৭৫৮ টাকা এবং মোট ব্যয় ২৪ কোটি ২৩ লাখ ৮৫ হাজার ৭৩৪ টাকা। সেই হিসেবে মোট উদ্বৃত্তের পরিমাণ ৪ কোটি ১০ লাখ ৭৬ হাজার ৬১২ টাকা। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে নগদ জমা-খরচের খাতা অনুযায়ী নগদ স্থিতি ১ কোটি ১৪ লাখ ৯৪ হাজার ৫৪৪ টাকা এবং ব্যাংক হিসাব বিবরণী অনুযায়ী ব্যাংক স্থিতি ৩৭ লাখ ৮৫ হাজার ৮১৫ টাকাসহ মোট ১ কোটি ৫২ লাখ ৮০ হাজার ৩৫৯ টাকা। অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ ও প্রধান হিসাবরক্ষক শহিদুল ইসলাম অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে অবশিষ্ট নগদ ২ কোটি ৫৭ লাখ ৯৮ হাজার ২৫৩ টাকা হিসাবে কম দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।

তদন্তকালে দেখা যায়, স্কুলের উদ্বৃত্ত তহবিল ও দৈনিক কালেকশন অনুযায়ী কখনও কোনো ধরনের ঋণের প্রয়োজন ছিল না। তারপরও অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ আত্মসাতের উদ্দেশে জমা-খরচ বইয়ে ১ কোটি ২৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকার কাল্পনিক ঋণ দেখিয়েছেন। তার মধ্যে ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা দেখান। কাল্পনিক ঋণ হিসাবের বিপরীতে ভুয়া ঋণ পরিশোধের নামে ৯২ লাখ ৮৫ হাজার টাকার মধ্যে ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা নগদ উদ্বৃত্ত থেকে পরিশোধ দেখান। অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ ও প্রধান হিসাবরক্ষক শহিদুল ইসলাম অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে অবশিষ্ট ৭৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ভুয়া ঋণ পরিশোধের (প্রকৃতপক্ষে পরিশোধ করা হয়নি) নামে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।

তদন্তকালে দেখা যায়, স্কুলের নামে প্যাডে তৈরি ডেবিট ভাউচারে ২০১৫ সালের ১৭ মে তারিখে কমিটি গঠন বাবদ তিনটি আলাদা ভাউচারে ২ লাখ ৩০ হাজার, একই বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে একটি ভাউচারে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা বিল ও সম্মানি বাবদ ২২ লাখ ৭২ হাজার ৩০৩ টাকা; ৯ জুন তারিখে দুটি ভাউচারে মিডিয়া খরচ বাবদ ৮০ হাজার টাকা; ২০১৬ সালের ১১ জুলাই একটি ভাউচারে মামলার নিষ্পত্তি বাবদ ৫০ হাজার ও ২০১৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর একটি ভাউচারে ঋণ পরিশোধ বাবদ ১০ লাখ টাকাসহ মোট ৪০ লাখ ৮২ হাজার ৩০৩ টাকা সেবাদানকারী বা প্রাপকের তৈরি বিল ছাড়াই স্কুলের নিজস্ব ডেবিট ভাউচারের মাধ্যমে পরিশোধ (প্রকৃতপক্ষে পরিশোধ করা হয়নি) দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে। অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ ও প্রধান হিসাবরক্ষক শহিদুল ইসলাম অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে ভাউচার ছাড়াই খরচ দেখিয়ে ৯৯ লাখ ৬৭ হাজার ১২ টাকা আত্মসাৎ করেন।

দুদক বলছে, আবু ইউসুফ তার দায়িত্ব পালনকালে ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ২০ মার্চ সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা টাকা থেকে দৈনিক জমা-খরচ বইয়ে কম দেখিয়ে ৩৫ লাখ ৮৭ হাজার ১৫৭ টাকা, জমা-খরচ হিসাব গরমিল দেখিয়ে ২ কোটি ৫৭ লাখ ৯৮ হাজার ২৫৩ টাকা, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ তহবিলে (পিএফ) জমা দেয়ার জন্য ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেও পিএফ ফান্ডের অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে ১১ লাখ ৮৯ হাজার ৩০৫ টাকা, কাল্পনিক ও ভুয়া ঋণ পরিশোধের নামে ৭৩ লাখ ৩৫ হাজার, স্কুলের নামের প্যাডে তৈরি করা ডেবিট ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলন করা ৪০ লাখ ৯২ হাজার ৮০৩ টাকা, কোনো ধরনের ভাউচার ছাড়াই ভুয়া খরচ দেখিয়ে ৯৯ লাখ ৬৭ হাজার ১২ টাকাসহ মোট ৫ কোটি ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ৫৩০ টাকা অফিস সহকারী/হিসাবরক্ষক শহিদুল ইসলাম ও অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে আত্মসাৎ করেছেন।

দুদক বলছে, অফিস সহকারী শহিদুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানের জন্য সংগ্রহ করা সম্পদ ও তহবিলের যথাযথ লিপিবদ্ধ এবং আয়-ব্যয়ের যথাযথ হিসাব সংরক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন।

দুদক বলছে, ২০১৩ সালের ২৫ মে থেকে ২ বছরের জন্য ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আব্দুর রউফ মোল্লা। তিনি ২০১৪ সালের ১৮ মার্চ গঠিত অর্থ কমিটিতে এবং ১৮ ডিসেম্বর গঠিত অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের জন্য সংগ্রহ করা সম্পদ ও তহবিলের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন। তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন না করে ২০১৩ সালের ৩১ মে থেকে ২০১৫ সালের ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা টাকা থেকে দৈনিক জমা-খরচ বইয়ে কম দেখিয়ে ১১ লাখ ৪ হাজার ২৪৫ টাকা, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ তহবিলে (পিএফ) জমা দেয়ার জন্য ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেও পিএফ ফান্ডের অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে ১১ লাখ ৮৯ হাজার ৩০৫ টাকা, স্কুলের নামের প্যাডে তৈরি করা ডেভিট ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলন করা ৩৯ লাখ ৫২ হাজার ৩০৩ টাকা, কোনো ধরনের ভাউচার ছাড়াই ভুয়া খরচ দেখিয়ে ২০১২ সালের ১৫ জুলাই থেকে ২০১৫ সালের ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে ৮৮ লাখ ৬৭ হাজার ২ টাকাসহ মোট ১ কোটি ৫১ লাখ ১২ হাজার ৮৫৫ টাকা সাবেক অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ, অফিস সহকারী বা হিসাবরক্ষক শহিদুল ইসলাম ও অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে আত্মসাৎ করেছেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে আব্দুর রউফ মোল্লা বলেন, ‘কমিটির সদস্য ছিল ১৩ জন। বাকিদের নাম কই? অর্থকমিটির আহ্বায়ক ছিল শহিদুল ইসলাম, তার নাম কই। তিনি ম্যানেজিং কমিটির প্রভাবশালী সদস্য ছিলেন। তার ইশারায় সব কিছু হতো। তিনি এখন জাসদের ঢাকা মহানগর পূর্ব অঞ্চলের সভাপতি। আয়-ব্যয় কমিটির আহ্বায়ক ইসহাক ভূইয়ার নাম কই। ১৩ সদস্যে মধ্যে কারও নাম নেই। প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আমার ও অহিদুল ইসলামের নাম দিয়েছে। কোনো সাধারণ শিক্ষক কি ব্যাংকের টাকা উত্তোলন করতে পারেন। প্রশ্নই আসে না। ব্যাংকের টাকা একমাত্র সভাপতি ও সেক্রেটারি উঠাতে পারেন। অন্যদের বাদ দিয়ে শুধু ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। শিক্ষক প্রতিনিধির কী ক্ষমতা থাকে।’

অভিযোগের বিষয়ে অহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি শিক্ষক প্রতিনিধি ছিলাম। আসামি থাকার তো কথা নয়। আইনে কী বলে, সেটা তো জানি না।’

সাবেক অধ্যক্ষ আবু ইউসুফের মোবাইল ফোন নম্বরে কল করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়। তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মেসেঞ্জারে বিষয়টি জানানো হলেও কোনোও উত্তর পাওয়া যায়নি।

গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান মোল্লা সজল বলেন, ‘আমার মেয়াদকাল ছিল সাত মাস। আমার সংশ্লিষ্টতা কতটুকু? প্রতিটি কমিটিতে তো আরও লোক ছিলেন। চার্জশিটে কেন তাদের নাম নেই? আমার বাবা মারা গেছেন, আরও একজন সদস্য মারা গেছেন; অন্যরা তো জীবিত আছেন। এটা আইনি লড়াইয়ে আমরা জানাব। ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর একটি চার্জশিট দিয়েছিল, সেখানে শুধু আবু ইউসুফ ও অফিস সহকারী শহিদুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছিল। এখন আবার কেন এতজন? তখন কেন অন্যদের বাদ দেয়া হয়েছিল। এখন কেন আবার তাদের বাদ দেয়া হলো। হিসাবে কিছু গরমিল আছে। জাসদের শহিদুল ইসলামও তো কমিটিতে ছিলেন। তাকে কেন বাদ দেয়া হলো? তিনি এখানে ১৪ দলের প্রার্থী হতে চেয়েছেন, আমিও প্রার্থী হই। এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।’

প্রতিষ্ঠানের টাকা কার কার স্বাক্ষরে উত্তোলন করা যায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অধ্যক্ষ ও গভর্নিং বডির সভাপতির স্বাক্ষর ছাড়া টাকা উত্তোলন করা যায় না।’ তাহলে তো আপনার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, তখন তিনি বলেন, ‘হিসাবে গরমিল আছে, তাতে আমার সংশ্লিষ্টতা কতটুকু? আমার কয়টা স্বাক্ষর আছে? সবার সংশ্লিষ্টতা তো আনতে হবে।’
সূত্র: শেয়ার বিজ

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

শিক্ষক-গভর্নিং বডির পকেটে পাঁচ কোটি টাকা

প্রকাশের সময় : ১১:৫৬:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ মার্চ ২০২৩

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিংবডি ও শিক্ষক প্রতিনিধিরা মিলেমিশে আত্মসাৎ করেছেন ৫ কোটি ১৪ লাখ ৮ হাজার ২০০ টাকা। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার এক চার্জশিটে এই অভিযোগ এনেছে।

অভিযোগে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা টাকা থেকে দৈনিক জমা-খরচ বইয়ে কম দেখানো হয়েছে। গরমিল করা হয়েছে জমা-খরচ হিসাবেও! প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ভবিষ্য তহবিলে (পিএফ) জমা দেয়ার জন্য ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেও পিএফ ফান্ডের অ্যাকাউন্টে জমা দেয়া হয়নি। কোনো ধরনের ঋণের প্রয়োজন ছিল না। তারপরও কাল্পনিক ঋণ গ্রহণ ও ভুয়া ঋণ পরিশোধ দেখানো হয়। স্কুলের প্যাডে তৈরি করা ডেবিট ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলন ও কোনো ধরনের ভাউচার ছাড়াই ভুয়া খরচও করা হয়। এভাবেই গভর্নিংবডি ও শিক্ষক প্রতিনিধিরা মিলেমিশে আত্মসাৎ করেছেন ৫ কোটি ১৪ লাখ ৮ হাজার ২০০ টাকা।

চার্জশিটে সাবেক অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ, অফিস সহকারী শহিদুল ইসলাম, গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি ও প্রয়াত এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার বড় ছেলে মশিউর রহমান মোল্লা সজল, সাবেক শিক্ষক প্রতিনিধি ও বর্তমানে ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক আব্দুর রউফ মোল্লা, সাবেক শিক্ষক প্রতিনিধি ও বর্তমানে ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক অহিদুল ইসলাম এবং সাবেক শিক্ষক প্রতিনিধি ও বর্তমানে প্রাথমিক শাখার শিক্ষক অহিদা খানমকে আসামি করা হয়েছে। তার মধ্যে অফিস সহকারী শহিদুল ইসলাম অবসরে চলে গেছেন। তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিটটি দাখিল করেছেন দুদকের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম। তার আগে ২০১৯ সালে উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুর আলম সিদ্দিকী মামলাটি দায়ের করেন।

স্কুলে এখনও কর্মরত চার্জশিটভুক্ত তিন শিক্ষকের বিষয়ে বর্তমান অধ্যক্ষ মরিয়ম বেগম বলেন, ‘আমরা অফিশিয়ালি চার্জশিটের বিষয়টি জানি না। এখনও কোনো কিছু আসেনি। জানার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সম্ভবত ২০১৩ কিংবা ২০১৪ সালে কলেজ শাখা চালু করা হয়।’

মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ও যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির বর্তমান সভাপতি জানে আলম বলেন, ‘আমার কাছে খবরটি এখনও আসেনি। অফিসিয়ালি জানার পর পরিপত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্ষেত্রে গভর্নিং বডিই থাকে। ম্যানেজিং কমিটি থাকে না। শুধু স্কুল হলে ম্যানেজিং কমিটি থাকে। গত জানুয়ারি মাসে আমি দায়িত্ব নিয়েছি।’

চার্জশিটের তথ্যানুযায়ী, ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ২০ মার্চ সময়ে দৈনিক আদায় রেজিস্টার অনুযায়ী বিভিন্ন তারিখে মোট ৬ কোটি ৮৭ লাখ ৯৭ হাজার ৯৫৫ টাকা আদায় করা হয়। কিন্তু, জমা-খরচ খাতায় ওই সময়ে ৬ কোটি ৫২ লাখ ১০ হাজার ৭৯৮ টাকা জমা দেখানো হয়। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে আদায় করা ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ৪৪ টাকা কম দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ তহবিলে (পিএফ) জমা দেয়ার জন্য স্কুলের নামে সোনালী ব্যাংক যাত্রাবাড়ী শাখার অ্যাকাউন্ট থেকে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তারিখে ১১ লাখ ৮৯ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন করা হয়। এই টাকা ভবিষ্য তহবিলের ব্যাংক হিসাবে জমা না দিয়ে অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ ও প্রধান হিসাবরক্ষক শহিদুল ইসলাম অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে আত্মসাৎ করেছেন।

তদন্তকালে দেখা যায়, ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি তারিখে দৈনিক জমা-খরচ বই অনুসারে নগদ কোনো স্থিতি ছিল না। কিন্তু স্কুলের নামে সোনালী ব্যাংক যাত্রাবাড়ী শাখার অ্যাকাউন্ট অনুযায়ী ওই তারিখে ২ লাখ ৪০ হাজার ৫৫৮ টাকা ব্যাংক স্থিতি ছিল। জমা-খরচ বই ও মাসিক আয়-ব্যয়ের হিসাব বিবরণী মোতাবেক ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ে মোট আয় ২৮ কোটি ৩২ লাখ ২৩ হাজার ৭৫৮ টাকা এবং মোট ব্যয় ২৪ কোটি ২৩ লাখ ৮৫ হাজার ৭৩৪ টাকা। সেই হিসেবে মোট উদ্বৃত্তের পরিমাণ ৪ কোটি ১০ লাখ ৭৬ হাজার ৬১২ টাকা। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে নগদ জমা-খরচের খাতা অনুযায়ী নগদ স্থিতি ১ কোটি ১৪ লাখ ৯৪ হাজার ৫৪৪ টাকা এবং ব্যাংক হিসাব বিবরণী অনুযায়ী ব্যাংক স্থিতি ৩৭ লাখ ৮৫ হাজার ৮১৫ টাকাসহ মোট ১ কোটি ৫২ লাখ ৮০ হাজার ৩৫৯ টাকা। অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ ও প্রধান হিসাবরক্ষক শহিদুল ইসলাম অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে অবশিষ্ট নগদ ২ কোটি ৫৭ লাখ ৯৮ হাজার ২৫৩ টাকা হিসাবে কম দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।

তদন্তকালে দেখা যায়, স্কুলের উদ্বৃত্ত তহবিল ও দৈনিক কালেকশন অনুযায়ী কখনও কোনো ধরনের ঋণের প্রয়োজন ছিল না। তারপরও অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ আত্মসাতের উদ্দেশে জমা-খরচ বইয়ে ১ কোটি ২৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকার কাল্পনিক ঋণ দেখিয়েছেন। তার মধ্যে ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা দেখান। কাল্পনিক ঋণ হিসাবের বিপরীতে ভুয়া ঋণ পরিশোধের নামে ৯২ লাখ ৮৫ হাজার টাকার মধ্যে ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা নগদ উদ্বৃত্ত থেকে পরিশোধ দেখান। অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ ও প্রধান হিসাবরক্ষক শহিদুল ইসলাম অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে অবশিষ্ট ৭৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ভুয়া ঋণ পরিশোধের (প্রকৃতপক্ষে পরিশোধ করা হয়নি) নামে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।

তদন্তকালে দেখা যায়, স্কুলের নামে প্যাডে তৈরি ডেবিট ভাউচারে ২০১৫ সালের ১৭ মে তারিখে কমিটি গঠন বাবদ তিনটি আলাদা ভাউচারে ২ লাখ ৩০ হাজার, একই বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে একটি ভাউচারে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা বিল ও সম্মানি বাবদ ২২ লাখ ৭২ হাজার ৩০৩ টাকা; ৯ জুন তারিখে দুটি ভাউচারে মিডিয়া খরচ বাবদ ৮০ হাজার টাকা; ২০১৬ সালের ১১ জুলাই একটি ভাউচারে মামলার নিষ্পত্তি বাবদ ৫০ হাজার ও ২০১৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর একটি ভাউচারে ঋণ পরিশোধ বাবদ ১০ লাখ টাকাসহ মোট ৪০ লাখ ৮২ হাজার ৩০৩ টাকা সেবাদানকারী বা প্রাপকের তৈরি বিল ছাড়াই স্কুলের নিজস্ব ডেবিট ভাউচারের মাধ্যমে পরিশোধ (প্রকৃতপক্ষে পরিশোধ করা হয়নি) দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে। অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ ও প্রধান হিসাবরক্ষক শহিদুল ইসলাম অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে ভাউচার ছাড়াই খরচ দেখিয়ে ৯৯ লাখ ৬৭ হাজার ১২ টাকা আত্মসাৎ করেন।

দুদক বলছে, আবু ইউসুফ তার দায়িত্ব পালনকালে ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ২০ মার্চ সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা টাকা থেকে দৈনিক জমা-খরচ বইয়ে কম দেখিয়ে ৩৫ লাখ ৮৭ হাজার ১৫৭ টাকা, জমা-খরচ হিসাব গরমিল দেখিয়ে ২ কোটি ৫৭ লাখ ৯৮ হাজার ২৫৩ টাকা, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ তহবিলে (পিএফ) জমা দেয়ার জন্য ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেও পিএফ ফান্ডের অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে ১১ লাখ ৮৯ হাজার ৩০৫ টাকা, কাল্পনিক ও ভুয়া ঋণ পরিশোধের নামে ৭৩ লাখ ৩৫ হাজার, স্কুলের নামের প্যাডে তৈরি করা ডেবিট ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলন করা ৪০ লাখ ৯২ হাজার ৮০৩ টাকা, কোনো ধরনের ভাউচার ছাড়াই ভুয়া খরচ দেখিয়ে ৯৯ লাখ ৬৭ হাজার ১২ টাকাসহ মোট ৫ কোটি ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ৫৩০ টাকা অফিস সহকারী/হিসাবরক্ষক শহিদুল ইসলাম ও অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে আত্মসাৎ করেছেন।

দুদক বলছে, অফিস সহকারী শহিদুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানের জন্য সংগ্রহ করা সম্পদ ও তহবিলের যথাযথ লিপিবদ্ধ এবং আয়-ব্যয়ের যথাযথ হিসাব সংরক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন।

দুদক বলছে, ২০১৩ সালের ২৫ মে থেকে ২ বছরের জন্য ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আব্দুর রউফ মোল্লা। তিনি ২০১৪ সালের ১৮ মার্চ গঠিত অর্থ কমিটিতে এবং ১৮ ডিসেম্বর গঠিত অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের জন্য সংগ্রহ করা সম্পদ ও তহবিলের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন। তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন না করে ২০১৩ সালের ৩১ মে থেকে ২০১৫ সালের ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা টাকা থেকে দৈনিক জমা-খরচ বইয়ে কম দেখিয়ে ১১ লাখ ৪ হাজার ২৪৫ টাকা, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ তহবিলে (পিএফ) জমা দেয়ার জন্য ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেও পিএফ ফান্ডের অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে ১১ লাখ ৮৯ হাজার ৩০৫ টাকা, স্কুলের নামের প্যাডে তৈরি করা ডেভিট ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলন করা ৩৯ লাখ ৫২ হাজার ৩০৩ টাকা, কোনো ধরনের ভাউচার ছাড়াই ভুয়া খরচ দেখিয়ে ২০১২ সালের ১৫ জুলাই থেকে ২০১৫ সালের ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে ৮৮ লাখ ৬৭ হাজার ২ টাকাসহ মোট ১ কোটি ৫১ লাখ ১২ হাজার ৮৫৫ টাকা সাবেক অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ, অফিস সহকারী বা হিসাবরক্ষক শহিদুল ইসলাম ও অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে আত্মসাৎ করেছেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে আব্দুর রউফ মোল্লা বলেন, ‘কমিটির সদস্য ছিল ১৩ জন। বাকিদের নাম কই? অর্থকমিটির আহ্বায়ক ছিল শহিদুল ইসলাম, তার নাম কই। তিনি ম্যানেজিং কমিটির প্রভাবশালী সদস্য ছিলেন। তার ইশারায় সব কিছু হতো। তিনি এখন জাসদের ঢাকা মহানগর পূর্ব অঞ্চলের সভাপতি। আয়-ব্যয় কমিটির আহ্বায়ক ইসহাক ভূইয়ার নাম কই। ১৩ সদস্যে মধ্যে কারও নাম নেই। প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আমার ও অহিদুল ইসলামের নাম দিয়েছে। কোনো সাধারণ শিক্ষক কি ব্যাংকের টাকা উত্তোলন করতে পারেন। প্রশ্নই আসে না। ব্যাংকের টাকা একমাত্র সভাপতি ও সেক্রেটারি উঠাতে পারেন। অন্যদের বাদ দিয়ে শুধু ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। শিক্ষক প্রতিনিধির কী ক্ষমতা থাকে।’

অভিযোগের বিষয়ে অহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি শিক্ষক প্রতিনিধি ছিলাম। আসামি থাকার তো কথা নয়। আইনে কী বলে, সেটা তো জানি না।’

সাবেক অধ্যক্ষ আবু ইউসুফের মোবাইল ফোন নম্বরে কল করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়। তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মেসেঞ্জারে বিষয়টি জানানো হলেও কোনোও উত্তর পাওয়া যায়নি।

গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান মোল্লা সজল বলেন, ‘আমার মেয়াদকাল ছিল সাত মাস। আমার সংশ্লিষ্টতা কতটুকু? প্রতিটি কমিটিতে তো আরও লোক ছিলেন। চার্জশিটে কেন তাদের নাম নেই? আমার বাবা মারা গেছেন, আরও একজন সদস্য মারা গেছেন; অন্যরা তো জীবিত আছেন। এটা আইনি লড়াইয়ে আমরা জানাব। ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর একটি চার্জশিট দিয়েছিল, সেখানে শুধু আবু ইউসুফ ও অফিস সহকারী শহিদুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছিল। এখন আবার কেন এতজন? তখন কেন অন্যদের বাদ দেয়া হয়েছিল। এখন কেন আবার তাদের বাদ দেয়া হলো। হিসাবে কিছু গরমিল আছে। জাসদের শহিদুল ইসলামও তো কমিটিতে ছিলেন। তাকে কেন বাদ দেয়া হলো? তিনি এখানে ১৪ দলের প্রার্থী হতে চেয়েছেন, আমিও প্রার্থী হই। এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।’

প্রতিষ্ঠানের টাকা কার কার স্বাক্ষরে উত্তোলন করা যায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অধ্যক্ষ ও গভর্নিং বডির সভাপতির স্বাক্ষর ছাড়া টাকা উত্তোলন করা যায় না।’ তাহলে তো আপনার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, তখন তিনি বলেন, ‘হিসাবে গরমিল আছে, তাতে আমার সংশ্লিষ্টতা কতটুকু? আমার কয়টা স্বাক্ষর আছে? সবার সংশ্লিষ্টতা তো আনতে হবে।’
সূত্র: শেয়ার বিজ