চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি :
অপ্রতুল বোডিং ব্রিজ ও কনভেয়ার বেল্টসহ নানা সংকটের মাঝেও যাত্রী সংখ্যা বাড়তে থাকায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আবারও প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়া বিমান সংস্থাগুলো ফিরতে শুরু করেছে। চলতি মাসে ওমানভিত্তিক সালাম এয়ার ফ্লাইট চালু করেছে, আগামী ২৬ অক্টোবর থেকে আবারও ফ্লাইট শুরু করবে আরব আমিরাতের ফ্লাই দুবাই। পাশাপাশি নর্দান চায়নাসহ আরও কয়েকটি বিমান সংস্থা আগ্রহ দেখিয়েছে।
প্রয়োজনীয় যাত্রী না পাওয়ায় গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর সালাম এয়ার এবং ডিসেম্বর মাসে ফ্লাই দুবাই তাদের ফ্লাইট বন্ধ করে দেয় শাহ আমানত বিমানবন্দরে। তবে বছর ঘুরতেই ফের কার্যক্রম শুরু করেছে তারা। ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে সালাম এয়ার সপ্তাহে দুটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ২৬ অক্টোবর থেকে সপ্তাহে সাতটি ফ্লাইট চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছে ফ্লাই দুবাই। এছাড়া নর্দান চায়নাসহ আরও কয়েকটি আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা এ রুটে আসতে চাচ্ছে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আবদুল্লাহ আলমগীর বলেন, সালাম এয়ার একটি ফ্লাইট অপারেট করত, এখন তারা অতিরিক্ত আরেকটি চালু করেছে। ফ্লাই দুবাই ২০২৫ সালের ২৬ অক্টোবর থেকে আবারও ফ্লাইট চালু করছে। আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক এবং চায়না ভিত্তিক এয়ারলাইনসের সঙ্গে আলোচনা চলছে, আশা করছি শিগগিরই তারা শুরু করবে।
নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ৪ হাজার ৬১০টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে ৩ লাখ ৯২ হাজার এবং ৬ হাজার ৬৯০টি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে ৩ লাখ ২৩ হাজার যাত্রী পরিবহন করেছে শাহ আমানত বিমানবন্দর।
অভ্যন্তরীণ থেকে আন্তর্জাতিক রূপ পেয়েছে ২৫ বছর আগে। কিন্তু সে অনুযায়ী যাত্রীসেবার মান বাড়েনি। তারপরও প্রতিবছর বিমান উঠানামা এবং যাত্রী পরিবহনে রেকর্ড করছে এ বিমানবন্দর। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে বছরে ১৫ থেকে ১৭ লাখ যাত্রী পরিবহন হলেও বোডিং ব্রিজ ও লাগেজ কনভেয়ার বেল্ট রয়েছে মাত্র দুটি করে। চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল। তবে অনিয়ম কমানো এবং যাত্রীসেবা কিছুটা বাড়ানোর কারণে যাত্রীদের আস্থা বাড়ছে।
বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী ইব্রাহীম খলিল বলেন, প্রথমবারের মতো একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। এটি এয়ারপোর্টের জন্য বড় পদক্ষেপ ছিল। বিভিন্ন এজেন্সিকে কাজে লাগিয়ে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। যাত্রীসেবার মান যতটা সম্ভব উন্নত করা হয়েছে।
তবে ব্যবহারকারীদের অভিযোগ, প্রতিবেশী দেশের তুলনায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড চার্জ বেশি হওয়ায় বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো আগ্রহ হারায়। তাদের দাবি, এ চার্জ কমানো হলে আরও কয়েকটি সংস্থা ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নেবে।
চট্টগ্রাম এভিয়েশন ক্লাবের সভাপতি আসিফ চৌধুরী বলেন, ওমান এয়ার ফের আসবে, স্পাইস জেটও রিভাইভ করবে। সালাম এয়ার ফ্লাইট বাড়াচ্ছে, ফ্লাই দুবাই ফিরছে। নতুন নতুন ফ্লাইট আনার সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং চার্জ কমাতে হবে, কনভেয়ার বেল্ট ও বোডিং ব্রিজ বাড়াতে হবে।
চট্টগ্রাম থেকে বর্তমানে সরাসরি বিমান চলাচল করছে সৌদি আরবের জেদ্দা-মদিনা, আরব আমিরাতের আবুধাবি-শারজাহ-দুবাই এবং ওমানের মাসকট রুটে।