Dhaka সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শামীম-হৃদয়ের ব্যাটে এলো বাংলাদেশের জয়

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১১:১০:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩
  • ১৯৬ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

শুরুতে অসাধারণ বোলিংয়ের পরও বাংলাদেশকে ১৫৫ রানের চ্যালেঞ্জিং টার্গেট দেয় আফগানিস্তান। সেই রান তাড়া করতে গিয়ে শুরতেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে দুই তরুণ তুর্কি তাওহিদ হৃদয় ও শামিম পাটোয়ারির ব্যাটে লড়াই করে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। শেষ ওভারে জানাত করিমের নাটকীয় হ্যাটট্রিকের পরও ২ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

শুক্রবার (১৪ জুলাই) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে আফগানিস্তানকে ২ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিকদের সামনে ১৫৫ রানের লক্ষ্য দেয় আফগানরা। ১ বল হাতে রেখেই ওই রান তাড়া করে বাংলাদেশ।

সহজ ম্যাচ কঠিন করেই জিতল বাংলাদেশ

হৃদয়ের সেই ছয়ের পর পঞ্চম বলে শুয়ে পড়ে স্কুপ করে চার মেরেছিলেন শামীম। ফারুকির স্লোয়ার পড়েছেন দারুণভাবে। শেষ বলে হয়তো সিঙ্গেলই হতো, তবে হৃদয়-শামীমের দুর্দান্ত রানিংয়ে সেটিই হয়েছে দুই। জয়ের বন্দর তখন খুব নিকটে। কিন্তু এরপরই শামীমের উইকেটে আঘাত রশিদ খানের। দুর্দান্ত খেলতে থাকা শামীমকে ৩৩ রানে (২৫ বল) ফিরিয়েছেন এই লেগ-স্পিনার।

শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৬ রান। এরই মধ্যে ওভারের কোটা পূরণ করে ফেলেছিলেন রশিদ-মুজিব ও ফারুকিরা। তাই তো শেষ ওভারে আক্রমণে আসেন করিম জানাত। তার করা প্রথম বলেই অফ-স্টাম্পের বাইরের বলকে চারে পরিণত করেন মেহেদী মিরাজ। এরপরই নাটকীয়তা, মাত্র ২ রানের বাধা পেরোতেও তিনি যেন তাড়াহুড়োই করলেন। এরপর ওয়াইড বলে ব্যাটের কানা লাগিয়ে কট বিহাইন্ড তাসকিন আহমেদ। অপর পাশে অসহায় দৃষ্টি হৃদয়ের। এরপর? জানাতের শট বলকে পেছনে উড়িয়ে মারতে গিয়ে থার্ডম্যানের হাতে ধরা নাসুম। যেন না চাইতেই অসতর্ক বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা জানাতকে হ্যাটট্রিক উপহার দিয়েছেন!

এরপর ভারতের মাটিতে হওয়া ১ রানের হারের ক্ষত জেগে ওঠে। শঙ্কা জেগেছিল আবারও সেই দুঃসহনীয় স্বপ্ন ফিরে আসে কিনা! তবে সেটি আর হয়নি। জানাতের পঞ্চম বলটি অফ-সাইডে ফাঁকা জায়গায় ফেলে সজোরে দৌড় শরীফুল-হৃদয়ের। ম্যাচটা এতদূর নিয়ে আসার পেছনে অবশ্য সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হৃদয়ের। ফিফটি থেকে তিন রান দূরত্বে থাকা এই ব্যাটারই সতীর্থদের নিয়মিত বিরতিতে আসা-যাওয়া দেখেও উইকেটে অবিচল ছিলেন। শেষপর্যন্ত তিনি অপরাজিত ছিলেন ৩৩ বলে ৪৭ রানে।

শান্ত

এর আগে আফগানদের দেওয়া ১৫৫ রানের জবাবে প্রথম ওভারেই আঘাত পায় বাংলাদেশ। ফজলহক ফারুকির করা অফ-স্টাম্পের দিকে আসতে থাকা সোজা বল তিনি মিস করে গেছেন। আর তাতেই উড়ে গেল স্টাম্প, মাত্র এক ফরম্যাটে খেলার সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারছেন না রনি। তিনি ফিরেছেন মাত্র ৪ রানে (৫ বল)। এরপর অল্প সময়ের ব্যবধানে ফেরেন লিটন-শান্ত। মুজিবকে স্লগ সুইপে খেলতে গিয়ে বল তার পেটে-পিঠে লেগে এরপর স্টাম্প ভেঙে থামে। ১২ বলে তিনি ১৪ রান করেন। পরপরই ফেরেন লিটন। বুকের ওপরে ওঠে আসা বল মারতে গিয়ে ১৮ রানেই (১৯) তিনি তালুতে বন্দী।

এরপর বৃষ্টিতে ১৫ মিনিটের মতো ম্যাচটি বন্ধ ছিল। অল্প সময় পর খেলা শুরু হতেই আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে আউট সাকিবও। ১৭ বলে ১৯ রান করা সাকিব উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন। এরপরই হোঁচট খাওয়া স্বাগতিকদের পথ দেখান হৃদয়-শামীম জুটি। তাদের ৭৩ রানের জুটিই বাংলাদেশের জয়ের পথ সহজ করে তোলে। আফগানরা এদিন ৭ জন বোলার ব্যবহার করেছে। তাদের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট পেয়েছেন জানাত।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে দিয়ে আক্রমণ শুরু করেন তিনি।

ইনিংসের অষ্টম বলেই উইকেট পেতে পারতো বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদকে খেলতে গিয়ে বল বাতাসে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ।

শেষ ওভারে নাটকীয়তার পর রুদ্ধশ্বাস জয় বাংলাদেশের

কভার পয়েন্ট থেকে দৌড়ে গিয়ে রনি তালুকদার দুর্দান্ত এক ক্যাচ তালুবন্দী করে ফেলেছিলেন। কিন্তু উল্টো দিক থেকে দৌড়ে গিয়ে কোনোমতে হাতে জমানো সেই ক্যাচ তিনি পড়ে যাওয়ার পর পড়ে যায় মাটিতে। ১ রানে জীবন পান গুরবাজ।

তৃতীয় ওভারেই উইকেট তুলে নেয় টাইগাররা। নাসুমের বলে স্কয়ার লেগে তাওহিদ হৃদয়ের হাতে ধরা পড়েন হযরতউল্লাহ জাজাই (১০ বলে ৮)। তার পরের ওভারে তাসকিনের আঘাত। ডানহাতি এই পেসারের স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজকে ক্যাচ দেন আগে জীবন পাওয়া গুরবাজ (১১ বলে ১৬)।

এরপর শরিফুল ইসলাম নিজের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই তুলে নেন ইব্রাহিম জাদরানকে (৬ বলে ৮)। আগের বলে ছক্কা হাঁকানো জাদরান ক্যাচ দেন উইকেটরক্ষক লিটন দাসকে। ৩২ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে আফগানরা। পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারে তোলে মোটে ৪০ রান।

পরের দুই ওভার দেখেশুনে খেলেছে আফগানরা। অষ্টম ওভারে বল হাতে নিয়েই উইকেটর দেখা পান সাকিব। টাইগার অধিনায়ককে ওপরে খেলতে গিয়ে মিডঅফে ধরা পড়েন করিম জানাত (৯ বলে ৩)। দৌড়ে এসে ক্যাচটি তালুবন্দী করেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

সেখান থেকে ৩৬ বল খেলে ৩১ রানের ধীরগতির এক জুটি গড়েন মোহাম্মদ নবি আর নাজিবুল্লাহ জাদরান। ১৪তম ওভারে এই জুটিটি ভাঙেন মিরাজ। টাইগার অফস্পিনারের বল নাজিবুল্লাহর (২৩ বলে ২৩) ব্যাট ছুঁয়ে গেলে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন লিটন। ৮৭ রানে ৫ উইকেট হারায় আফগানরা।

Taskin Ahmed celebrates with team-mates a wicket, Bangladesh vs Afghanistan, 1st T20I, Sylhet, July 14, 2023

তবে এরপর নবি আর আজমতুল্লাহ ওমরজাই দারুণ জুটি গড়েন। ষষ্ঠ উইকেটে তারা ৩১ বলে ৫৬ রান এনে দেন আফগানদের। ১৯তম ওভারে ওমরজাই সাকিবকে টানা দুই ছক্কা হাঁকান। ওই ওভারেরই শেষ বলে আরেকটি বিগ হিট নিতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যানে তাসকিনের ক্যাচ হন এই ব্যাটার (১৮ বলে ৪ ছক্কায় ৩৩)।

ফিফটি তুলে নিয়ে অপরাজিত থাকেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার নবি। ৪০ বলে তার ৫৪ রানের ইনিংসে ছিল ৬টি চার আর ১টি ছক্কার মার।

বাংলাদেশি বোলারদের সবাই উইকেট পেয়েছেন। শেষের দিকে মার খেলেও তুলনামূলক মিতব্যয়ী ছিলেন সাকিব আর তাসকিন। সাকিব ২৭ রানে ২টি আর তাসকিন ২৯ রানে নেন একটি উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন নাসুম, শরিফুল, মোস্তাফিজ আর মিরাজও। এর মধ্যে সবচেয়ে খরুচে ছিলেন শরিফুল। ৩ ওভারে ৩০ রান দেন তিনি। মোস্তাফিজ ৪ ওভারে খরচ করেন ৩১ রান।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বিমানের ফ্লাইটে ফের ত্রুটি, শারজাহ না গিয়ে ফিরে এলো ঢাকায়

শামীম-হৃদয়ের ব্যাটে এলো বাংলাদেশের জয়

প্রকাশের সময় : ১১:১০:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

শুরুতে অসাধারণ বোলিংয়ের পরও বাংলাদেশকে ১৫৫ রানের চ্যালেঞ্জিং টার্গেট দেয় আফগানিস্তান। সেই রান তাড়া করতে গিয়ে শুরতেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে দুই তরুণ তুর্কি তাওহিদ হৃদয় ও শামিম পাটোয়ারির ব্যাটে লড়াই করে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। শেষ ওভারে জানাত করিমের নাটকীয় হ্যাটট্রিকের পরও ২ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

শুক্রবার (১৪ জুলাই) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে আফগানিস্তানকে ২ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিকদের সামনে ১৫৫ রানের লক্ষ্য দেয় আফগানরা। ১ বল হাতে রেখেই ওই রান তাড়া করে বাংলাদেশ।

সহজ ম্যাচ কঠিন করেই জিতল বাংলাদেশ

হৃদয়ের সেই ছয়ের পর পঞ্চম বলে শুয়ে পড়ে স্কুপ করে চার মেরেছিলেন শামীম। ফারুকির স্লোয়ার পড়েছেন দারুণভাবে। শেষ বলে হয়তো সিঙ্গেলই হতো, তবে হৃদয়-শামীমের দুর্দান্ত রানিংয়ে সেটিই হয়েছে দুই। জয়ের বন্দর তখন খুব নিকটে। কিন্তু এরপরই শামীমের উইকেটে আঘাত রশিদ খানের। দুর্দান্ত খেলতে থাকা শামীমকে ৩৩ রানে (২৫ বল) ফিরিয়েছেন এই লেগ-স্পিনার।

শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৬ রান। এরই মধ্যে ওভারের কোটা পূরণ করে ফেলেছিলেন রশিদ-মুজিব ও ফারুকিরা। তাই তো শেষ ওভারে আক্রমণে আসেন করিম জানাত। তার করা প্রথম বলেই অফ-স্টাম্পের বাইরের বলকে চারে পরিণত করেন মেহেদী মিরাজ। এরপরই নাটকীয়তা, মাত্র ২ রানের বাধা পেরোতেও তিনি যেন তাড়াহুড়োই করলেন। এরপর ওয়াইড বলে ব্যাটের কানা লাগিয়ে কট বিহাইন্ড তাসকিন আহমেদ। অপর পাশে অসহায় দৃষ্টি হৃদয়ের। এরপর? জানাতের শট বলকে পেছনে উড়িয়ে মারতে গিয়ে থার্ডম্যানের হাতে ধরা নাসুম। যেন না চাইতেই অসতর্ক বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা জানাতকে হ্যাটট্রিক উপহার দিয়েছেন!

এরপর ভারতের মাটিতে হওয়া ১ রানের হারের ক্ষত জেগে ওঠে। শঙ্কা জেগেছিল আবারও সেই দুঃসহনীয় স্বপ্ন ফিরে আসে কিনা! তবে সেটি আর হয়নি। জানাতের পঞ্চম বলটি অফ-সাইডে ফাঁকা জায়গায় ফেলে সজোরে দৌড় শরীফুল-হৃদয়ের। ম্যাচটা এতদূর নিয়ে আসার পেছনে অবশ্য সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হৃদয়ের। ফিফটি থেকে তিন রান দূরত্বে থাকা এই ব্যাটারই সতীর্থদের নিয়মিত বিরতিতে আসা-যাওয়া দেখেও উইকেটে অবিচল ছিলেন। শেষপর্যন্ত তিনি অপরাজিত ছিলেন ৩৩ বলে ৪৭ রানে।

শান্ত

এর আগে আফগানদের দেওয়া ১৫৫ রানের জবাবে প্রথম ওভারেই আঘাত পায় বাংলাদেশ। ফজলহক ফারুকির করা অফ-স্টাম্পের দিকে আসতে থাকা সোজা বল তিনি মিস করে গেছেন। আর তাতেই উড়ে গেল স্টাম্প, মাত্র এক ফরম্যাটে খেলার সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারছেন না রনি। তিনি ফিরেছেন মাত্র ৪ রানে (৫ বল)। এরপর অল্প সময়ের ব্যবধানে ফেরেন লিটন-শান্ত। মুজিবকে স্লগ সুইপে খেলতে গিয়ে বল তার পেটে-পিঠে লেগে এরপর স্টাম্প ভেঙে থামে। ১২ বলে তিনি ১৪ রান করেন। পরপরই ফেরেন লিটন। বুকের ওপরে ওঠে আসা বল মারতে গিয়ে ১৮ রানেই (১৯) তিনি তালুতে বন্দী।

এরপর বৃষ্টিতে ১৫ মিনিটের মতো ম্যাচটি বন্ধ ছিল। অল্প সময় পর খেলা শুরু হতেই আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে আউট সাকিবও। ১৭ বলে ১৯ রান করা সাকিব উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন। এরপরই হোঁচট খাওয়া স্বাগতিকদের পথ দেখান হৃদয়-শামীম জুটি। তাদের ৭৩ রানের জুটিই বাংলাদেশের জয়ের পথ সহজ করে তোলে। আফগানরা এদিন ৭ জন বোলার ব্যবহার করেছে। তাদের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট পেয়েছেন জানাত।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে দিয়ে আক্রমণ শুরু করেন তিনি।

ইনিংসের অষ্টম বলেই উইকেট পেতে পারতো বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদকে খেলতে গিয়ে বল বাতাসে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ।

শেষ ওভারে নাটকীয়তার পর রুদ্ধশ্বাস জয় বাংলাদেশের

কভার পয়েন্ট থেকে দৌড়ে গিয়ে রনি তালুকদার দুর্দান্ত এক ক্যাচ তালুবন্দী করে ফেলেছিলেন। কিন্তু উল্টো দিক থেকে দৌড়ে গিয়ে কোনোমতে হাতে জমানো সেই ক্যাচ তিনি পড়ে যাওয়ার পর পড়ে যায় মাটিতে। ১ রানে জীবন পান গুরবাজ।

তৃতীয় ওভারেই উইকেট তুলে নেয় টাইগাররা। নাসুমের বলে স্কয়ার লেগে তাওহিদ হৃদয়ের হাতে ধরা পড়েন হযরতউল্লাহ জাজাই (১০ বলে ৮)। তার পরের ওভারে তাসকিনের আঘাত। ডানহাতি এই পেসারের স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজকে ক্যাচ দেন আগে জীবন পাওয়া গুরবাজ (১১ বলে ১৬)।

এরপর শরিফুল ইসলাম নিজের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই তুলে নেন ইব্রাহিম জাদরানকে (৬ বলে ৮)। আগের বলে ছক্কা হাঁকানো জাদরান ক্যাচ দেন উইকেটরক্ষক লিটন দাসকে। ৩২ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে আফগানরা। পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারে তোলে মোটে ৪০ রান।

পরের দুই ওভার দেখেশুনে খেলেছে আফগানরা। অষ্টম ওভারে বল হাতে নিয়েই উইকেটর দেখা পান সাকিব। টাইগার অধিনায়ককে ওপরে খেলতে গিয়ে মিডঅফে ধরা পড়েন করিম জানাত (৯ বলে ৩)। দৌড়ে এসে ক্যাচটি তালুবন্দী করেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

সেখান থেকে ৩৬ বল খেলে ৩১ রানের ধীরগতির এক জুটি গড়েন মোহাম্মদ নবি আর নাজিবুল্লাহ জাদরান। ১৪তম ওভারে এই জুটিটি ভাঙেন মিরাজ। টাইগার অফস্পিনারের বল নাজিবুল্লাহর (২৩ বলে ২৩) ব্যাট ছুঁয়ে গেলে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন লিটন। ৮৭ রানে ৫ উইকেট হারায় আফগানরা।

Taskin Ahmed celebrates with team-mates a wicket, Bangladesh vs Afghanistan, 1st T20I, Sylhet, July 14, 2023

তবে এরপর নবি আর আজমতুল্লাহ ওমরজাই দারুণ জুটি গড়েন। ষষ্ঠ উইকেটে তারা ৩১ বলে ৫৬ রান এনে দেন আফগানদের। ১৯তম ওভারে ওমরজাই সাকিবকে টানা দুই ছক্কা হাঁকান। ওই ওভারেরই শেষ বলে আরেকটি বিগ হিট নিতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যানে তাসকিনের ক্যাচ হন এই ব্যাটার (১৮ বলে ৪ ছক্কায় ৩৩)।

ফিফটি তুলে নিয়ে অপরাজিত থাকেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার নবি। ৪০ বলে তার ৫৪ রানের ইনিংসে ছিল ৬টি চার আর ১টি ছক্কার মার।

বাংলাদেশি বোলারদের সবাই উইকেট পেয়েছেন। শেষের দিকে মার খেলেও তুলনামূলক মিতব্যয়ী ছিলেন সাকিব আর তাসকিন। সাকিব ২৭ রানে ২টি আর তাসকিন ২৯ রানে নেন একটি উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন নাসুম, শরিফুল, মোস্তাফিজ আর মিরাজও। এর মধ্যে সবচেয়ে খরুচে ছিলেন শরিফুল। ৩ ওভারে ৩০ রান দেন তিনি। মোস্তাফিজ ৪ ওভারে খরচ করেন ৩১ রান।