Dhaka সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘শাপলা কলি’ প্রতীক মেনে নেবে এনসিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে ‘শাপলা কলি’ নিতে রাজি হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

রোববার (২ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এ কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, জনতার মধ্যে ইতিমধ্যেই শাপলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে আবার শাপলার সাথে কলিও যোগ হচ্ছে। আমরা এটা পজিটিভলি নিয়েছি। নির্বাচন কমিশনকে বলেছি দ্রুতগতিতে এনসিপির নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন। আগামী নির্বাচনে ইনশাআল্লাহ ধানের শীষ এবং শাপলা কলির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে পাটওয়ারী বলেন, বাংলাদেশ বাকশাল কায়েম করে ৭২ সালে বহুদলীয় গণতন্ত্র থেকে বের করা হয়েছিল, একটি দল এখন আবার একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তারা ইতিমধ্যে বিভিন্ন দলকে নিজেদের প্রতীক বিক্রি করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। নির্বাচন সংস্কার কমিশন যে উদ্যোগ নিয়েছিল সে উদ্যোগের বিপরীতি গিয়ে বিভিন্ন সমঝোতা, বোঝাপড়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা ইসিকে বলেছিল, কোনো দলের প্রতীক কোনো নমিশন বাণিজ্যের প্রতীক হতে পারে না।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বলছি শাপলার কথা। কিন্তু আমরা এখনো ব্যাখ্যা পাইনি নির্বাচন কমিশনের স্বেচ্ছাচারী আচরণের। কিন্তু এখন কি তাহলে আমরা প্রতীক নিয়ে পড়ে থাকব। আমরা ইলেকশন ফেজে ঢুকব না? তো সেই জায়গা থেকে আমরা বৃহত্তর স্বার্থ চিন্তা করে এই ডিসিশনটা নিয়েছি। কিন্তু ইলেকশন কমিশনের যে স্বেচ্ছাচারী আচরণ এটা পুরো বাংলাদেশের সামনে স্পষ্ট হয়েছে। আমরা ইনশাআল্লাহ শাপলা কলি নিচ্ছি।

রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: আজকের পত্রিকা

এর আগে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সিইসির সঙ্গে বৈঠক করতে নির্বাচন ভবনে আসেন। সঙ্গে ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক খালে খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা। বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) প্রতীকের তালিকা সংশোধন করে ‘শাপলা কলি’ যুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করে ইসি। জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের দল এনসিপির প্রতীক ইস্যুতে কিছুটা ছাড় দিয়ে বিকল্প হিসেবে ‘শাপলা কলি’ তালিকায় যুক্ত করে ইসি।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে এনসিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা শাপলা কলি নেবে না, তারা শাপলাই চায়। এমনকি ‘শাপলা কলি’ দিয়ে ইসি এনসিপি যে ‘বাচ্চাদের দল’ সেটা বোঝানোর চেষ্টা করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন দলটির কোনো কোনো নেতা।

প্রতীক ইস্যুতে সেদিন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছিলেন, ‘আমরা বরাবরই বলে আসছি, এনসিপি শাপলা চায়। এনসিপি শাপলা নিয়ে নির্বাচন করবে। শাপলার প্রশ্নে আমরা আপসহীন-শাপলা নিয়ে আমরা একবিন্দু ছাড় দিতে চাই না।’

গত ২২ জুন এনসিপি তাদের নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দেয় এবং তিনটি প্রতীক প্রস্তাব করে-শাপলা, কলম ও মোবাইল ফোন। পরে ৩ আগস্ট ও ২৪ সেপ্টেম্বর চিঠি দিয়ে তারা তাদের পছন্দ সংশোধন করে জানায়, তারা সাদা বা লাল শাপলা চায়।

২৩ সেপ্টেম্বর কমিশন নির্বাচনি প্রতীকের সংখ্যা ৬৯ থেকে বাড়িয়ে ১১৫ করে, তবে শাপলা বাদ রাখে। এর মধ্যে ৫১টি নিবন্ধিত দলকে দেওয়া হয়, বাকিগুলো স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ভবিষ্যৎ ব্যবহারের জন্য সংরক্ষিত থাকে।

এর মধ্যে ইসির সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেন দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ইসি এনসিপিকে চিঠি দিয়ে জানায়, অনুমোদিত প্রতীকের তালিকা থেকে একটি প্রতীক বেছে নিয়ে ৭ অক্টোবরের মধ্যে জমা দিতে হবে।

তবে শাপলাতে অনড় থাকে এনসিপি। বাধ্য হয়ে ফের প্রতীক পছন্দ করতে ইসির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয় তরুণদের গড়া এই দলকে, যেখানে প্রতীক পছন্দের জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত। ওই চিঠির জবাবে এনসিপি ইসির কাছে লিখিতভাবে জানতে চায়, কোন মানদণ্ডে প্রতীক তালিকায় রাখা হয় বা বাদ দেওয়া হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

‘শাপলা কলি’ প্রতীক মেনে নেবে এনসিপি

প্রকাশের সময় : ০৬:০০:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে ‘শাপলা কলি’ নিতে রাজি হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

রোববার (২ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এ কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, জনতার মধ্যে ইতিমধ্যেই শাপলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে আবার শাপলার সাথে কলিও যোগ হচ্ছে। আমরা এটা পজিটিভলি নিয়েছি। নির্বাচন কমিশনকে বলেছি দ্রুতগতিতে এনসিপির নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন। আগামী নির্বাচনে ইনশাআল্লাহ ধানের শীষ এবং শাপলা কলির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে পাটওয়ারী বলেন, বাংলাদেশ বাকশাল কায়েম করে ৭২ সালে বহুদলীয় গণতন্ত্র থেকে বের করা হয়েছিল, একটি দল এখন আবার একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তারা ইতিমধ্যে বিভিন্ন দলকে নিজেদের প্রতীক বিক্রি করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। নির্বাচন সংস্কার কমিশন যে উদ্যোগ নিয়েছিল সে উদ্যোগের বিপরীতি গিয়ে বিভিন্ন সমঝোতা, বোঝাপড়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা ইসিকে বলেছিল, কোনো দলের প্রতীক কোনো নমিশন বাণিজ্যের প্রতীক হতে পারে না।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বলছি শাপলার কথা। কিন্তু আমরা এখনো ব্যাখ্যা পাইনি নির্বাচন কমিশনের স্বেচ্ছাচারী আচরণের। কিন্তু এখন কি তাহলে আমরা প্রতীক নিয়ে পড়ে থাকব। আমরা ইলেকশন ফেজে ঢুকব না? তো সেই জায়গা থেকে আমরা বৃহত্তর স্বার্থ চিন্তা করে এই ডিসিশনটা নিয়েছি। কিন্তু ইলেকশন কমিশনের যে স্বেচ্ছাচারী আচরণ এটা পুরো বাংলাদেশের সামনে স্পষ্ট হয়েছে। আমরা ইনশাআল্লাহ শাপলা কলি নিচ্ছি।

রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: আজকের পত্রিকা

এর আগে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সিইসির সঙ্গে বৈঠক করতে নির্বাচন ভবনে আসেন। সঙ্গে ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক খালে খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা। বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) প্রতীকের তালিকা সংশোধন করে ‘শাপলা কলি’ যুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করে ইসি। জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের দল এনসিপির প্রতীক ইস্যুতে কিছুটা ছাড় দিয়ে বিকল্প হিসেবে ‘শাপলা কলি’ তালিকায় যুক্ত করে ইসি।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে এনসিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা শাপলা কলি নেবে না, তারা শাপলাই চায়। এমনকি ‘শাপলা কলি’ দিয়ে ইসি এনসিপি যে ‘বাচ্চাদের দল’ সেটা বোঝানোর চেষ্টা করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন দলটির কোনো কোনো নেতা।

প্রতীক ইস্যুতে সেদিন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছিলেন, ‘আমরা বরাবরই বলে আসছি, এনসিপি শাপলা চায়। এনসিপি শাপলা নিয়ে নির্বাচন করবে। শাপলার প্রশ্নে আমরা আপসহীন-শাপলা নিয়ে আমরা একবিন্দু ছাড় দিতে চাই না।’

গত ২২ জুন এনসিপি তাদের নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দেয় এবং তিনটি প্রতীক প্রস্তাব করে-শাপলা, কলম ও মোবাইল ফোন। পরে ৩ আগস্ট ও ২৪ সেপ্টেম্বর চিঠি দিয়ে তারা তাদের পছন্দ সংশোধন করে জানায়, তারা সাদা বা লাল শাপলা চায়।

২৩ সেপ্টেম্বর কমিশন নির্বাচনি প্রতীকের সংখ্যা ৬৯ থেকে বাড়িয়ে ১১৫ করে, তবে শাপলা বাদ রাখে। এর মধ্যে ৫১টি নিবন্ধিত দলকে দেওয়া হয়, বাকিগুলো স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ভবিষ্যৎ ব্যবহারের জন্য সংরক্ষিত থাকে।

এর মধ্যে ইসির সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেন দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ইসি এনসিপিকে চিঠি দিয়ে জানায়, অনুমোদিত প্রতীকের তালিকা থেকে একটি প্রতীক বেছে নিয়ে ৭ অক্টোবরের মধ্যে জমা দিতে হবে।

তবে শাপলাতে অনড় থাকে এনসিপি। বাধ্য হয়ে ফের প্রতীক পছন্দ করতে ইসির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয় তরুণদের গড়া এই দলকে, যেখানে প্রতীক পছন্দের জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত। ওই চিঠির জবাবে এনসিপি ইসির কাছে লিখিতভাবে জানতে চায়, কোন মানদণ্ডে প্রতীক তালিকায় রাখা হয় বা বাদ দেওয়া হয়।